কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের স্রোত বন্দী পৌরবাসী। দীর্ঘদিন চলমান ড্রেন সংস্কারের কারণে উপজেলা সদরের চলাচলের মূল সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে বাড়ি ফেরা মানুষ ও হাট-বাজার-শপিং মলে যাতায়াতকারীদের পড়তে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনায়।
বিশেষ করে দেবিদ্বার পৌর এলাকার অন্যতম ব্যাস্ত সড়ক দেবিদ্বার কলেজ রোড, হাসপাতাল রোড, শান্তিরোডের অবস্থা খুবই নাজুক। খানাখন্দ বাসাবাড়ি, দোকানপাঠ, হাসপাতালের বর্জের দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। এমনকি উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের প্রধান ফটকের সামনের অবস্থা দেখলে মনে হয় এটাই পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং সেন্টার। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন ডাম্পিং সেন্টার তৈরী করা সম্ভব হয়নি। যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। দূর্গন্ধ আর খানাখন্দের মাঝে চলাচল করতে হচ্ছে হাজার হাজার স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং অফিস ও হাট-বাজারগামী লোকজনের।
পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২০ বছরের মধ্যে মামলা জটিলতা ও রাজনৈতিক নেতাদের সদইচ্ছার কারণে পৌর পিতার চেহারার দেখা মেলিনি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও অব্যবস্থায় জন-দূর্ভোগের মূর্তীমান পরিনত দেবিদ্বার পৌরসভা। গত ৭/৮ মাস ধরে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিউমার্কেট, উপজেলা প্রশাসনিক রোড, কলেজ রোড হয়ে ইকরানগরী ব্রীজ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫ শত গজ ড্রেন সংস্কার কাজ চলছে। কার্যাদেশে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও ২০ শতাংশ কাজ এখনো বাকি রয়েছে।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী এক প্রজ্ঞাপনে ২ কোটি ৯০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেইট থেকে ইকরানগরী ব্রীজ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫ শত গজ পাকা ড্রেন সংস্কার কাজ চলছে। ড্রেনের কোথাও কোথাও ৩ থেকে ৪ ফুট প্রশস্তকরনের কথা রয়েছে। কাজটি করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “মাম কনষ্টাকশন হাউজ ষ্টেট, কুমিল্লা। ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশের সময়সীমা ছিল ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২ইং থেকে চলতি বছরের ১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু এখনো ২০ শতাংশ কাজ অর্থাৎ ২ হাজার ৬/৭ শত গজ কাজ শেষ করলেও ৮/৯ শত গজ কাজ বাকি রয়েছে।
ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, ঠিকাদার দিনে ২ ঘন্টা কাজ করলেও বাকী সময়টা এভাবেই কাজ পড়ে থাকে। মাসের পর মাস পথচারী ও যাত্রী এমনকি আমরা যারা ব্যবসায়ী আছি তাদের দূর্ভোগের অন্ত থাকেনা। এ দূর্ভোগ- নির্বাচিত নগরপিতার অভাব, প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও সঠিক তদারকীর অভাবে হয়ে আসছে। সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক এবং ড্রেন একাকার হয়ে যায়।
তবে কবে নাগাদ এ দূর্ভোগ নিরসন হবে তা পৌর প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা কেউ বলতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পৌরবাসীর আবেদন, দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে নগর পিতা নির্বাচনসহ নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাসযোগ্য পৌর শহর নির্মানের দাবী নগরবাসীর।
এ বিষয়ে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সহসাই কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। উপরন্ত ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ছুটির কারণে কাজ বন্ধ থাকবে আরো ২০/২৫ দিন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলেও বৃষ্টিজনিত কারণে আরো ৫ মাস কাজের টাইম বাড়িয়েছেন। অতএব এ সময়টা পৌরবাসীকে ধৈর্যসহ একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন