চান্দ্র মাসের নবম মাসকে রমজান মাস বলা হয়ে থাকে। রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠ মাস। মুমিন জীবনে আমল প্রবৃদ্ধির এক অনন্য উপহার হলো এ রমযান। এ মাসে একজন মুমিনের একটি আমলের মর্যাদা ৭০ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ঘটে থাকে। রমজান মাস গুনাহ মাফের মাস। শয়তান শৃঙ্খলিত হওয়ার মাস। মুমিন বান্দার ইবাদাতের সওয়াব গাণিতিক হারে বেড়ে যাওয়ার মাস এ রমজান। আল্লাহ তা›আলার অফুরন্ত নেয়ামতে ভরা এ রমজান মাস। এ মাসেই নাজিল হয়েছে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন। বিশ্ববাসীর জন্য সবচেয়ে বড়ো নে›আমত হলো পবিত্র-কোরআন। এ মাসের মধ্যেই রয়েছে মহামহিমান্বিত এক বিশেষ রজনী। কোরআনের পরিভাষায় যাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। এ রাতটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। একটি রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম হবার কারণ একটাই। আর সেটা হলো কোরআন নাজিল। হেরা গুহার মর্যাদার কারণও ঐ একই কারণে। মক্কা-মদিনার সম্মানের কারণও ঐ একটাই। কোরআনকে আঁকড়ে রাখে ছোট্ট এক টুকরো কাপড়। সেটাও সকল বান্দার কাছে মহাপবিত্র হিসেবে বিবেচিত। এখানেও রয়েছে ঐ একই কারণ। আর তাহলো কাপড়টি কোরআনকে ঢেকে রাখে। ময়লা পড়া থেকে আল-কোরআনকে রক্ষা করে ঐ টুকরা কাপড়খানা। গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা আল-কোরআন পড়তে ব্যবহার করে কাঠের নির্মিত ছোট্ট একটি রেহাল। একজন মুসলিম বান্দার কাছে সেটিরও মর্যাদা অনেক বেশি। এটির কারণও ঐ একই; তার উপরে কোরআন রেখে পড়া হয়। শুধুমাত্র কোরআনের মর্যাদার কারণেই অতিকায় তুচ্ছ বস্তুগুলোর এত মর্যাদা! রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। এটা একটি ফারসি শব্দ। রোজাকে আরবিতে সিয়াম বলা হয়। সিয়াম অর্থ বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায়, যাবতীয় পানাহার, সকল প্রকার পাপাচার ও কামাচার থেকে বিরত থাকাকে সিয়াম বলে। একজন মুমিন বান্দা সাধারণত সকল পাপাচার থেকে বিরত থাকবে, এটাই হচ্ছে ইসলামের স্বাভাবিক দাবি। রমজান মাসে এব্যাপারে একজন মুমিন আরও বেশি সচেতন হবে। রমজানের শর্তস্বরুপ সে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বৈধ-অবৈধ যাবতীয় পানাহার এবং কামাচার থেকে বিরত থাকবে। ইসলামী শরীয়তে এটাকেই রোজা বলে অভিহিত করা হয়। মহানবী (সা.) ও তাঁর উম্মতের উপর রোজার এ বিধান ফরজ হয় হিজরী দ্বিতীয় সনে। তবে পূর্ববর্তী জাতির উপরও রোজা রাখার বিধান ছিল। তাই দেখা যায়, মহানবী (সা.) হিজরত করে মদীনায় গমনের পর আশুরার রোজা আদায় করতেন। এছাড়া তিনি প্রতি আরবী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন। এতে প্রমাণিত হয়, রমজানের রোজা রাখার পূর্বে ও পৃথিবীতে রোজা রাখার বিধান ছিল। মূলত মহানবীর (সা.) উপর শাবান মাসে আল্লাহতা’আলা রোজার বিধান নাযিল করেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা›আলা বলেন, ‹তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে। তোমাদের পূর্ববর্তীগণের উপরও রোজা ফরজ ছিল। উদ্দেশ্য ছিল, তোমরা যেন তাকওয়া অর্জন করতে পারো। তবে কতিপয় নির্দিষ্ট দিনের রোজা। তোমাদের কেউ যদি অসুস্থ থাকো কিংবা সফরে থাকো, তাহলে অন্য কোনো দিনে এ রোজাগুলো পূর্ণ করে দিও। আর যাদের রোজা রাখার সামর্থ্য আছে কিন্তু রাখে না, তারা যেন ফিদিয়া দেয়। আর একটা রোজার ফিদিয়া হলো একজন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো। আর যে কেউ স্বেচ্ছায় বেশি ভালো কাজ করে অর্থাৎ একের অধিক মিসকীনকে খাওয়ায় সেটা তার জন্য ভালো। তবে যদি রোজা রাখো সেটাই তোমাদের জন্যে অধিক উত্তম কাজ, যদি তোমরা বুঝতে পারো। (সূরা বাকারা: ১৮৩)
উল্লেখিত আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, এ রোজার বিধান শুধু মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর উম্মতের উপরই ফরজ করা হয়নি। বরং পূর্ববর্তী অন্যান্য নবী-রাসুল (সা.) ও তাদের উম্মাতের উপর রোজার এ বিধান ফরজ ছিল। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসী (র.) বলেন, প্রথম নবী ও রাসূল আদম (আ.) থেকে শুরু করে ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সকল নবীদের জামানায় রোজার বিধান চালু ছিল। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)কে জান্নাতে থাকা অবস্থায় একটি গাছের ফল খেতে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ বিরত থাকা এক ধরনের রোজা বলে কোনো কোনো মুফাসসির অভিমত পেশ করেছেন। অতঃপর তারা আল্লাহ কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভুলে গিয়ে উক্ত গাছের ফল ভক্ষণ করেন। ফলে তারা জান্নাত থেকে পৃথিবীতে আগমন করেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আদম (আ.) এর উপর রোজা রাখা আবশ্যক ছিল। তাঁর সময়ে রোজার সংখ্যা নিয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়না। তবে নির্ভরযোগ্য কথা হলো, তিনি রোজা রাখতেন। আদম (আর.) এর পরে পৃথিবীতে আগমন করেন ইদ্রিস (আ.)। ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি সারাজীবনই রোজা রাখতেন। পৃথিবীতে এরপর আগমন করেন নূহ (আ.)। ইমাম তাবারী (র.) বলেন, নুহ (আ.) মহররমের দশ তারিখে নিজে রোজা রাখতেন এবং তাঁর জাতিকে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। এছাড়া তিনি সারাবছরই রোজা পালন করতেন। মুসলিম মিল্লাতের পিতা ইব্রাহিম (আ.)ও নিয়মিত রোজা পালন করতেন। তিনি প্রতি মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। (ইবনু মাজাহ) তবে ইমাম তাবারি (র.) বলেন, উম্মাতে মুহাম্মাদীর ন্যায় তার উপরও ত্রিশটি রোজা ফরজ ছিল। ইসলামের অন্যতম আর একজন নবী হলেন দাউদ আলাইহিস সালাম। দাউদ (আ.) এর রোজা সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে দাউদ (আ.) এর রোজা। তিনি এক দিন পর একদিন রোজা রাখতেন›। (মুসলিম) ‹একবার আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) সারাজীবন রোজা পালনের সিদ্ধান্ত নিলেন। খবরটি শুনে মহানবী (সা.) তাকে তাঁর কাছে ডাকলেন। অতঃপর তিনি তাকে রোজা পালনের ক্ষেত্রে ইব্রাহিম (আ.) কর্তৃক অনুসৃত তিনদিন রোজা পালনের পরামর্শ দিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) এ পরামর্শে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি তিন দিনের চেয়েও বেশি রোজা রাখতে ইচ্ছুক বলে মত প্রকাশ করলেন। তখন নবীজি (সা.) তাকে বললেন, তাহলে তুমি দাউদ (আ.) এর নীতি অবলম্বন করো। এর চেয়ে বেশি করতে যেও না। কারন দাউদ (আর.) একদিন রোজা পালন করতেন আর এক দিন ভাঙতেন। এর চেয়ে ভালো রোজা আর নেই। সুতরাং এর চেয়ে বেশি আর করতে যেও না›। (বুখারী) ইসলামের অন্যতম একজন শ্রেষ্ঠ নবী সুলাইমান (আ.)। তিনি প্রতি মাসের প্রথম ভাগে তিন দিন, দ্বিতীয় ভাগে তিন দিন এবং শেষভাগে তিনদিন করে মোট ৯ দিন রোজা রাখতেন। প্রধান আসমানী কিতাবপ্রাপ্ত অন্যতম নবী হলেন মুসা (আ.)। মুসা (আ.) সিনাই পর্বতে গিয়ে ৪০ দিন অবস্থান করেন। এ ৪০ দিনে তিনি পানি পান করতেন না। খাদ্যও গ্রহণ করতেন না। এ দীর্ঘ ৪০ দিন যাবত তিনি রোজা পালন করেছেন মর্মে তাওরাতে বর্ণিত হয়েছে। (কিতাব খুরুজ: ২৪) মূলত এখানে আল্লাহর সাথে মুসা (আ.) দেখা করবেন। আল্লাহর সাথে তাঁর কথা হবে, সাক্ষাৎ হবে, তিনি ওহী প্রাপ্ত হবেন ইত্যাদি বাসনায় তাঁর জন্য রোজা পালন ছিল অত্যাবশ্যকীয় একটি কাজ। প্রধান আসমানী কিতাবপ্রাপ্ত নবীদের মধ্যে তৃতীয় হলেন ঈসা আলাইহিস সালাম। তিনি নিয়মিত রোজা রাখতেন। ঈসা (আ.) রিসালাতের কাজের শুরুর ঠিক চল্লিশ দিন আগে রোজা রেখেছিলেন। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, তিনি এক দিন রোজা রেখে দুইদিন বিরতি দিতেন। আর এভাবেই তিনি সারা বছর রোজা পরিপালন করতেন।
আল্লাহ প্রবর্তিত এসব ধর্মের বাইরেও পৃথিবীতে অসংখ্য মানব রচিত ধর্মের অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। প্রাচীন বিভিন্ন মানব রচিত এসব ধমর্ওে রোজা রাখার বিধান দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীতে মোট প্রায় ৪০০০ ধর্ম রয়েছে। আর প্রত্যেক ধর্মে উপবাসনীতির কথা বর্ণিত হয়েছে। নিজ ধর্মের বিধান অনুসারে তাদের মাঝে রোজা রাখার নিয়মও চালু আছে। পৃথিবীতে জৈন ধর্ম একটি প্রাচীন ভারতীয় ধর্ম। জৈন ধর্মের গবেষকদের মতে, খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে এ ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে। ভারত ছাড়াও উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য ও অস্ট্রেলিয়াতে এদের বসবাস রয়েছে। বিশ্বময় জৈন ধর্ম ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যা প্রায় এক কোটির কাছাকাছি। এ ধর্মে উপবাসনীতির কথা আলোচনা করা হয়েছে। এ ধর্মে একটি উপবাসনীতির নাম হলো চৌবিহার। তাদের ধর্ম মতে, ‹এক সূর্যোদয় থেকে আরেক সূর্যোদয় পর্যন্ত সমস্ত প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকাকে চৌবিহার বলা হয়›। এ ধর্মমতে, উপবাসের লক্ষ্যই হলো, হিংসা বর্জন ও অহিংসা অর্জন। প্রাচীন ভারতীয় একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মের নাম বৌদ্ধ ধর্ম। বিশ্বময় বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী সংখ্যা ৫২ কোটি। এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এটি প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (বর্তমান বিহার) উৎপত্তি লাভ করে। এ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে অষ্টবিধান পরিপালিত হতে দেখা যায়। আর অষ্টবিধানের নিয়ম হলো, দুপুর থেকে পরবর্তী সকাল পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার থেকে বিরত থাকা। বৌদ্ধ ধর্মের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সাধারণত দুপুরবেলায়ই খাদ্য গ্রহণ করেন। এ ধর্মের প্রকৃত অনুসারীরা খুব কমই আহার করে থাকে। যদিও এটাকে উপবাস বা রোজা বলা যায় না। তথাপিও সুশৃঙ্খলিত খাদ্যবিধি ধ্যান এবং সুস্বাস্থ্য গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে তাদের বিশ^াস। ভারতের অতি প্রাচীন একটি মানব রচিত ধর্মের নাম হিন্দু ধর্ম। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনধারা। খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মের পরে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ধর্ম। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশসহ পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটির কিছু বেশি হিন্দু ধর্মের অনুসারী রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৩০০ অব্দের মধ্যে এ ধর্মের উৎপত্তি ঘটেছে। এ ধর্মে উপবাস প্রথা ধর্মের এক আনুষঙ্গিক অংশ। ব্যক্তি, সমাজ ও ধর্মীয় রীতিনীতির অংশ হিসেবে এ ধর্মে উপবাসনীতি চালু আছে। হিন্দুদের মধ্যে অনেকে একাদশী ও পূর্ণিমাতে উপবাস প্রথা পালন করেন। ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে দেবতার উদ্দেশ্যে রোজা রাখার প্রচলন রয়েছে। মঙ্গলবারে দক্ষিণ ভারত ও উত্তর পশ্চিম ভারতে রোজা পালন করা হয়ে থাকে। দক্ষিণের হিন্দু জনগোষ্ঠী মনে করে যে, মঙ্গলবারকে শক্তির দেবী মারিয়াম্মানের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর ভারতের হিন্দুরা মঙ্গলবারে দেবতা হনুমানের জন্য উপবাস নীতি পালন করে থাকে। অন্ধপ্রদেশের মানুষেরা কার্তিক মাসের শুরুর দিন উপবাস নীতি পালন করে থাকে। সোমবারে তারা শিবের জন্য এবং পূর্ণিমার দিন কার্তিকের জন্য উপবাসনীতি পালন করে থাকে। প্রাচীন পারস্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মের নাম হলো ম্যানেকেইজম ধর্ম। ধর্মটি খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে পারস্যে (ইরানে) উৎপত্তি লাভ করেছিল। নতুন চাঁদ উদিত হওয়ার পর তারা দুই দিন রোজা পালন করতো। আবার চাঁদের পরিপূর্ণতার দিন অর্থাৎ পূর্ণিমার দিনেও তারা ধারাবাহিক দুই দিন রোজা পালন করতো। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাতে বলা হয়েছে, প্রাচীন মিসরীয়দের মাঝে উল্লেখযোগ্য উৎসবের মধ্যে রোজা ছিল অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। তাদের জাতীয় বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে রোজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায়ও রোজা রাখার প্রথা দেখতে পাওয়া যায়। পরিশেষে বলা যায়, পৃথিবীর সকল ধর্মেই রোজার মতোই উপবাস নীতির প্রচলন আছে। তবে ইসলাম নির্দেশিত রোজা অন্য ধর্মে প্রচলিত রোজা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ প্রচলিত অন্যান্য ধর্মে রোজা সাধারণত ধর্মীয় আইন দ্বারা বিধিবদ্ধ নয়। অনেকটা আধ্যাত্বিক বাসনা এবং কিছু জাগতিক বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তারা রোজা পরিপালন করে থাকেন। কিন্তু ইসলামের রোজা শুধু আধ্যাত্মিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আর জাগতিক ভিত্তিহীন বিশ্বাস ইসলামে সমর্থনযোগ্য নয়।
প্রতি ১১ মাস পর মুসলিম বিশ্বে অফুরন্ত কল্যাণের বার্তা নিয়ে আগমন করে মাহে রমজান। আধ্যাত্নিক চেতনার সংবাদ নিয়ে এ রমজান ফিরে আসে প্রতিটি মুসলিমের দ্বারে। মানুষের নৈতিক উন্নতির পাথেয় নিয়ে রমজানের আগমন ঘটে প্রতিটি মুমিনের ঘরে। রোজার মাধ্যমে রোজাদারের মনে জাগ্রত হয় গরীবের প্রতি মমত্ববোধ। অনাহারির প্রতি সৃষ্টি হয় অকৃত্রিম ভালেবাসা। সামাজিক বন্ধন দৃঢ়করণে রোজায় রয়েছে অসামান্য শক্তি। চরিত্র গঠনের বড় সুযোগ রয়েছে এ রমজানে। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে শৃঙ্খলিত জীবন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে রমজানের রোজা। রোজা মুসলিম জীবনে সার্বিকভাবে তাকওয়া অর্জনের এক অনন্য উপাদান, যা অবলম্বনের মাধ্যমে রোজাদারগণ একটি শাশ্বত ও সুন্দর সমাজ নির্মানের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। আর এতসব গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লহর নৈকট্য লাভ করে। আর এ নৈকট্য লাভের মাধ্যমে একজন মুসলিম পরকালে জান্নাত লাভের সৌভাগ্য অর্জন করে।
লেখক: কলামিস্ট ও অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
dr.knzaman@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন