ঝিনাইদহের মহেশপুর শহরের কলেজ বাসষ্ট্যান্ডে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মহেশপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদ খনন করতে গিয়ে একাধিক মানুষের মাথার খুলি ও শরীরের হাড় উঠে আসে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নদের তীরে দেহবাশেষ পাওয়ার খবরে মানুষ দলে দলে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ভিড় করছেন।
স্থানীয়রা জানায়, কপোতাক্ষ নদ খননের সময় মহেশপুর সরকারী কলেজ বাসষ্ট্যান্ডের পাশে ব্রিজের নিচ থেকে মানুষের মাথার খুলি ও হাড় দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা খুলি ও হাড়গুলো গুছিয়ে রাখে সেখানে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, নদী খনন করার সময় ভেকুর মাথায় এগুলো উঠে আসে। বৃষ্টির পর মাথার খুলিগুলো বের হয়ে আসলে এলাকার যুবকরা গোসল করতে গিয়ে হাড় ও খুলিগুলো গুছিয়ে রাখেন। রবিবার দুপুরে পর্যন্ত ওই অবস্থায় মানুষের মাথার খুলিগুলো পড়ে ছিল। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বর্তমান সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি কামালুজ্জামান বলেন, মহেশপুরে একাধিক গনকবর আছে। আমরা সেগুলো সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে বলেছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মহেশপুরের খালিশপুরে ১৮ পাঞ্জাব ব্যটলিয়নের ক্যাম্প ছিল। তারা মহেশপুরের ভালাইপুর, হাসপাতালের পেছনে ও কলেজ মোড়ে কাঠের ব্রীজের নিচে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ধরে এনে হত্যা করতো। পরে তাদের গণকবর দিত। এটি সেই গণকবর। তিনি বলেন, মহেশপুর ডাকবাংলোতে রাজাকাররা থাকতো। ডাকবাংলোর পাশেই রয়েছে কপোতাক্ষ নদ ও কাঠের ব্রীজ। এই গণকবর সেখানেই আবিস্কার হয়েছে। এতে সন্দেহাতীত ভাবেই বলা যায়, পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকারদের হত্যাযজ্ঞের শিকার এসব সাধারণ মানুষ। তিনি দ্রুত এখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে গণকবরগুলো সংরক্ষণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে মাথার খুলি ও হাড় দেখেছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের চিহ্ন। সরকারিভাবে আমরা এটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন