শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব বেশি হওয়া এবং পরিপূর্ণ আবাসিক না হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে মেস কিংবা বাসা ভাড়া করে থাকেন। তাছাড়া টিউশন এবং অন্যান্য কারণে শিক্ষার্থীদের প্রায় প্রতিদিনই শহরে যাতায়াত করতে হয়। যাতায়াতের সুবিধার জন্য শাটল ট্রেনই শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শাটল ট্রেনে যাতায়াত শিক্ষার্থীদের বিভীষিকার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রায়শই শাটলে যাতায়াতের সময় দূর্বৃত্তদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে আহত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে শাটলে বহিরাগতদের উৎপাতেরও শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ৬ এপ্রিল শাটলে পাথরের আঘাতে মাথা ফাঁটে চবি চারুকলার ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন তুসির।
এক সপ্তাহে অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থী পাথরের আঘাতে আহত হওয়ায় ৯ এপ্রিল পুলিশের সহায়তায় শাটল ট্রেনে অভিযান চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। অভিযান চলাকালীন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির সামনেই দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী পুনম বড়ুয়া নিশান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এসময় সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়া তার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে বলে জানালেও প্রশাসন থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো সাহায্য পায়নি বলে জানান আহত পুনম বড়ুয়া।
ওইদিনই রাত ৮ টা ৩০ এর বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটলে পাথর ছুঁড়তে গেলে শিক্ষার্থীরা তিন দূর্বৃত্তকে হাতেনাতে ধরে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করে। এসময় তাদের কাছে পাথর, ব্লেড এবং মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় শহরগামী শাটলে বহিরাগতদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী।
এদিকে গত ১১ নভেম্বর থেকে বন্ধ আছে চবির দুই জোড়া ডেমু ট্রেন। জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, শাটল এবং ডেমু দুটোই রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় চলে। ডেমুর ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার কারণে রেলওয়ে ডেমু বন্ধ রেখেছে। মাসখানেক আগেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছিল আর এক সপ্তাহের মধ্যে ডেমু ট্রেন দেওয়া যাবে। এরপরে আমি ৮ থেকে ১০ বার ফোন করেছি তাদের। তারা বলছেন ইঞ্জিন এখনো ওয়ার্কশপে ঠিক করা হচ্ছে।
শাটলে নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমরা বেশ কয়েকটি চিঠি লিখেছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এছাড়াও ঝাউতলা থেকে ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত পুলিশের সহায়তায় মাইকিং করে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রতি বগিতেও এখন পুলিশ থাকে। আশা করছি শাটলের এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন