শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা : শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আকরাম এলাহীর বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার কারণে মনির হোসেন ফরাজী (৩২) নামে এক ইমারত শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ৭টায় মনির হোসেন কাজের উদ্দেশে প্রতিদিনের মতো চিতলীয়া ইউনিয়নের মজুমদারকান্দি গ্রামের বাড়ি থেকে ডোমসার বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ডোমসার দীঘিরপাড় ব্রিজের কাছে আসলে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। তখন স্থানীয় লোকজন তাকে সকাল সাড়ে ৮টায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ সাহা তাকে ভর্তি দেন এবং রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আকরাম এলাহীকে কল করেন। পাশাপাশি তিনি রোগীকে ঢাকায় প্রেরণের জন্য পরামর্শ দেন।
রোগীর ভর্তি ফাইল এবং অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ডাঃ আকরাম এলাহী সকাল সাড়ে ১০টায় উক্ত রোগীকে দেখেন এবং মন্তব্য লিখেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান উরুর হাঁড় ভেঙ্গে গেছে এবং মগজে জখম প্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু ডাঃ আকরাম এলাহী উক্ত রোগীর চিকিৎসা হাসপাতালে না করে বা ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা না করে সকাল ১১টার সময় হাজী শরীয়তুল্লাহ ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেন। তিনি ২০ হাজার টাকা চুক্তি বিনিময়ে উক্ত রোগীর পায়ের অপারেশন হবে বলে রোগীর অভিভাবকদের কাছ হতে নগদ সাড়ে ৩ হাজার টাকা অগ্রীম গ্রহণ করেন। এদিকে রোগীর মস্তিষ্কের আঘাত ও রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে ক্রমেই তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ মতে, ডাঃ আকরাম এলাহী আহত মনির ফরাজীকে হাজী শরীয়ততুল্লাহ ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিয়ে ৬ ঘন্টার মধ্যেও রোগীর আর কোন খোঁজ নিতে যাননি।
এদিকে মাথায় মারাত্মক আঘাতের কারণে রোগী ক্রমেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়াকে লক্ষ্য না করে ডাঃ আকরাম এলাহী টাকার লোভে অন্ধ হয়ে গাঢাকা দেন। এমনকি তিনি এ ব্যাপারে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শও করেননি। রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে বিকেল ৪টায় আবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রোগীকে ফিরিয়ে আনা হয়। চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা এবং ডাঃ আকরাম এলাহীর দায়িত্বে অবহেলার কারণে অবশেষে রোগীটি সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় মারা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন