রহমত, বরকত, মাগফিরাতের সৌরভে সিক্ত পবিত্র রমজানের শেষ দশকে মুসলমানদের জন্য রয়েছে এক মেগা অফার। যে কোনো ঈমানদার মুসলিম এ সুযোগ গ্রহণ করে তার জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারেন। শেষ দশকে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের ইবাদাত অপেক্ষা উত্তম। আর তা হচ্ছে লাইলাতুল কদর। প্রতিটি মুসলিমের একান্ত আকাক্সক্ষা থাকে এ রাতের ফযিলত অর্জন করে নিষ্পাপ হওয়ার। সে কারণে অনেকেই মসজিদে ইতেকাফ করেন। কুরআন মাজীদের একাধিক আয়াত থেকে জানা যায়, কুরআন মাজীদ নাজিল হয়েছে রমজানুল মুবারকে এবং সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, লাইলাতুল কদরে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আমি তা (কুরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কী জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর (-এর ইবাদাত) হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিব্রাঈল আ.) এ রাতে অবতরণ করেন তাদের রব্বের অনুমোদনক্রমে সব ধরনের নির্দেশনা নিয়ে। ফজর উদিত হওয়া অবধি সেই রাত হয় শান্তির’।
আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে কিয়ামুল্লাইল করবে আল্লাহ তা‘আলা তার পূর্বকৃত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (সহীহুল বুখারী, আবূ হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত)
মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে বলেছেন। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ এবং ২৯ রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর হবে। তবে ২৭ রমজানের প্রতিই বিশেষ নজর রাখা হয় এবং সরকার এ রাতে ইবাদতের কারণে পরবর্তী দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে থাকে।
আমরা ইতোমধ্যে শবে কদরের প্রথম রাত অতিক্রম করে এসেছি। এ রাত পাবার জন্য মসজিদে মসজিদে ইতেকাফে সমবেত হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। পবিত্র হারাম শরীফে ৪ হাজারের বেশি মুসল্লি এবার ইতেকাফ করছেন বলে জানা গেছে।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত লাভের জন্য যেমন মসজিদে ইতেকাফ করা উত্তম, তেমনি পরিবার-পরিজন নিয়ে কিয়ামুল লাইল, কুরআন তেলাওয়াত, তসবীহ-তাহলীল, ওয়াজ নসীহতে সময়কে কাজে লাগানোও উচিত। তবে এ নিয়ে কোন বাগাড়ম্বর, প্রদর্শনী যেন না হয়ে যায় সেদিকে সবাইকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র তার সন্তুষ্টি ও ক্ষমা পাবার আশায় আমাদের ইবাদত করার তওফিক দান করুন এবং আমাদের ক্ষমা করে তার নেককার বান্দার অন্তর্ভুক্ত করে নিন। আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন