টোটাল রাজনীতিকদের হাতে ফিরেছে সিলেট জেলা বিএনপির নেতৃত্ব। আজ (মঙ্গলবার) দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন এ অধ্যায়ের সূচনা করলো কাউন্সিলরা। ব্যবসায়ী কাম রাজনীতিকদের তালুতে বন্দি ছিল সিলেট বিএনপির অতীত নেতৃত্ব। এতে করে তৃণমুল নেতাকর্মীদের সাথে নেতৃত্বের বুঝাপাড়ায় ছিল গভীর ফারাক। নেতারা ঠান্ডা ( এসি) হাওয়ায় বিলাসী ভাবে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসায়ীক নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনায় ডুবে থাকতেন সরকার দলের সাথে লিয়াঁজোর মাধ্যমে। বিপরীতে তৃণমুল কর্মীরা রাজপথে ঘাম ঝরিয়ে হামলা মামলায় ছিল দিকবিদিক। এই অবস্থায় চাপা অসন্তোষে জর্জরিত ছিল তাগী নেতাকর্মীরা। সেই অবস্থার পরিবর্তন হলো কাউন্সিলদের গোপন ভোটে। এখন নির্যাতিত ত্যাগীদের ভোটে সিলেট জেলা বিএনপির নেতৃত্বে স্থান পেয়েছেন যোগ্য রাজনীতকরাই। দলের স্থানীয় শীর্ষ তিন পদের মধ্যে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তুখোড় রাজনীতিক আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। সভাপতি পদে তিনি ভোট পেয়েছেন ৮৬৮টি। কাইয়ুম চৌধুরীর রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতৃত্বের সাথে গভীর সম্পর্ক। তৃণমুল রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ায় কেন্দ্র পর্যন্ত পৌছাতে পারবেন স্থানীয়দের চাওয়া-পাওয়ার পালস্। তার মাধ্যমে বিকাশমান হওয়ার সুযোগ পেয়েছে সিলেট বিএনপির রাজনীতি। অপরদিকে, সেক্রেটারী পদে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। সেক্রেটারী পদে ভোট পেয়েছেন ৭৯৮টি। সিলেট জেলা ছাত্রদলের একসময়ের সভাপতি ছিলেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী ও রাজপথের পরীক্ষিত তিনি। বনেদি পরিবারের সন্তান এমরান আহমদ চৌধুরী তৃণমুল নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহনযোগ্য ্ও নির্ভরশীল এক চরিত্র। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব থাকার পরও দলের দূর্যোগ মুর্হুতে দেশে অবস্থান করে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। কাউন্সিলরা তার ত্যাগর মূল্যায়ন করেই নির্বাচিত করেছে তাকে। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. শামিম আহমদ। ৬২৩টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শামীম ছাত্রদল রাজনীতি সহ দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারী হিসেবে পালন করেছেন দায়িত্ব। সিলেট ছাত্রদলের এক সময়ের প্রতিভাবান নেতা দিনার আহমদের ভগ্নিপতি তিনি। দিনার দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। তার নিখোঁজ ঘটনা নিয়ে সিলেটে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে দিনের পর দিন। এছাড়া শামীম আহমদ মেধাবী ও বৃদ্ধিদীপ্ত এক তরুণ রাজনীতিক। তাদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল গফফার।
আজ দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয় সম্মেলন স্থল সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে। গণনা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কাউন্সিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের মধ্যে সভাপতি পদে আবুল কাহের চৌধুরী (শামীম) পান ৬৭৫ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে আ. ফ. ম কামাল ৭২, আলী আহমদ ৫৭৩ ও মো. আব্দুল মান্নান ৮১ ভোট পান। আর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এম মুজিবুর রহমান মুজিব ৪৬৪ ও লোকমান আহমদ ৪৩৯ ভোট পেয়েছেন। কাউন্সিলে মোট ভোটার বা কাউন্সিলর ছিলেন ১৮১৮ জন। এর মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ১৭২৬ জন কাউন্সিলর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন