অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে চীন বাংলাদেশকে সকল ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে ডবিউটিও রুলস অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে চীনে ৯৭ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, এই ঘাটতি কমাতে এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ চীনের বাজারে সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সম্মেলন কক্ষে চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিআইটি)-এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে সংগঠনটির সভাপতি এই দাবি জানান। এ সময় ব্যবসায়ীদের জন্য চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচ বছরের মাল্টিপল ভিসা চালুর দাবিও করা হয়।
সংলাপে এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করা, ঢাকা থেকে চীনের বিভিন্ন প্রাদেশিক শহরে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা করা এবং চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সিসিপিআইটি প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান।
চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, চামড়া, ওষুধ, সিরামিক, প্লাস্টিক, ফার্নিচার, হালকা প্রকৌশল, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, পল্ট্রি, বস্ত্র, পাট ও পাটজাত দ্রব্যে বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। সংলাপে বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যবসায়ী সিসিপিআইটি প্রতিনিধিদের কাছে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে কারিগরি সহায়তা চান। পাশাপাশি চীনে আলু ও তরমুজ রফতানির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিসিপিআইটি প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে চীনে আলু ও তরমুজ রফতানি করা সম্ভব। তবে তা সঠিক উপায়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ হতে হবে। কারণ আলু ও তরমুজ রফতানির সময় তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঐতিহাসিক সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকগুলো ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে। ফলে দেশটির সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত হয়েছে। এ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে সত্যিকারের ব্যবসায়ীদের ৫ বছর মেয়াদী মাল্টিপল ভিসা দেয়া প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে এদেশে বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছে। চামড়া, ফার্মাসিটিউক্যাল, সিরামিক, প্লাস্টিক, কৃষি, টেক্সটাইল এবং ফিশারিজসহ বেশ কয়েকটি খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব খাতে চীনকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
সিসিপিআইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লি লি এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- লি কি, ওয়ান মাওচুয়ান, ওয়ান কিয়াং, ইয়াং লিন প্রমুখ। এ ছাড়া এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন