ঢাকার সাভার পৌর এলাকায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) প্রায় ৯ একর জমি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উচ্ছেদ অভিযান থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আধা-পাকা, পাকা ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়া হয়।
গতকাল বুধবার দিনভর পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি মহল্লার ছোট বলিমেহের ও সাভার মৌজায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেদখলে থাকা মোট ৮ একর ৬০ শতাংশ জমিতে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও পুলিশের একাধিক টিম উপস্থিত ছিলেন।
বাপাউবোর কর্মকর্তারা জানান, ছোট বলিমেহের মৌজায় ৫ একর ৮৮ শতাংশ ও সাভার মৌজায় ২ একর ৭২ শতাংশ জমি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের। দীর্ঘদিন ধরে দখল এলাকার লোকজন বহুতল ভবন তৈরি করে বসবাস করে আসছিল। পরে আদালতে নির্দেশে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্যাংক কলোনী এলাকায় বাপাউবো’র জমিতে বহুতল ভবন, মসজিদ, মাদরাসা, দোকানপাট, ছোট বড় ভবন মিলে শতাধিক ভবনে চার শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। অনেকেই জমি কমদামে কিনে ঘরবাড়ি তৈরি করেছে। অনেকের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে উচ্ছেদে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কোনো লাভ হয়নি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে রাখা পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ড করা জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গত কয়দিন থেকেই দখলদারদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এ বিষয়ে পৌরসভা আমাদেরকে বোল ড্রোজার এবং লোকবল দিয়ে সহযোগিতা করছে। এছাড়া পুলিশ প্রশাসন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত অবৈধ দখলদার সরাতে না পারছি ততক্ষণ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, ১৯৫৬ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড সাভারের ব্যাংক কলোনী মহল্লার ছোট বলিমেহের ও সাভার মৌজায় ৮ একর ৬০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করেন। তবে জমিটি তারা ব্যবহার না করায় ধীরে ধীরে জমিটি দখলে নেয় দখলদাররা। পরে তারা সেখানে গড়ে তুলেন বহুতল ভবনসহ নানা পাকা স্থাপনা। এদিকে জানা গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে স্থানীয় একটি চক্র এলাকাবাসীর কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
প্রদীপ পাল নামে এক বাসিন্দা জানান, তার দুটি প্লটে ১০ শতাংশ জমি রয়েছে। দুই প্লটেই একতলা করে দুটি ভবন রয়েছে। অভিযানে ভাঙ্গা পড়ছে তার ভবন দুটি। তিনি বলেন, সিএস অনুযায়ী জমিটি আমাদের বাপ-দাদার। সেই হিসেবে পৈত্রিক সম্পত্তি। এনিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে মামলা চলমান রয়েছে বলেন তিনি। আদালত থেকে তিনি তার জমির স্থগিতাদেশ এনেছেন বলেও জানান।
উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আইনুল হক বলেন, পাউবোর সম্পত্তি দখল করে ভবন তৈরির পর বসবাস করে আসছিলো। আদালতের নির্দেশে আমাদের জমি আমরা উদ্ধার করছি। তবে যাদের জমিতে আদালতের স্ট্রে অর্ডার রয়েছে তাদের ভবনে লাল নিশান টানোর জন্য বলা হয়েছে। আপাতত ওইসব ভবন ভাংগা হবে না। পরে যাচাইবাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজি মইনুল ইসলাম বলেন, আইন শৃঙ্খলার যাতে কোনো অবনতি না ঘটে এজন্য আমরা সহায়তা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন