নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যে কোন সময় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ফসল হানির আশংকায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধনু নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি ২ সে. মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগাম বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে হাওরের ফসলের যাতে কোন ধরণের ক্ষয়-ক্ষতি হতে না পারে তার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসী সর্তক অবস্থায় বিভিন্ন বাঁধে অবস্থান করছে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এফ এম মোবারক আলী জানায়, এ বছর নেত্রকোনা জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন। খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জ এই তিন হাওর উপজেলায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙ্গে হাওরের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এই আশংকায় সরকার ৮০ ভাগ ধান পাকলেই হাওরের কৃষকদেরকে ধান কাটার নির্দেশ দেয়ায় জেলা কৃষি বিভাগও কৃষকদেরকে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছে। এদিকে খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে পুরোধমে ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে খালিয়াজুরি ও মদন উপজেলায় ৫’শ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। এ সময় খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধ মেরামত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন