দেশে এ যাবতকালের সর্বাধিক পরিমাণ তরমুজের আবাদেও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না এবার। চলতি রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে ৪৬ হাজার সহ দেশে প্রথমবারের মতো প্রায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল সুমিষ্ট তরমুজের আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৪২ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো। তবে ফসল বাজারে ওঠার মূল সময়টিতেই রোজা শুরু হওয়ায় এবারো বাজারে চাহিদা কিছুটা কম থাকায় কৃষকরা মাঠে দাম পাচ্ছেন না। ফরিয়ারা মাঠে যে তরমুজ গড়ে ৯০ টাকায় কিনছে, দু’হাত ঘুরে বাজারে এসে তা ৩শ’ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষক ও ক্রেতারা ঠকলেও লাভবান হচ্ছে ফরিয়াররা।
গত বছর সারাদেশে আবাদকৃত প্রায় ৪২ হাজার হেক্টর মধ্যে বরিশাল কৃষি অঞ্চলেই প্রায় ২৫ হাজার হেক্টরে রসালো তরমুজের আবাদ হয় বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই জানিয়েছে। যদিও গত বছর দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজের আবাদ ছিল আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর কম। আর এবছর তা প্রায় দ্বিগুনে উন্নীত হয়েছে।
ডিএই’র মতে ২০২০ সালে দেশে ৩৮ হজার ৮২৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ১৬ লাখ টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছিল। ২০২১ সালে তা ৪২ হাজার হেক্টরে উন্নীত হবার পরে চলতি রবি মৌসুমে দেশে তরমুজের আবাদ প্রায় ৬৩ হাজার হেক্টরে উন্নীত হল। যার মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায়ই আবাদ হয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার হেক্টরে। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ছাড়াও পিরোজপুর ও ঝালকাঠীর নদী তীরবর্তী জমিতে এখন চোখ রাখলেই সারি সারি তরমুজ চোখে পড়ছে। পাইকাররা পুরো জমির তরমুজ কিনে কৃষি শ্রমিকদের দিয়ে তা পাশর্^বর্তী খাল ও নদীতে রাখা নৌকায় করে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন মোকামে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন নদী খালেও এখন তরমুজ বোঝাই যন্ত্র চালিত নৌকা চোখে পড়ছে।
গত বছর দেশে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টন তরমুজ উৎপাদন হলেও আবাদ বেশি হওয়ায় এবার উৎপাদন ৩০ লাখ টন অতিক্রম করবে বলে আশাবাদী ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। এরমধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই এবার প্রায় ২০ লাখ টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে কৃষিÑঅর্থনীতিতে তরমুজ ইতোমধ্যে একটি বড় জায়গা দখল করে নিয়েছে। তবে বিগত দুটি বছর করোনা মহামারীর মূল সময়ে কুমড়া পরিবারের সুমিষ্ট রসালো ফল তরমুজ বাজারে আসায় ক্রেতার অভাবে কৃষকরা ভাল দাম পায়নি। এবার সে পরিস্থিতি না থাকলেও রোজা শুরু হওয়ায় বাজারে ক্রেতার সংকট রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন