শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

টেকসই অর্থনীতির জন্য দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন অপরিহার্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২২, ৬:০৪ পিএম

প্রাকৃতিক দূযোর্গ যেকোন দেশের সর্বস্তরের জনগনের পাশাপাশি বেসরকারীখাতের উৎপাদন, সাপ্লাইচেইন ও সরবরাহ থেকে শুরু করে সার্বিক বিপনন ব্যবস্থাকে মারাতœকভাবে ব্যাহত করে, এমতাবস্তায় যেকোন দূর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় দক্ষতা অর্জনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখতের সম্পৃক্তকরণ একান্ত অপরিহার্য বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার আয়োজিত জাতীয় সিম্পোজিয়ামের আলোচকবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং সুপার প্রজক্টে কনসোরটিয়াম যৌথভাবে আয়োজিত “দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ” শীর্ষক জাতীয় সিম্পোজিয়াম এবং “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার”-এর উদ্বোধন অদ্য ১৭ মে, ২০২২ তারিখে সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেন এল ডেনেইগা এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়াম এইড (ইকো), বাংলাদেশ-এর প্রধান অ্যানা অরল্যানডিনি সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব খুবই বেশি। এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের বেসরকারিখাতকে কার্যকর ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সহায়তায় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ১ম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ঢাকা চেম্বার “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার” স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে দেশের বেসরকারিখাতের পাশাপাশি অন্যান্যরা দূর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। এছাড়াও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার আরো বাড়ানোর আহŸান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি বলেন, দেশি-বিনিয়োগ আরো নিরাপদ ও উৎসাহিতকরণে দূর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের দক্ষতা অর্জন খুবই জরুরী, এছাড়া এক্ষেত্রে সরকার ও বেসরকারিখাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি, দেশের বেসরকারিখাতের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকা চেম্বারের সহায়তা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার” স্থাপন করা হয়েছে, যেটি আমাদের বেসরকারিখাতের দক্ষতা আরো সমৃদ্ধ করবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে তাঁর মন্ত্রণালয় ‘স্টেট অফ দি আর্থ ন্যাশনাল ইমাজেন্সী অপরাশেন সেন্টার’ স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে ঝুঁকি মোকাবেলায় ডাটাবেইজ প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় সহযোগীতা প্রদান করা হবে। তিনি এ কার্যক্রমে তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্তকরণের উপর জোরারোপ করেন এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সকলকে একযোগে কাজ করার আহŸান জানান।

ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেন এল ডেনেইগা জানান, ঝুঁকি মোকাবেলায় তাঁর দেশ জাতীয় বাজেটের প্রায় ৫% বরাদ্দ দিয়ে থাকে এবং ২০১৮ সালে সারা পৃথিবীতে ১ম বারের মত ফিলিপাইন “প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সী অপরাশেন সেন্টার” স্থাপন করেছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা অর্জনে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিবৃন্দের যৌথ উদ্যেগ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং এক্ষেত্রে তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্তকরণেরও দাবী জানান।

ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়াম এইড (ইকো), বাংলাদেশ-এর প্রধান এ্যানা অরল্যানডিনি বলেন, টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিতকল্পে দূর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রতিটি দেশকেই তাদের নিজস্ব কাঠামোর সাথে বেসরকারিখাতের সম্পৃক্তকরণ খুবই অপরিহার্য।

এ্যাকশনএইড-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, বেসরকারিখাতের স্বার্থে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা সম্প্রসারণে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্ত অপরিহার্য, যা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে আরো টেকসই করতে ভূমিকা রাখবে।

এছাড়াও সিম্পোয়িামে ‘রিস্ক ফাইন্যান্সিং স্ট্রাটেজি’, ‘দূর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার’ এবং ‘পিইওসি-এর কার্যকরে বেসরকারিখাতের ভ‚মিকা’ শীর্ষক ৩টি প্যারালাল সেশনের আলোচনায় সরকার ও বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ দূর্যোগ খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচকবৃন্দ বেসরকারিখাতের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনীতির সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ডাটাবেইজ প্রণয়ন, গবেষণা পরিচালনা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ, বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণে সহজশর্তে টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিতকরন এবং নীতি সহায়তা প্রদানের উপর জোরারোপ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন