সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আশাশুনিতে বন্ধুকে হত্যার দায়ে কলেজছাত্রের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা থেকে : | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা মনে করে বন্ধুকে হত্যার দায়ে মোবাশি^র হোসেন নামে এক কলেজ ছাত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় মোবাশি^র হোসেন পলাতক ছিল। গতকাল সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত মোবাশি^র হোসেন আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের বাসিন্দা ও আশাশুনি ডিগ্রী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের শঙ্কর সরকারের ছেলে চন্দ্রশেখর সরকার ও একই গ্রামের মোবাশি^র হোসেন ছোটবেলা থেকে একই সাথে পড়ালেখা করতো। শোভনালীর নলকুড়া বিলে তাদের দুজনেরই পৈত্রিক মাছের ঘের রয়েছে। চম্পাফুল আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আশাশুনি ডিগ্রি কলেজ থেকে একই সাথে এসএসসি ও এইসএসসি পাশ করার পর চন্দ্রশেখর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ও মোবাশি^র হোসেন আশাশুনি ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হন। এদিকে মোবাশি^রের সাথে একই গ্রামের ইন্দ্রানী ঘোষ ওরফে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একজন হিন্দু মেয়ের সঙ্গে একজন মুসলিম যুবকের প্রেম মেনে নিতে পারেনি চন্দ্রশেখর। তাদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাগবিতণ্ডা হতো দুই বন্ধুর মধ্যে। এর ধারাবাহিকতায় চন্দ্রশেখরকে পথের কাটা ভেবে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মোবাশি^র। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর রাতে বাড়ি থেকে চন্দ্রশেখরকে বাড়ির পাশের একটি ঘেরে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পাপিয়াকে নিয়ে কথা উঠলে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে চন্দ্রশেখরকে মারপিট করতে থাকে মোবাশি^র। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঘেরের পানির মধ্যে ফেলে দিয়ে আত্মগোপন করে সে। পরের দিন ওই ঘের থেকে চন্দ্রশেখরের লাশ উদ্ধার করে আশাশুনি থানা পুলিশ। ২০ অক্টোবর নিহতের বাবা শঙ্কর সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ছেলেকে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই সাতক্ষীরার একটি বাসা থেকে মোবাশি^রকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। পাপিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে বন্ধু চন্দ্রশেখরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যায় মোবাশি^র। এদিকে গত বছরের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম কবীর মোবাশি^র হোসেনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার নথি ও ১৪ জন সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামি মোবাশি^রের বিরুদ্ধে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বয়স বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং ২০ হাজার টাকা জরিমান অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন