রমজান শুধু একটি মাসের নাম নয়। একটি বড়ো ধরনের চিকিৎসার নাম হলো মাহে রমজান। আর এ চিকিৎসা মুমিনের জীবনে আগামী ১১ মাস পর্যন্ত চালু থাকার কথা। এ চিকিৎসা পরবর্তী রমজানের আগমন পর্যন্ত মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখার বড় উপাদান। আত্মশুদ্ধি ও আত্মোন্নয়নের শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান। পাশাপাশি আত্মসমালোচনার একটি অনন্য প্রশিক্ষণ হলো রমজান মাস। ভ্রাতৃত্বপূর্ণ একটি সুন্দর সমাজ গঠনের বড় উপাদান হলো রমজান মাস। মুসলিম বিশ্বের সকল মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয় এ রমজান। রমজানের মাধ্যমে ধনীরা গরিবের দুঃখ অনুধাবন করতে পারে। ফলে ধনীরা গরিবের পাশে এসে দাঁড়ায়। আর গরিবেরা ধনীদের প্রতি হয়ে ওঠে কৃতজ্ঞ। উভয়ের মাঝে সৃষ্টি হয় উষ্ণ প্রীতি ও বন্ধন। সমাজ সুখি, সুন্দর ও শান্তিময় হয়ে ওঠে। রমজান রোজাদারকে সুশৃংখল জীবনের প্রশিক্ষণ দেয়। রমজানের রোজা সংযম ও আত্মশুদ্ধির পথ নির্দেশ করে। ফলে সমাজে সহিষ্ণুতা ও ধৈর্য্যরে বিকাশ ঘটে। গোটা মুসলিম সমাজ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজে রূপ নেয়। বলা হয়ে থাকে, রমজান মাস হলো রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস। প্রশ্ন জাগে, রমজানের পরে অন্য ১১ মাসে কি আল্লাহর রহমত, বরকত, মাগফিরাত এবং নাজাত অবশিষ্ট থাকে না? উত্তরে বলা যায়, তিনি রমজানের মালিক, তিনি অসীম দয়ালু ও করুণাময়। তিনি শুধুমাত্র রমজানের জন্যই রাহমানুর রাহিম নন। বাকি ১১ মাসের জন্যও তিনি রহমানই থাকেন। সুতরাং বান্দার উচিত রমজানে গড়ে ওঠা ভালো অভ্যাসগুলো রমজানের পরেও চালু রাখা। কেননা আল-কোরআনে এরশাদ হচ্ছে, ‘মৃত্যুর আগমন তোমার জন্য অবধারিত। চূড়ান্ত সেই সময় আসা পর্যন্ত তুমি তোমার প্রভুর ইবাদতে মগ্ন থাকো।’ (সূরা হিজর: ৯৯)।
সুতরাং যে দায়িত্ব ও অনুভূতি নিয়ে রোজার মাসে রোজাদারগণ ভালো কাজে অভ্যস্থ ছিলেন, সেটা যেন রোজার পরেও অব্যাহত থাকে। খেয়াল রাখা দরকার, ভালো কাজের এ অভ্যাস যেনো বন্ধ না হয়। মুমিন বান্দারা রোজার মাধ্যমে কতগুলো হালাল কার্যাদি থেকে দূরে থাকার অভ্যাস অর্জন করেছে, যা সবর বা ধৈর্য্যরেই নামান্তর। এই সবর, ত্যাগ এবং সংযম হচ্ছে মুমিনের সম্বল। মুমিন বান্দারা ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে ইবাদত-বন্দেগী চালিয়ে যায়। মুমিনদের উচিত পরবর্তী মাসে তাদের এই ত্যাগ স্বীকারের অভ্যাস চালু রাখা। নিয়মিত নামায, ভালো কাজে সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদান, সাদকা প্রদান, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখা ইত্যাদি রমজান মাসের পরেও অব্যাহত রাখা উচিত। তাহলে রমজান মাস চলে গেলেও একজন বান্দা আল্লাহ তা‘আলার রহমত, বরকত ও মাগফেরাত পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে না। ভালো অভ্যাস চালু রাখা জান্নাতের পথকে সুগম করে দেয়। আল্লাহ তা›আলা বলেন, ‘তোমাদের অবস্থা যেনো সেই মহিলার মত না হয়, যে নিজ পরিশ্রমে সুতা কাটে, আবার নিজেই তা ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে।’ (সূরা নাহল: ৩২)।
পৃথিবীটা বৈচিত্র্যময়। এর মানুষগুলোও বৈচিত্র কাজে ব্যস্ত থাকে সর্বক্ষণ। কর্মব্যস্ত মানুষগুলোর ক্লান্তি দূর করতে প্রয়োজন হয় উৎসব-আনন্দের। মানুষ সামাজিক জীব হওয়ার কারণে ব্যস্ত থাকে নানা সামাজিকতায়। আত্মীয়তার বন্ধন এ সামাজিকতার গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। কিন্তু অনেক সময় মানুষের এ বন্ধন ব্যস্ততার কারণে শীতল হয়ে পড়ে। শীতল হয়ে পড়া বন্ধন প্রাণবন্ত করতে মানুষের প্রয়োজন একটি মিলনমেলা। একটি মিলনমেলা একঘেয়েমি জীবনের সমাপ্তি ঘটায়। এ মেলা সীমিত গণ্ডি থেকে মানুষকে বের করে আনে। নিরুদ্যম জীবনে মিলন মেলা কর্মস্পৃহা ও প্রেরণা যোগাতে সাহায্য করে। তাই বিশ্বজুড়ে সকল জাতির মাঝে রয়েছে নানা মিলনমেলা। এসব মিলনমেলা জাতীয় ঐক্য ও চেতনা সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। জাতীয় সংহতি ও ভ্রাতৃত্ব তৈরিতে মিলন মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহানবী (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন তখন মদিনাতে দুইটি উৎসব প্রচলিত ছিল। একটির নাম হলো ‘নওরোজ’ আর অপরটির নাম ‘মেহেরজান’। নওরোজ উৎসবটি উদযাপিত হতো শরতের পূর্ণিমায়। আর মেহেরজান উদযাপিত হতো বসন্তের পূর্ণিমায়। নবীজি (সা.) এই দুই উৎসবের বিপরীতে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহাকে মুসলিমদের জন্য উৎসবের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেন। (মুসনাদে আহমাদ: ১৩০৫৮)। দ্বিতীয় হিজরী ৬২৪ সনে তিনি (সা.) মুসলিম জাতির জন্য এ উৎসব নির্ধারণ করে দেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘সব জাতির জন্যই ঈদ আয়োজন থাকে, আর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা হচ্ছে আমাদের উৎসব।’ (বুখারী: ৩৯৩১)। মুসলিমদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ হলো ঈদুল ফিতর। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস শেষ হওয়ার পরের দিনই এটি উদযাপিত হয়। যারা মাহে রমজানকে যথাযথ কাজে লাগিয়েছে, ঈদুল ফিতর তাদের জন্য প্রকৃতপক্ষে শান্তির বার্তা নিয়ে আসে। ঈদের আনন্দটি মূলত তাদের জন্যই প্রকৃত খুশি বয়ে আনে। কেবল তাদের মন থেকেই ঈদ মনের কালিমা দূর করে দেয়। দূর করে দেয় মানবজাতির মধ্যে জমে থাকা সকল ভেদাভেদ। এ ঈদ মুছে দেয় একে অপরের মন থেকে সকল দুঃখ-অভিমান। তারাই পারে একে অপরের হাতে হাত মিলাতে। তারাই পারে গরীবের বুকের সাথে বুক মেলাতে। তারা পারে সকলের সাথে দেহ এবং মনকে উজাড় করে আনন্দ উপভোগ করতে। এ মিলনের মাধ্যমে মুসলিম জাতি হয়ে যায় কলুষমুক্ত। সকলের দেহ এবং মন কলুষমুক্ত হওয়ার আনন্দই হলো আসল আনন্দ। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাদের মন থেকে দূর হয়ে যায় হিংসা ও বিদ্বেষ। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাদের মন থেকে দূর হয়ে যায় অহংকার, অহমিকা, ক্রোধ, ঘৃণা, আত্মম্ভরিতা ও আত্মশ্লাঘা। যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি থেকে তাদের মন হয়ে যায় পবিত্র। এর মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হয় আধ্যাত্বিকতা। মনের গহীনে সৃষ্টি হয় নির্মল আনন্দ। আর এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয় সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, সংহতি ও সৌহার্দের বন্ধন। আর এটাই হলো ইদুল ফিতরের সবচেয়ে বড় উপহার। হাদিসের দৃষ্টিতে রমজান মাসে রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের সময় থাকে। তার মধ্যে একটি হলো, রোজাদার যখন সারাদিন রোজা শেষে ইফতার করে। আর দ্বিতীয়টি হলো, যখন সে আল্লাহর সাক্ষাতের জন্য নামাজে দাঁড়ায়। রোজাদার প্রতিদিন রোজা রাখে এবং প্রতিদিন ইফতার করে। এটা হলো তার জন্য একটি ছোট আনন্দ। ফিতর শব্দটি থেকে ইফতার শব্দটির উৎপত্তি। যার শাব্দিক অর্থ হলো, রোজা পূরণ করার পর ভেঙ্গে দেয়া বা ইফতার করা। অর্থাৎ রোজা ভঙ্গ করে আহার গ্রহণ করা। ঠিক একই অর্থে রোজাদার পূর্ণ এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মিষ্টিমুখ করার মাধ্যমে সে পূর্ণ এক বছরের জন্য বড়ো ইফতার গ্রহণ করে। এটা রোজাদারের জন্য পূর্ণ একবছরের ইফতার হিসেবে গণ্য। তাই ঈদুল ফিতরের আনন্দ রোজাদারদের জন্য নির্মল ও শ্রেষ্ঠ আনন্দ হিসেবে পরিগণিত। ঈদুল ফিতরের প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠা, মেসওয়াক করা, অজু গোসল শেষ করে মসজিদে যাওয়া, ফজরের নামাজ আদায় করা, মসজিদ থেকে ফিরে এসে মিষ্টিমুখ করা, সাধ্য অনুযায়ী পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি মাখানো, সাদাকাতুল ফিতর প্রদান করা, কিছু খেজুর খাওয়া, অতঃপর ঈদের নামাজের জন্য ঈদগাহে যাওয়া, তাকবীর পাঠ করা, এক পথে ঈদগাহে যাওয়া, অন্য পথে ফেরা, নির্মল ও স্বচ্ছ আনন্দ-ফুর্তি উদযাপন করা ইত্যাদি এসবই ঈদুল ফিতর উদযাপনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
মূলত ‘ঈদ’ শব্দটি আরবি ‘আওদ’ থেকে উদ্ভূত। শব্দটির অর্থ হলো ফিরে আসা, ঘুরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা ইত্যাদি। আরবিতে বিশেষ দিন বা উৎসবকে ঈদ বলা হয়। আর ফিতর শব্দের অর্থ রোজা ভাঙ্গা বা ইফতার করা। পুরো রমজানে প্রতিবছর একজন রোজাদার প্রতিদিন সন্ধ্যায় রোজা ভাঙ্গে; ইফতার করে। এটা হলো তার জন্য একটি দিনের জন্য ইফতার। আর ইফতারের সময় মানেই হলো আনন্দের সময়। আর রমজান মাস পরে শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে ইফতার করা মানে হলো পুরো একমাস পরে ইফতার করা। রমজানের রোজা রাখার পরে একজন মুসলিম নিষ্পাপ হতে পারে। ক্ষমাপ্রাপ্তির মাধ্যমে সে আনন্দিত হতে পারে। এ আনন্দ একজন মুমিন বান্দার জন্য পৃথিবীর সেরা আনন্দ হিসেবে বিবেচিত। ফলে একজন মুমিন বান্দা এদিনে আনন্দ প্রকাশ করবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং এটা মুসলিমের জন্য একটি পুরস্কারের দিনও বটে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ফেরেশতাগণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, হে মুসলমানগন! তোমরা দয়ালু আল্লাহর দিকে এগিয়ে এসো! উত্তম প্রতিদান এবং পুণ্য লাভের আশায় এগিয়ে এসো! তোমাদের রাতের বেলা নামাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তোমরা সেটা পালন করেছো। তোমাদেরকে দিনের বেলায় রোজা রাখতে বলা হয়েছিল, তোমরা সে নির্দেশও পালন করেছো। তোমরা দরিদ্রকে আহার করানোর মাধ্যমে আল্লাহকে আহার করিয়েছো। আর এখন নামাজ পড়ার মাধ্যমে এসব পুণ্য কর্মের প্রতিদান ও পুরস্কার গ্রহণ করো!’ ঈদের নামাজ শেষ হলে একজন ঘোষণাকারী ফেরেশতা ঘোষণা করেন, শোনো হে নামায আদায়কারীগন! তোমাদেরকে মহান আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। সুতরাং নিষ্পাপ অবস্থায় নিজ গৃহে ফিরে যাও। আজ পুরস্কার গ্রহণের দিন। আকাশে এই দিনের নামকরণ করা হয়েছে ‹পুরস্কারের দিন› হিসেবে’। (তাবারানী: ৬১৭- ৬১৮)। এদিনে আনন্দের আর একটি অনুষঙ্গ হলো সাদাকাতুল ফিতর। উল্লেখিত ক্ষমাপ্রাপ্তির খুশিতে একজন রোজাদার দান করতে উৎসাহী হয়ে ওঠে। রমজানে কৃত ত্রুটি মোচন ও সার্বজনীন আনন্দ প্রকাশ করতে মুমিনগণ সাদাকাতুল ফিতর প্রদান করে থাকে। রমজানে বেহুদা ও অশ্লীল কথাবার্তার কারণে রোজা ত্রুটিযুক্ত হয়ে যেতে পারে। এ ত্রুটি দূর ও সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করতে সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব করা হয়েছে। (আবু দাউদ: ১৬০৯)। এ দিনে মুসলিমগণ একে অপরের খোঁজ-খবর নিয়ে থাকে। সারা বছরে যোগাযোগ না হলেও অন্তত এ উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনের সাথে এক অপরের দেখা-সাক্ষাৎ হয়। ফলে আত্মীয়তার বন্ধনটা নতুন করে সুদৃঢ় হয়। যেটা ইসলামী শরীয়াতের অন্যতম ফরজ কাজ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আত্মীয়তা ছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করবে না’। (বুখারী: ৫৯৮৪)।
উৎসবের দিনে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও ইসলাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘ঈদে আবু বকর (রা.) আমার ঘরে এলেন। তখন আমার ঘরে দুইটি মেয়ে বুআস যুদ্ধের গান পরিবেশন করছিল। আবু বকর (রা.) মেয়ে দুটিকে থামিয়ে দিলেন। তিনি ধমক দিয়ে তাদেরকে বললেন, শয়তানি বাদ্য পরিবেশন করছো! তাও আবার নবীজির ঘরে! একথা শুনে নবীজি (সা.) বললেন, হে আবু বকর! ওদের থামাইও না! প্রতিটি জাতিরই ঈদ-উৎসব থাকে। আর আমাদের উৎসব হচ্ছে আজ।’ (বুখারী: ৯৫২)। আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘কোনো এক ঈদের দিনে দুজন কৃষ্ণাঙ্গ ঢাল এবং বর্শা দিয়ে খেলছিল। নবীজি (সা.) আমাকে বললেন, তুমি কি খেলা দেখতে চাও? উত্তরে আমি বললাম হাঁ। তখন নবীজি আমাকে তাঁর পেছনে দাঁড় করালেন। আমি নবীজির কাঁধে চেহারা রেখে খেলা দেখতে লাগলাম। নবীজি কোনো একটি পক্ষকে হুঁশিয়ার বা সাবধান করলেন।’ (বুখারী: ৯৫০)। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর মুমিনের জীবনে ফিরে আসে এক অনাবিল বিনোদন। নির্মল আনন্দ আর প্রশান্তি বয়ে আসে মুসলিমের ঘরে ঘরে। আত্মীয়তার বন্ধন নতুন উদ্যোমে ফিরে পায় তার অস্তিত্ব। ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব ভেসে ওঠে সৌহার্দের জোয়ারে। ভালোবাসার লাল আভায় রঙিন হয়ে ওঠে কয়টি দিন। প্রাণশক্তির জোয়ারে সিক্ত হয়ে ওঠে অবসাদ-ক্লিষ্ট মুমিনের জীবন। নিত্যদিনের মাঝে ফিরে আসে প্রেরণা ও কর্মচাঞ্চল্য। রোজা বিদায়ের সাথে সাথে মুসলিম দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় রোজার সকল আয়োজন। ইফতার, সেহরি, তারাবি-সব প্রস্তুতিশূন্য হয়ে পড়ে মুসলমানদের ঘরগুলো। মসজিদ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার থেকে মুছে যায় রোজার আমেজ। ইমাম, মুআজ্জিন, মুসল্লি-সবার মধ্য থেকে বিদায় নেয় রোজার সকল আবহ। খাঁটি রোজাদারদের হৃদয় কোণে তাই বেদনার্ত। তথাপিও বিদায়ী সালাম জানাতে প্রস্তুত পুরো মুসলিম জাহান। প্রতিবছর মুসলিমদের ঘরে ঘরে রোজার আগমন ঘটে। আর একইভাবে রমজানের বিদায় ঘটে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলি:
যাবার বেলায় সালাম লও হে পাক রমজান,
তব বিদায় ব্যথায় কাঁদিছে নিখিল মুসলিম জাহান।
লেখক: কলামিস্ট ও অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
Email: dr.knzaman@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন