ঈদুল ফিতর সামনে রেখে নীলফামারী সৈয়দপুরে অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। শতাধিক কারখানায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নিন্মমানের পাম অয়েল ও ডালডা দিয়ে এসব সেমাই তৈরি করছেন ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুরের পাটোয়ারীপাড়া, কাজীরহাট, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, মিস্ত্রিপাড়া, হাতিখানা, নিয়ামতপুর, মুন্সিপাড়া, গোলাহাটসহ শহরের আনাচকানাচে গড়ে উঠেছে এসব মৌসুমি সেমাই কারখানা। অধিকাংশ সেমাই তৈরির কারখানার নেই বিএসটিআই’র অনুমোদন। এ ছাড়া কারখানাগুলোয় মানা হচ্ছে না কোনো নিয়মনীতি। হাতে গোনা কয়েকটি সেমাই তৈরির বৈধ কারখানা থাকলেও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাপটে তারা পড়েছে বিপাকে ।
অবৈধ কারখানাগুলোয় কোনো সাইনবোর্ড নেই। কারখানার বাইরে থেকে ‘প্রবেশ নিষেধ’ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অথবা গেট বন্ধ করে চলে সেমাই তৈরির কাজ। এসব কারখানা এক স্থানে বেশি দিন থাকে না। সচেতনমহলের চোখ পড়ার আগেই স্থান পরিবর্তন করে। এসব সেমাইয়ের প্যাকেটে নামীদামি কোম্পানির লেবেল ও স্টিকার লাগিয়ে পাইকারি বিক্রি করা হয়। গোপন স্থানে কারখানা থাকায় প্রশাসনেরও নজরদারিতেও আসে না। ফলে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। গাউসিয়া বেকারির মালিক আওরঙ্গজেব বলেন,প্রতিবছর রমজান মাসের শুরুতে বিভিন্ন পাড়ামহল্লায় অল্প টাকায় বেশি লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসা শুরু করেন। তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্রও নেই। মাসখানেক ধরে এসব অবৈধ মৌসুমি কারখানায় সেমাই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
চিকিৎসক শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি সেমাই খেয়ে অনেক রোজাদার, সাধারণ মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। রং ও অন্যান্য রাসায়নিক মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। খাদ্যদ্রব্যে মেশানো রং মানুষের পেটে গেলে তা গ্যাস্ট্রিক, আলসার থেকে ক্যানসারের কারণ হতে পারে। জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামসুল আলম বলেন, পচা ডিম, প্রাণিজ চর্বি, কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধিমিশ্রিত সেমাই তৈরি যাতে না হয়, সে জন্য কারখানাগুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে এসব ভেজাল কারখানায় নিয়মিত অভিযান চালানো হবে এবং কোনো প্রকার অনিয়ম পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন