বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভয়াবহ হচ্ছে ডায়রিয়া পরিস্থিতি

আইসিডিডিআরবিতে মিনিটে দুজন রোগী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০১ এএম

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রতি মিনিটে দুজন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত আইসিডিডিআরবিতে মোট ৭৬৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। গত সোমবার ২৪ ঘণ্টায় মোট রোগী ভর্তি হয়েছিল ১৩৮৩ জন। গতকাল আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় লোকে-লোকারণ্য পরিস্থিতি। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অতিরিক্ত ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসার জন্য টানানো হয়েছে বাড়তি দুটি তাঁবু। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগ রোগী রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, মোহাম্মদপুর উত্তরখান, দক্ষিণখান এলাকা থেকে এসেছেন।

ধানমন্ডি শংকর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ২৭ বছর বয়সী রাজিব হোসেনের সঙ্গে থাকা স্বজন জানান, গতকাল রাত থেকেই রাজিবের ডায়রিয়ার সঙ্গ বমি শুরু হয়। এর পর রাতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে সকালে তাকে আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি করা হয়। সকাল থেকে তাকে চার ব্যাগ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। বাবু নামে আরেক রোগী জানান, প্রথমে তার ডায়রিয়া শুরু হয়, এরপর ডায়রিয়ার সঙ্গে দফায় দফায় বমি। ডায়রিয়া এবং বমি বন্ধ না হওয়ায় আজ সকালে তিনি এখানে ভর্তি হয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, গ্রীষ্মকালের গরমের শুরুতে বরাবরের মতোই ডায়রিয়া এবং কলেরার রোগী বেশি ভর্তি হয় হাসপাতালে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।
আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল ঢাকার সহকারী বিজ্ঞানী ডা. ফারজানা আফরোজ বলেন, ১৬ মার্চ থেকে এ যাবত প্রতিদিন গড়ে ১২০০ থেকে ১৩০০ রোগী ভর্তি হয়েছে। গতকাল (সোমবার) সর্বোচ্চ ১৩৮৩ জন রোগী ভর্তি হয়। প্রতিদিন গড়ে ১৭০০ থেকে ১৮০০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকছে। প্রতি বছর এই সময়টায় রোগীর চাপ বাড়ে। তবে এবারের রোগীর সংখ্যা অন্য বছরগুলোর তুলনায় একটু বেশি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে বছরের অন্যান্য সময় ৪০০ থেকে ৬০০ রোগী থাকে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতিদিন রোগী বাড়তে শুরু করে। প্রতিদিন রোগী বাড়তে বাড়তে এখন প্রায় ১৪০০ রোগী আসছে। দেখা যাচ্ছে প্রতি প্রতি মিনিটে দুজন রোগী এখানে আসছে। আমরা রোগীদের ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ছেড়ে দিচ্ছি, যেন অন্যদের চিকিৎসা দেওয়া যায়। কোন এলাকা থেকে রোগী বেশি আসছে জানতে চাইলে ডা. ফারজানা আফরোজ বলেন, যাত্রাবাড়ী, আদাবর, দক্ষিণখানের রোগী বেশি আসছে।
কী কারণে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ, তাই পানির সমস্যার কারণেই এটা হচ্ছে। প্রচণ্ড গরম এবং বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবেই এমনটা হচ্ছে।

ডায়রিয়া রোগীদের জন্য করনীয় জানতে চাইলে ডা. ফারজানা আফরোজ বলেন, যখনই কারও ডায়রিয়া শুরু হবে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করতে হবে। স্যালাইনের পাশাপাশি তরল খাবার যেমন-চিড়ার পানি বা ডাবের পানি খেতে দিতে হবে। বাইরের জুস বা অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে। তারপরও রোগীর অবস্থার যদি অবনতি হয় নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে হবে। সবাইকে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে হবে, বিষয়টা এমন না। হাসপাতাল অনেক দূরের পথ হওয়ার কারণে রোগীর আরও বেশি পানিশূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। তাই কাছাকাছি কোনো সরকারি হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন