রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সূর্যমুখীর তেলে লুকিয়ে আছে রোগ নিরাময়

সৌন্দর্য উপভোগে দর্শনার্থীদের ভিড় প্রতিদিনই বাড়ছে

মাহবুবুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৮ এএম

এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত¡াবধানে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ হচ্ছে। বরেন্দ্র ভূমির ছোঁয়ায় হলুদের হাসিতে নতুন স্বপ্নের সম্ভাবনা দেখছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কৃষি অনুষদের গবেষক দল। এ দলে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কৃষি অনুষদের ডীন ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সূর্যমুখী ফুলের গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণার কাজে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে আমনুরা রোডের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রায় দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ। জমিতে সূর্যমুখী ফুলগুলো এমনভাবে ফুটেছে যে, দেখলে মনে হয় যেন হাসির মিলন মেলা বসেছে। এমন সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের আনাগোনা চলছে।
গবেষক দলের সদস্য মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মেহেদী হাসান সোহেল দৈনিক ইনকিলাবকে জানালেন, বিভিন্ন দেশ থেকে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ ভোজ্যতেল আমদানি করে সরকার। তেলের আমদানি কমাতে দেশের মাটিতে তেলবীজ উৎপাদনে সরকার জোর দিচ্ছে। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ বিশ্ববিদ্যালয়টির তত্ত¡াবধানে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখীর চাষাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন করা হবে। গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আরডিএস ২৭৫ (হাইব্রিড), ও বারি সূর্যমুখী-৩ (উচ্চ ফলনশীল) দুটো জাত জমিতে লাগানো হয়। প্রতি বিঘায় এক কেজি ২০০ গ্রাম বীজ বোপণ করলে ন্যূনতম ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ করা যাবে। সূর্যমুখী চাষ করতে বিশেষ কোন খরচ নেই। বিঘা প্রতি চার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করলে আশানুরূপ তৈলবীজ পাবেন চাষিরা।
সূর্যমুখীর তেলের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষকরা বলেন, অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান থাকে, সূর্যমুখীর তেলে তেমন নেই। সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে লিনোলিক এসিড যা স্বাস্থ্যের জন্যে খুব ভালো। তাছাড়া তেলে ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিড নেই। সূর্যমুখী তেলে মানবদেহের জন্য উপকারী ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৯ ফলিক এসিড আছে। সূর্যমুখীর তেল হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগীর জন্য সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ।
এদিকে জেলা সদরে সূর্যমুখী চাষাবাদের কথা শুনে দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই দেখার জন্য ভিড় জমান। এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া আলম ঐশী স্বামী জারিফ আর একমাত্র মেয়ে রোদসী হক অর্থীকে নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের সাথে ছবি তুলেন। এ সময় তিনি জানালেন, তার মেয়ে সূর্যমুখী ফুল খুব বেশি পছন্দ করে। মাঠজুড়ে এমন সূর্যমুখী ফুল তারা কখনো দেখেননি। স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতেই ছবি উঠানো।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন