রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করা ও ভিডিও করা সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে পিয়াংসুকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল তাদের আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, নির্মাণকাজে বাধা ও ঠিকাদারকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। তবে এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান বলেন, মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। ওই মাঠের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ করছিল পুলিশ। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন তিনি। এরপরই আটক করা হয় তাদের।
এলাকাবাসী জানান, মাঠে থানা নির্মাণের প্রতিবাদে জোরালো ভূমিকা নেওয়ার কারণে সৈয়দা রত্না ও পিয়াংসুকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শরিফ মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, স্থানীয় লোকজন ও শিশুদের এনে কাজে বাধা দেওয়ার কারণে দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কোনো অপরাধ পেলে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পান্থপথে কনকর্ড টাওয়ারের সামনে কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। কলাবাগান এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানিয়েছিল, কলাবাগান এলাকার খোলা একটি জায়গা তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিত। শিশুদের খেলাধুলার পাশাপাশি সেখানে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক আয়োজন হয়। স্থানীয় লোকজন জায়গাটি মাঠ হিসেবেই ব্যবহার করে আসছেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দা রত্না বলেছিলেন, মাঠটি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের কার্যালয়েও চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এলাকার সাংসদ আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু এখন শিশুদের যাতায়াতই বন্ধ হয়ে গেল। ঢাকা জেলা প্রশাসন ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট এক নোটিশে জানায়, ডিএমপির কলাবাগান থানার নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য এই সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই নোটিশে এই জমিকে পতিত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নোটিশ দেওয়ার পর থেকেই স্থানীয় লোকজন জায়গাটিকে মাঠ হিসেবেই রাখতে প্রতিবাদ করে আসছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েক শিশুর কান ধরে উঠবস করায় পুলিশ। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় শিশু আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন