শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যশোরে রমজানের বাজারে আগুন

ইফতার সামগ্রীতে মূল্যবৃদ্ধি, হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ!

যশোর থেকে শাহেদ রহমান | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২২, ৭:০৫ পিএম

যশোরে রমজান মাসের শুরুতেই রোজার বাজারে ইফতার সামগ্রীতে যেন আগুন জ্বলছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইফতারের সব সামগ্রীর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। যা কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। হঠাৎ করেই এসব সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে বাজার সিন্ডিকেটকে দুষছেন ক্রেতারা।

যশোরের বড় বাজার ঘুরে দেখা যায় মানুষের ভিড়। সবাই ব্যস্ত ছিল রমজানের ইফতার বাজারের কেনাকাটায়। কিন্তু কারো মুখে হাসি ছিল না। সবাইকে গোমরা মুখেই কেনাকাটা করছে। এর কারণ হচ্ছে, অনিয়ন্ত্রিত বাজার দর। রমজানকে ইস্যু করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কোন কারণ ছাড়াই ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পণ্যভেদে এসব মালামালের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জনগন। অথচ এ নিয়ে তাদের অভিযোগ করার কোন জায়গা নেই। কেউ জানেনা এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কারণ।

রবিবার (১০ এপ্রিল) বড় বাজারে দেখা গেছে, ইফতার সামগ্রী তৈরির অন্যতম উপাদান বেসন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৯৫ টাকায়, রোজার আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা। ছোলা ৬৮-৭৫ টাকা কেজি, আগে কেজিতে ৫ টাকা কম ছিল। চিড়া দাম ৫ টাকা বেড়ে ৫০-৮৫ টাকা কেজি। খেসাড়ির ডাল ৭৫ টাকা, মুড়ি লুজ (বস্তায়) ৭০-৭৫ টাকা, মুড়ি প্যাকেট ১১০-১২০ টাকায়। রোজার আগে ৫-১০ টাকা কম ছিল। এছাড়া, কলার বাজারে রোজার প্রথম থেকেই রীতিমত আগুন লেগেছে। ভালোমানের অমৃত সাগর কলা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা ডজন, রোজার আগে ৭০ টাকা ছিল। সাগরসহ সব কলার দামও ডজন প্রতি ৫-১০ টাকা বেড়েছে।

এদিকে, ইফতারের অন্যতম সামগ্রী খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫শ’ টাকা কেজি দরে। কেজি প্রতি বেড়েছে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত। দাবাজ খেজুরের প্রতি কেজি ২৬০-৩০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৩০০-১৫০০ টাকা, আজুয়া ৪০০-৭০০ টাকা, জিহাদী ৩৫০-৪০০ টাকা, খুরমা ১৮০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, শাহী জিলাপি ১২০ টাকা ও রেশমী জিলাপি ২৪০ টাকা কেজি, শর্শা কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৫-৮৫ টাকা, বেগুন ৬০-৭৫ টাকা কেজি, পেয়াজ ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর দেশী লেবু ১ পিচ ৩০ টাকা।

ক্রেতা ইয়াদুল ইসলাম বলেন, ইফতার সামগ্রীর দাম বেড়ে যেতে পারে বলে রোজার আগের দিনেই কিনতে বাজারে গিয়েই বিপদে পড়েছি। সব জিনিষের মূল্যই কোন কারণ ছাড়াই বৃদ্ধি পেয়েছে। রোজার আগে যে দামে জিনিষপত্র কিনেছি, সেই দাম আর নেই। রমজানকে ইস্যু করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ এ বিষয়ে অভিযোগ করার কোন স্থান নেই। কষ্টের এ কথা বলবো কোথায়?

নতুন খয়েরতলা কাচাঁ বাজারের মুদী দোকানি শহিদুল ইসলাম বলেন, এবারের রমজানের শুরুতে জিনিষপত্রের দাম বাড়েনি। কোন কোন ক্ষেত্রে দু’তিন টাকা বেড়েছে। অথচ অন্যান্যবার অনেক বেশি বেড়ে থাকে। এ নিয়ে ক্রেতাদের হতাশ হবার কোন কারণ নেই।

পালবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী মোহিদুল ইসলাম বলেন, গোলমরিচের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়েছে। জিরা ও দারুচিনির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য মসলার দাম বাড়েনি।

খেজুর ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান বলেন, রোজার আগে আড়ৎ থেকে যে দামে খেজুর কিনেছি, আজ কিনতে গিয়ে দেখেছি তার দাম কেজি প্রতি ২০-৫০ টাকা বৃদ্ধি। আমরা যে দামে কিনি তার থেকে একটু বেশিতে খুচরা বিক্রি করে থাকি। মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে আমদানীকারক ও পাইকার ব্যবসায়ীরা।

যশোরের অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো: সায়েমুজ্জামান বলেন, রমজানের শুরু থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ঠিক থাকে এবং সেই সাথে খাদ্যের মানের প্রতি লক্ষ করা হচ্ছে।

যশোর জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার জনাব শাকিল আহম্মেদ বলেন, নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনে বিক্রেতাদের প্রতি আহবান করা হচ্ছে। ইফতারের জন্য কোন প্রকার বাসি খাদ্য বা পোড়াঁ তেল ব্যবহার না করা হয় সে জন্য প্রতি দিন বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন