শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

পুনরুত্থানের পথে ইমরান খান

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৫ এএম

পুনরুত্থান ঘটতে চলেছে পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দল পিটিআইয়ের। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী লাখ লাখ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। তাদের গগনবিদারী শ্লোগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। লক্ষ মানুষের প্রধান শ্লোগান: কুচক্রীদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দাও, ইমরান খানকে ক্ষমতায় ফিরে নাও, দেশকে শৃংখলমুক্ত কর ইত্যাদি। পাকিস্তানের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (পারিবারিক নাম আহমেদ খান নিয়াজী ইমরান) মার্কিন ও দেশীয় কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে মেয়াদ পূর্তির আগেই ‘পার্লামেন্টারি ক্যু’তে ক্ষমতাচ্যুত হন গত ৯ এপ্রিল। চীন-রাশিয়ার সাথে সম্পর্কোন্নয়নের কারণেই ইমরান খানের এ ক্ষমতাচ্যুতি।

‘ক্যারিশমেটিক লিডার’ ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হলেও রাজনীতির মাঠ ছাড়েননি। বীর দর্পে ফিরে গেছেন দেশবাসীর কাছে। তাই তার আহ্বানে দেশটির অধিকাংশ শহরে অসংখ্য মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তাদের অধিকাংশই তরুণ। কোনো কোনো শহরের সমাবেশ ছিল দেশটির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ইমরানের প্রতি সমর্থন এ যাবতকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অর্থাৎ ইমরান খানের পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাই পিটিআইয়ের সমাবেশগুলোতেও জনসমাগম হচ্ছে কল্পনাতীত। তাতে নেতারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিশদ বিবরণ দিচ্ছেন। এই সমর্থকদের সাংগঠনিকভাবে দলে সম্পৃক্ত করতে পারলে ইমরান খান ও পিটিআই অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে। ফলে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠনের জন্য আর কারো মুখাপেক্ষি হতে হবে না। সম্ভাবনার এই প্রেক্ষাপটে ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করার চেষ্টা চলছে। তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। সৎ, সাহসী, বিচক্ষণ ও দেশপ্রেমিক নেতা ইমরান খানকে শুধু পাকিস্তানের কল্যাণের জন্যই দরকার নয়, সেই সাথে বর্তমান বিশ্বের দুর্দশাগ্রস্ত মুসলিমদের কল্যাণের জন্যও খুব দরকার। কারণ, তিনি মজলুম মুসলিমদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন। তিনি মুসলিম জাতির মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। ইমরান খান নিজেও তার জীবনের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, জীবনের তোয়াক্কা করি না, দেশ মাতৃকার কল্যাণই আমার একমাত্র লক্ষ্য। ইতোমধ্যেই পিটিআইয়ের এমপিরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। পিটিআই নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুখ হাবিব গত ১৪ এপ্রিল বলেন, তার দলের পদত্যাগকারী ১২৩ আইনপ্রণেতার পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। ফলে এখন দেশে সাধারণ নির্বাচন অনিবার্য হয়েছে। পাকিস্তান পার্লামেন্টে ২৭২ সদস্যের মধ্যে পিটিআইয়ের ছিল ১৫৫ জন সদস্য। এর মধ্যে ২০ জন বিদ্রোহ করেছেন। তাদের দলের পক্ষ থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ১২ জন আইনপ্রণেতার অবস্থান স্পষ্ট নয় বলে খবরে প্রকাশ। ইমরান খান নতুন সরকারকে ‘মীরজাফরি’ সরকার বলে আখ্যায়িত করে দেশজুড়ে সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তার লক্ষ্য খুব দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের চলতি সংকটের অবসান। সরকার বলেছে, পদত্যাগ করলেই উপনির্বাচন করা হবে। কারণ, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ দলগুলোর জোড়াতালির সরকারের নেতারা ভালভাবেই জানেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে (আগস্ট ’২৩) মানুষ গাদ্দারী করার সমুচিত জবাব দেবে ব্যালটে। ফলে তাদের চরম ভরাডুবি ঘটবে। আর পিটিআইয়ের ভূমিধ্বস বিজয় হবে। এর জ্বলন্ত প্রমাণ গত ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত খায়বার পাকতুনখাওয়া প্রদেশের এনএ-৩৩ হাঙ্গু আসনের উপনির্বাচনে পিটিআই প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। তাই সরকার মেয়াদকাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার লক্ষ্যে নতুন নির্বাচন দেবে না। সব শূন্য আসনে উপনির্বাচন করবে। অবশ্য বিপুল সংখ্যক আসনে উপনির্বাচন করা হবে এক বিরল ঘটনা। দ্বিতীয়ত, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ব্যাপক হানাহানির আশঙ্কাও রয়েছে। বর্তমান পার্লামেন্টের বিরোধী নেতা ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নেতা ফজলুর রহমান জাতির আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ব বরেণ্য ক্রিকেট তারকাদের অন্যতম হচ্ছেন ইমরান খান। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তান ১৯৯২ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী হয়। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ইমরান খান দেশের ক্রিকেটের কাক্সিক্ষত উন্নতির জন্য সর্বদা নিমগ্ন থেকেছেন। উপরন্তু তিনি দেশমাতৃকার কল্যাণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৯৬ সালে। দুর্নীতি, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, সেনা কর্তৃত্ব ইত্যাদিতে জর্জরিত দেশটিতে স্বল্প দিনের মধ্যেই ইমরান খান ও পিটিআই জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হয় তার দল। ইমরান খান ক্রিকেট নায়ক থেকে দেশনায়ক তথা প্রধানমন্ত্রী হন। ইত্যবসরে তিনি দেশে বিশ্বখ্যাত ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার মায়ের মৃত্যুর কারণে ক্যান্সার আক্রান্তদের সুচিকিৎসার জন্য তিনি উক্ত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন নিজের অর্থে ও হিতাকাক্সক্ষীদের সহায়তায়। সেখানে এখন অসংখ্য ক্যান্সার রোগীর সুচিকিৎসা হচ্ছে। তারপরও তিনি মহারাজার হালে জীবন অতিবাহিত করতে পারতেন। কারণ,বিশ্বের এককালীন শীর্ষ ধনী গোল্ড স্মিথ’র মেয়ে জেমিমা স্মিথ ভালবেসে ‘গ্লামারবয়’ বলে খ্যাত ইমরান খানকে বিবাহ করেন ১৯৯৫ সালে এবং ইহুদী ধর্ম ত্যাগ করে পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু ইমরান খান ভোগ বিলাসে মত্ত না থেকে দেশের দুখী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন, যা জেমিমা মেনে নিতে পারেননি। অন্যদিকে, ইমরানও দেশমাতৃকার সেবা থেকে পিছপা হননি। ফলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। যা’হোক, ইমরান খান নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই প্রায় বলেন, তাঁর ‘নয়া পাকিস্তান’ মদিনা সনদের ভিত্তিতে চলবে। তিনি গরিব মানুষের জন্য হেলথ কার্ড চালু, করোনায় মহামারি সফলভাবে মোকাবেলা, গরিব মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা, বৈশ্বিক উঞ্চায়ন মোকাবেলায় এক কোটি বৃক্ষ রোপণ, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন।

দেশের পাশাপাশি মুসলিম জাতিরও কল্যাণে নিবেদিত হন ইমরান খান। স্বল্পদিনের মধ্যেই তিনি মজলুম মুসলিমদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হন। ফিলিস্তিনের পূর্ণ স্বাধীনতা এবং কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন বাতিলের বিরুদ্ধে তিনি সর্বাধিক সোচ্চার হন। ওআইসি ও জাতিসংঘে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ জানান। উপরন্তু তালেবানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের যুদ্ধ থেকে পাকিস্তানকে সরিয়ে নেন। ফলে আফগানিস্তানে আমেরিকা ও তার মিত্রদের ২০ বছরের দখলদারিত্ব খতম হয়। এতে আমেরিকা ক্ষিপ্ত হয় ইমরান খানের উপর। দেশটির ক্ষিপ্ততা আরো বেড়ে যায় পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায়। আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে পাততাড়ি গুটানোর পর পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইমরান খান তাতে সম্মতি দেননি। সর্বোপরি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দীর্ঘদিনের নির্ভরশীলতা শিথিল করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেন এবং চীন, রাশিয়া, ইরান, তুরস্ক ইত্যাদি দেশের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন। চীনের প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি)র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্প পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরকে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করবে। উপরন্তু এই করিডোর আফগানিস্তান হয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। ভারত ও আমেরিকা এই করিডোরের প্রচন্ড বিরোধী। তবুও উক্ত প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এছাড়া, ইরান, তুরস্ক ও পাকিস্তানের মধ্যে রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। ইরান-সৌদির যুদ্ধংদেহী অবস্থা থেকে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য ইমরান খান মধ্যস্থতা করেন। দেশ দু’টির মধ্যে কয়েকটি অপ্রকাশ্য বৈঠক হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ করার জন্য ওআইসি’র পক্ষে পাকিস্তান ১৫ মার্চকে ‘বিশ্ব ইসলাম ভীতি প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব করেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে, যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় গত ১৫ মার্চ। ফলে এখন থেকে ১৫ মার্চ ‘বিশ্ব ইসলাম ভীতি প্রতিরোধ দিবস’ পালিত হবে বিশ্বব্যাপী। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চ শহরের দু’মসজিদে উগ্রবাদী খ্রিস্টান বন্দুকধারীর হামলায় মুসল্লিদের মধ্যে ৫১ নিহত ও ৪০ জন আহত হন। তাই এ দিনটিকেই বিশ্ব ইসলাম ভীতি প্রতিরোধ দিবস হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। এছাড়া, গত বছর পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি হয়েছে একটি শক্তিশালী মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করার জন্য। ইরানের সাথে সুসম্পর্ক এবং কাশ্মীর বিষয়ে মালয়েশিয়ায় কয়েকটি মুসলিম দেশের বিশেষ বৈঠককে কেন্দ্র করে কিছু মুসলিম দেশ ইমরান খানের প্রতি নাখোশ হয়। তবুও ইমরান খান তার নীতিতে অবিচল থাকেন।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ব্যাপারে জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে পাকিস্তান সব সময় ভোটদান থেকে বিরত থাকে। এতেও পশ্চিমারা নাখোশ হয়। উপরন্তু তারা চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ইমরান খানের রাশিয়া সফর নিয়ে। ইউরোপের ২২টি দেশের কূটনীতিক তাকে রাশিয়া সফর থেকে বিরত রাখার আহ্বান জানায়। প্রত্যুত্তরে ইমরান খান বলেন, পশ্চিমারা পাকিস্তানকে দাস বানিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু তা সম্ভব নয়। উপরন্তু তিনি পূর্বনির্ধারিত সফরে যান রাশিয়ায়। মস্কো পৌঁছার পরও তাকে ফেরত আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালায়। তাতেও ব্যর্থ হয়। তাই পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তাতে সংশ্লিষ্ট হন পাকিস্তানেরই ক্ষমতালোভী কিছু রাজনীতিবিদ। তারা বিক্রি হন। ফলে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হন পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে তারা সফল হয়েছে উচ্চ আদালতের স্বপ্রণোদিত জুডিশিয়াল ক্যু’তে। নতুবা পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। সে মতে নতুন নির্বাচন হতো। দেশের চলতি সংকট সৃষ্টি হতো না। অবশ্য এরও আগে পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু সামরিক বাহিনীর সাথে ইমরান খানের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। ইমরান খান সামরিক বাহিনীতে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। সেনাবাহিনী তা পছন্দ করেনি। সেনাবাহিনী সর্বদা কর্তৃত্ব খাটাতে অভ্যস্ত। ইমরান খানকে তারা তিনটি অপশন দিয়েছিল। তা হলো, অনস্থা প্রস্তাব চলমান রাখা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া। এ তিনটি অপশনের মধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন সম্প্রতি। দেশটির সংবিধানের ৫৮(২)(বি)-তে বলা হয়েছে: ‘জাতীয় সংহতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করতে পারবে’। এটি সংযোজিত হয়েছে জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনামলে।

ইমরান খান প্রাণপণ চেষ্টা করার পরও ভঙ্গুর অর্থনীতি কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নতি হয়নি, যা সৃষ্টি হয়েছে আফগান যুদ্ধে আমেরিকার সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায়। উপরন্তু পণ্যমূল্যবৃদ্ধিও রোধ করতে পারেননি। তাই মানুষের মধ্যে অসন্তোষভাব ছিল। কিন্তু ইমরান খান পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের মতো দুর্নীতিতে কলঙ্কিত হননি। বরং তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তাই দেশবাসী ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতি মেনে নেয়নি। বিশেষ করে, যেভাবে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে, সেটা চায়নি দেশবাসী। তাই তারা ইমরান খানের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সেনাপ্রধান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের কথা বলছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র প্রাইস গত ১৯ এপ্রিল বলেন, শাহবাজ সরকারের সাথে ‘ঘনিষ্ঠভাবে কাজ’ করার জন্য উন্মুখ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের লালিত স্বপ্ন তথা পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের আকাক্সক্ষা অতঃপর পূরণ হতেও পারে। সেটা হওয়া তো দূরের কথা, উদ্যোগ গ্রহণ করার সাথে সাথেই দেশটিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। কারণ, পাকিস্তানিরা জীবন দেবে তবুও মার্কিন সামরিক ঘাঁটি করতে দেবে না। পাকিস্তানের মানুষ স্বভাবগতভাবে এন্টি আমেরিকান। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার লাখ লাখ মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে মার্কিন সেনাদের হাত। উপরন্তু দেশগুলো ধ্বংসও হয়েছে মার্কিন আক্রমণে। তাই পাকিস্তানিরা চরম মার্কিন বিরোধী। সেই সাথে মার্কিন দালালদেরও বিরোধী। তাদের মনের কথাই ইমরান খানের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে: পাকিস্তানকে কেউ দাস বানাতে পারবে না।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Sania Qamar ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১৭ এএম says : 0
· Once on 23rd March 1940 Quaid e Azam introduced the historical resolution for the formation of a nation-state as PAKISTAN and Now on 21st April 2022 Imran Khan will make history for the firmation of a SOVEREIGN STATE OF PAKISTAN with the support of all nation InshaAllah
Total Reply(0)
SA Malik ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১৭ এএম says : 0
We are standing our most respected and honest leader one& only Imran Khan you live in our hearts proud of you
Total Reply(0)
Ch Ameen Sidhu ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১৮ এএম says : 0
Great and honest leader Imran khaan Zindabad PTI Zindabad Pakistan Zindabad All PTI worker Zindabad
Total Reply(0)
Younus Aziz Khan ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১৮ এএম says : 0
Ik is an asset for Muslim ummah. We are proud of him. I pray for his long healthy life & overwhelming win in next election
Total Reply(0)
Anwar Ali Khan ২১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:১৯ এএম says : 0
Imran khan you are my role model,you are the best leader ,leading by example motivation for all ages .lots of prayers you are the only hope
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন