রাজশাহী ব্যুরো : মোবাইল চুরির অভিযোগে রাজশাহীর পবা উপজেলায় জাহিদ হাসান (১৫) ও ইমন আলী (১৩) নামে দুই কিশোরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটানো ও সেই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করার মামলায় আজিজুল ইসলাম (৪৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পবা থানা পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে পবার চৌবাড়িয়া এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে রাকিবের একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ওই ফোন চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে প্রথমে ইমনকে ধরে নিয়ে যায় ফজলুর লোকজন। এর পর বিকেল ৩টার দিকে নানার বাড়ি বিরস্তইল গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার সময় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহিদ হাসানকে।
এর পর ফজলু তার বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে দুই শিশুকে ধরে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। সঙ্গে ছিলো পলাশ, নাসির উদ্দিন, জামাল, রাজ্জাক, অনিক ও তুহিনসহ কমপক্ষে ১০/১২ জন। তাদের মধ্যে একজন মোবাইল ফোনে ওই নির্যাতনের দৃশ্য ধারণ করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে বিছানায় ফেলে হাত রশি দিয়ে বেঁধে জাহিদকে নির্যাতন করা হয়। আর ইমনকে বসিয়ে রেখে মারা হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাদের ওপর চলে নির্যাতন। পরে দুই শিশু মোবাইল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইমন বাড়ি ছেড়ে রাতেই পালিয়ে যায়। আর জাহিদকে তার পরিবারের লোকজন পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে।
আহত জাহিদ হাসান জানায়, তাকে নির্যাতনকারীদের মধ্যে নাসির উদ্দিন একটি বাহিনীতে কর্মরত। তিনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছে। তিনিও এক পর্যায়ে জাহিদকে মারপিটকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়। নির্যাতনের ওই দৃশ্যে নাসিরকেও দেখা গেছে। সে হাতে লাঠি নিয়ে দুই শিশুকেই বেদম প্রহার করছে। জাহিদের বাবা ইমরান অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে নির্যাতনকারীরা হুমকি দিচ্ছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলায় দুই কিশোরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটানো ও সেই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করার মামলায় আজিজুল ইসলাম (৪৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পবা থানা পুলিশ। গতকাল রোববার সকালে রাজশাহীর পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। গ্রেফতার আজিজুল চৌবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ বারিকের ছেলে। শনিবার রাতে আহত জাহিদের বাবা ইমরান বাদী হয়ে এ ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন