কুড়িগ্রামে হঠাৎ করে পাম্পগুলোতে পেট্রল সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পরেছে ক্রেতারা। কিছু কিছু পাম্পে রেসনিংভাবে বিক্রি করা হলেও উত্তরের উপজেলাগুলোতে বন্ধ হয়ে গেছে পেট্রল ও অকটেন বিক্রি। বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে চাহিদামতো যোগান না পাওয়ায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পেট্রল পাম্প মালিক সমিতি। এদিকে পাম্পগুলোতে পেট্রল পাওয়া না গেলেও খোলা বাজারে প্রায় দেড়গুণ মূল্যে পেট্রল বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুড়িগ্রাম জেলার সহকারি পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলা পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী জেলায় প্রায় ২৫টির মতো পেট্রল পাম্প রয়েছে। পদ্মা. মেঘনা ও যমুনা থেকে এসব পাম্পে তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু ঈদের আগে বাঘাবাড়ি থেকে পাম্পগুলোতে চাহিদামতো পেট্রল সরবরাহ না করায় বিপাকে পরেছে পেট্রল পাম্প মালিক ও ক্রেতারা। এই অচলাবস্থার সময় রেলওয়ের মাধ্যমে যে তেল আসত তাও বন্ধ হওয়ায় জেলা জুড়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলার উত্তরা ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত দুই মাস ধরে রংপুর, পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে আমরা আমাদের চাহিদামত যোগান পাচ্ছি না। ঈদের পরে সেখানেও মজুদ ঘাটতি। ফলে যোগান না পাওয়ায় আমাদের ফিলিং স্টেশন মজুদ শুন্য হয়েছে। কবে নাগাদ স¦াভাবিক হবে তাও আমাদের জানা নেই।
এদিকে জরুরী কাজে যারা বের হওয়া মানুষ বা চাকরীজীবীরা বিভিন্ন পাম্পে গিয়ে হয়রাণি হয়ে মটর সাইকেল নিয়ে আবার ফিরে আসছেন। নাগেশ^রীর ব্যাংক কর্মকর্তা চন্দন গুহ জানান, আমি কয়েকটি পেট্রল পাম্পে গিয়ে পেট্রল বা অকটেনের খোঁজ করে না পেয়ে ফিরে এসেছি। এখন খোলা বাজার থেকে আমাকে পেট্রল নিতে হবে। এতে গাড়ীর ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান জানান, পাম্পগুলোতে ঘুরে পেট্রল না পেয়ে খোলা বাজারে ১৪০ টাকা দামে ২ লিটার অকটেন কিনেছি। বিষয়গুলো স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী করা উচিৎ। অপরদিকে নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড় এলাকার রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার বাজারে পেট্রল কিনতে গিয়ে হতবাক হই। ১ লিটার পেট্রল দোকানদার ১৫০ টাকা চাচ্ছেন।
সুবলপাড় এলাকার খোলা বাজারের পেট্রল বিক্রেতা আব্দুল মালেক ও আবুল হোসেন জানান, পেট্রল’র সরবরাহ না থাকায় মহাজনদের কাছ থেকে আমরা ১৩০টাকা দরে পেট্রল কিনছি। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে ১৪০ থেকে ১৫০টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের পেট্রল পাম্প মালিক সমিতিরি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, আমরা বাঘাবাড়িতে তেলের লড়ি পাঠিয়ে বসে আছি। সেখানে তেলের যে জাহাজ আসে সেটা এখনো ভেড়ে নি। তাছাড়া রেল পথে যে তেল আসত সেটাও বন্ধ রয়েছে। ফলে কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে সেটাও বলতে পারছি না।
জেলা প্রশাসনের ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখার সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল দিও জানান, কুড়িগ্রামে ২৬টি পেট্রল পাম্পের মধ্যে একটি বন্ধ হওয়ায় এখন ২৫টি রয়েছে। ঈদের সময় অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে যে সাময়িক সমস্যা দেখা দিয়েছে তা অচিরেই কেটে যাবে। এখন রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলে সেচ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা এখনো সর্বশেষ তথ্যগুলো হাতে পাইনি। পেলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন