শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বিকল এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল নামেই শুধু আধুনিক, কাজে নয়

প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা : নেত্রকোনা জেলার ২৫ লাখ জনগণের চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষে জেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালটি নামেই শুধু আধুনিক, কাজে নয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা আরামবাগস্থ পুরাতন হাসপাতালে প্রয়োজনীয় জায়গা ও অবকাঠামোর অভাবে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকার জয়নগরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০০৫ সালে ৫০ শয্যার হাসপাতালকে এক শ’ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যার আধুনিক এই হাসপাতালটি কাগজে-কলমে এক শ’ শয্যায় উন্নীত করা হলেও অদ্যাবধি জনবল বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার মান এখনো মান্ধাতা আমলের রয়ে গেছে।
সরেজমিন হাসপাতাল ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারী, রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন এই হাসপাতালে আউটডোরে প্রায় চার থেকে পাঁচ শ’ এবং ইনডোরে প্রায় এক শ’ থেকে দেড় শ’ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে ডাক্তাররা একই রুমে দুই-তিনজন করে বসে গাদাগাদি করে রোগী দেখেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা দেন। প্রয়োজনীয় বেডের অভাবে অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। রোগীদের সঠিক রোগ নির্ণয় ও নির্ভুল চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য হাসপাতালে নেই উন্নত মানের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি। তারপরও হাসপাতালে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলো নিয়মিত ব্যবহার ও সযতেœ রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন যাবৎ বিকল হয়ে পড়ে আছে। যার ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরাও সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে রোগীদেরকে বাইরে থেকেই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয় দরিদ্র রোগীদের। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে হাসপাতালের পরিবেশ ক্রমশ নোংরা হয়ে যাচ্ছে। এক শ্রেণির মাদকাসক্ত সন্ধ্যার পর হাসপাতালের ভেতর মাদকের আড্ডা বসাচ্ছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
নেত্রকোনার আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ৫০ শয্যার হাসপাতালকে এক শ’ শয্যায় উন্নীত করা হলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও জনবল বৃদ্ধি করা হয়নি। হাসপাতালে কন্সালটেন্টসহ মঞ্জুরিকৃত ২২টি মেডিক্যাল অফিসার পদের মধ্যে আটটি পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় নার্স, টেকনেশিয়ান ও কর্মচারীর পদ শূন্য। স্বল্পসংখ্যক ডাক্তার দিয়ে এত বিপুল রোগীকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডা: মো: হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সদর হাসপাতালে ডাক্তার সংকটসহ পরীক্ষা- নিরীক্ষা জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বিকল থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, এসব সমস্যা সমাধান করার জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে বারবার আবেদন-নিবেদন করে আসছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্রæত এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন