স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, নির্বাচনের সময় বুঝে না বুঝে হাজারো রকমের কমিটমেন্ট করে ফেলেছি। বলেছিলাম স্মার্ট সিটি বানাবো। আমি কখনো বুঝি নাই স্মার্ট সিটি কি জিনিস। বলেছিলাম যানজট থাকবে না, আমি জানতামই না যানজট নিরসন সিটি কর্পোরেশনের আওতায় পড়ে না। বলেছিলাম জলজট থাকবে না। তখন বুঝি নাই যে এটা ওয়াসার এলাকা। খাল কাটার পরিকল্পনা করে দেখি এটি জেলা প্রশাসকের আওতায়। সব চাইলেই করা যায় না।
গতকাল শুক্রবার সকালে গ্রামীণফোনের প্রধান কার্যালয়ে স্মার্ট সিটি হ্যাকাথনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির কথাগুলো বলেন।
আনিসুল হক বলেন, বিমানবন্দর এলাকা থেকে আসার সময় ক্লিন সিটি দূরের কথা, ক্লিন আকাশই দেখা যায় না। কারণ হাজার হাজার বিলবোর্ড। এগুলো তাদের বিলবোর্ড যাদের গায়ে হাত দেয়া যায় না। দুই-চার বছর আগে অনেকে তাদের গায়ে হাত দিয়েছিল। তাদের হাত কেটে ফেলা হয়েছে। দিস ইজ ফ্যাক্ট। এমন হলে আমরা কিভাবে ক্লিন সিটির কথা বলি? আমি কিছু তোয়াক্কা না করে ২০ হাজার বিলবোর্ড ফেলে দিয়েছি। তবে সবার কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থায় বিলবোর্ড আনতে হবে।
তিনি বলেন, রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখার জন্য বিন (ডাস্টবিন) দিয়েও কাজ হয় না। টোকাইরা বিন নিয়ে বিক্রি করে। জনগণের জন্য রাস্তা খালি করতে গিয়ে মেয়রকেই উল্টো বন্দি হতে হয়েছে তেজগাঁওয়ে। তারা সমাজের প্রভাবশালী শক্তি। তবে আল্লাহর রহমত ছিল বলে তাদের সঙ্গে আমরা জিতেছি।
তিনি বলেন, স্মার্ট সিটির পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু সিটি কর্পোরেশন এমনিতেই খুব স্মার্ট! সিটি কর্পোরেশনে আমরা যারা কাজ করি, তারা এক ধরনের ব্যুরোক্রেট। এমন কেউ কেউ আছে, যারা অনেক বছর ধরে কাজ করছে, আধুনিকতার সঙ্গে পরিচয়ও আছে কিন্তু আধুনিকতাকে ধারণ করার মতো শক্তি নেই, জ্ঞান নেই।
নগর অ্যাপের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, পরিবারের কোনো সদস্য বিপদে পড়লে মাত্র ৫ সেকেন্ডেই সে বার্তা পৌঁছে যাবে অভিভাবকদের কাছে। নগর নামে একটি অ্যাপ সে বার্তা বাহক, যা তৈরি করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। অ্যাপের বিশেষ সিকিউরিটি অপশন সহজেই কাজটি করে দেবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানরা কাজ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে। মাইক্রোসফট-এ কর্মরত মেধাবী তরুণ জামিলের মাধ্যমে আমরা নগর অ্যাপটি তৈরি করি। এর মাধ্যমে যে কেউ ইচ্ছে করলে নগরের যেকোনো সমস্যা আমাদের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতে পারেন। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেবো। অ্যাপটিতে যে বিশেষ সিকিউরিটি অপশন রাখা হয়েছে তা বিশ্বের কোনো অ্যাপে নেই। এর কল্যাণে যেকেউ বিপদে পড়লে, তা তার অভিভাবককে জানাতে পারবেন মাত্র ৫ সেকেন্ডে। অ্যাপে ৫ সেকেন্ড চেপে ধরলেই সংকেত পৌঁছে যাবে। শুধু তাই নয়, বিপদ সংকেতটি চলে যাবে পুলিশ কন্ট্রোল রুমেও।
স্মার্ট সিটি হ্যাকাথন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ইয়াছির আজমান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন