কুতুবদিয়ায় চলমান বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঝাউবাগান ধ্বংস করে বালি আর মাটি দেয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধে। একই সাথে বেড়িবাঁধের নীচ থেকেই মাটি কাটা হচ্ছে। ফলে অল্প দিনেই বেড়িবাঁধ ধ্বসে যাওয়ার আশংকায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দেখভালের কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছেনা বিষয়টি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ কিলোমিটার সহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ভাঙণে আরো সাড়ে ৮ কি.মি. সংস্কার করা হচ্ছে। প্রায় ১২০ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজের বিভিন্ন সাইট, বিভাগ স্থানীয় কিছু উপ-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন। মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঈগল রীজ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কন্সট্রাক্শন (বিডি) লি.।
সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে মাটি দেয়ার কথা মূল বাঁধের ১০০ মিটার দূর থেকে। কিন্তু মাটি নেয়া হচ্ছে বাধের একেবারেই নীচ থেকে। এমনটি হচ্ছে আলী আকবর ডেইল বায়ুবিদ্যুৎ এলাকা, উত্তর ধুরুং এলাকায়। উত্তর ধুরুং সিকদার পাড়া, মিয়াজির পাড়াসহ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ রক্ষায় বন বিভাগের সৃজিত ঝাউবাগান কেটে মাটি আর বালি নেয়া হচ্ছে। কোন কোন বাগানের ঝাউগাছ ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল আলম জানান, ঝাউবাগানগুলো থাকায় তাদের গ্রাম সুরক্ষায় ছিল সমুদ্রের অস্বাভাবিক জোয়ারের ঢেউ থেকে। এখন পরিবেশ বান্ধব ঝাউগাছ ধ্বংস করে বেড়িবাঁধে মাটি ফেলায় তারা শংকায় দিন কাটান, কখন জোয়ারের পানি বাঁধ টপকে ঘরে ঢুকে যায়।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু জাফর ছিদ্দিকী বলেন, আলী আকবর ডেইল বায়ুবিদ্যুৎ এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাঁধ ঘেঁষে বালি উত্তোলন করে বেড়িবাঁধে দেয়ায় পুরো গ্রামসহ নির্মাণাধীন বাঁধও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি এলাকাবাসী প্রশাসনের নজরে দিলেও কোন প্রতিকার হয়নি।
স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, তারা প্রতিনিয়ত সৃজিত ঝাউবাগানের খোঁজ নিয়েছেন। উত্তর ধুরুং এলাকায় বাঁধ ঘেঁষে বিশাল পুকুর করে বেড়িবাঁধের জন্য মাটি নেয়ায় ঝাউবাগান বিনষ্ট হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে অবহিত করা হলেও কথা শোনেনি। বিষয়টি তিনি নির্বাহী অফিসারকেও জানিয়েছিলেন বলে জানান।
স্থানীয় পাউবোর উপ-সহকারি প্রকৌশলী এলটন চাকমা চলমান বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঝাউবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি দাবি করে বলেন, নিয়মিত বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। আবার কোন স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় ঝাউগাছ রোপন হয়েছে। সে এলাকায় বাঁধ নির্মাণে মাটি নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় সভাতেও আলোচনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন