কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বাংলাদেশে প্রথম নিরাপত্তা নজরদারী সরঞ্জাম উৎপাদন কারখানা উদ্বোধন করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম এই কারখানার উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং হিকভিশন সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট হুগো হুয়াং। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এক্সেল টেকনোলজিস্ লি. এবং এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই কারখানায় বিশ্বের এক নম্বর নিরাপত্তা নজরদারী সলিউশন ব্র্যান্ড ‘হিকভিশন’-এর অত্যাধুনিক নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতি তৈরি হবে। বাংলাদেশে হিকভিশনের প্রথম ও জাতীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এক্সেল টেকনোলজিস্ লি.-এর সহযোগী কোম্পানী এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লি. বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’র সেবা ভবনে প্রাথমিক পর্যায়েরএই কারখানা স্থাপন করেছে। চীনের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা নজরদারী সমাধান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানহিকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কো. লি. এতে কারিগরী সহায়তা প্রদান করে।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম বলেন, আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই উৎপাদন কারখানা স্থাপন তার উদাহরণ। আর হিকভিশনের মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা নজরদারী পণ্য বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য এক বিশাল অর্জন। এভাবে এখন আমাদের দেশে অনেক ডিভাইস তৈরি হওয়ার ফলে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচি গতি পাচ্ছে। এ কারণে খুব শীঘ্রই সরকার ‘মেইড ইন বাংলাদেশ নীতিমালা’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে। মূলত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছেন বলেই আজ আমাদের এতসব অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার টেন্ডারে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যাতে করে দেশে তৈরি পণ্যের বাজার সৃষ্টি হয়, উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী করা যায়।
হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, আমরা সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত এবং তাদেরকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছি। তাই কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বেশ কিছুহাই-টেক পার্কে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যন্ডের ল্যাপটপ সহ অন্যান্য ডিভাইস তৈরি শুরু হয়েছে। তাই এখানে যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। হাই-টেক পার্কগুলোতে পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন শুরু হলে বাংলাদেশ আইসিটি পণ্য উৎপাদনের হাবে পরিণত হবে, ৭৫% যুবক জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হবে এবং মাথাপিছু আয়ে বিশ্বের সব দেশকে ছাড়িয়ে আমরা শতবর্ষ পূর্তিতে এক নম্বর উন্নত জাতিতে পরিণত হব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
হিকভিশন সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট হুগো হুয়াং বলেন- চীনের বাইরে ব্রাজিল ও ভারতেরপর তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে হিকশিভন ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন শুরু হলো। এতে কারিগরী সহায়তাদান করতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। তিনি জানান, হিকভিশন বিশ্বের এক নম্বর নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতি নির্মাতা হলেও অন্যান্য হাই-টেক পণ্য উৎপাদন, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সেবা প্রদান করছে, যেমন- রোবটিক্স, আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এসব ক্ষেত্রে হিকভিশন সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক’ সিটি’তে হিকভিশন ব্যান্ডের নজরদারী পণ্য উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য তথ্যপযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এক্সেল টেকনোলজিস্ লি. এবং এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা বলেন, আগামী বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে অধিক পরিমাণে হিকভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক স্টোরেজসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন শুরু করা যাবে। তাতে নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতির দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে অচিরেই রপ্তানী করা যাবে। তাছাড়া পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে এখানে অন্যান্য ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ডিভাইস, নেটওয়ার্কিং, টেলিকম, এআই ও রোবটিক্স যন্ত্রপাতি উৎপাদন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন