বরিশাল মহানগরীর পেঁয়াজ পট্টির কতিপয় বিবেকহীন ব্যবসায়ীর অসত কর্মকান্ডে জেল খাল ও সংলগ্ন কির্তনখোলা নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এতেকরে খালসহ কির্তনখোলা নদীর একটি বড় অংশের মাছের জীবন পর্যন্ত বিপন্ন। গত কিছুদিন ধরে কতিপয় অসত ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর আশায় ধরে রাখা গত বছরের রসুন বিক্রি করতে না পেরে অবাধে পেঁয়াজ পট্টি সংলগ্ন জেল খালে ফেলে দিচ্ছে।
ফলে এসব পঁচা গলা রসুনের দূষিত বাস্পে জেল খালের পানি আরো দূষিত হয়ে পড়ছে। বস্তা বস্তা রসুনের দূষিত বাস্পে এখালে আর কির্তনখোলা নদী থেকে কোন মাছ প্রবেশ দুরের কথা, ভাটার সময় খালের দূষিত পানি কির্তনখোলা নদীতে প্রবাহিত হয়ে সেখানের মাছের জীবনও বিপন্ন। জেলখালে যে সামান্য মাছের বিচরন ছিল, ইতোমধ্যে সেখানেও মড়ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
শুধু পঁচা রসুনই নয় জেলখালের পোর্ট রোড ব্রিজের পাশের ফলের আড়তগুলো থেকে গত কয়েকদিন ধরে পঁচাগলা তরমুজ অবাধে খালে ফেলা হচ্ছে। ফলে নগরীর অন্যতম বৃহত জেলখালের দূষিত পানি ইতোমধ্যে এ নগরীর সুস্থ নাগরিক জীবনের জন্য ক্রমশ হুমকি হয়ে উঠেছে। খালটির উত্তর পাড়ের বেশ কিছু পেয়াঁজ রসুন, মরিচ ও আলুর পাইকারী আড়তের পেছনেও পঁচা রসুনের বস্তার স্তুপ রাখা হয়েছে।
মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যাবস্থার অন্যতম পথ জেলখালটি গত এক দশকের বেশি সময় ধরে নূন্যতম কোনো সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ইতোমধ্যে মৃতাপ্রায়। ইতোপূর্বে একজন জেলা প্রশাসক এ খালের সংস্কারের নামে বহুবার ঘটা করে নানা অনুষ্ঠান সহ ফটো সেশনের আয়োজন করেন। এমনকি খালটি সংস্কারের অনেক মহড়া পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করেছেন নগরবাসী। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। মৃতপ্রায় জেল খালটি যেভাবে ছিল এখন তার চেয়েও আরো বিপন্ন।
তবে সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জেলখালসহ নগরীর ৭টি খালের সংস্কার করে প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি দু’পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণের সাথে নগরবাসীর চিত্ত বিনোদন ব্যাবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে দরপত্র আহŸান করা হয়েছে। দর প্রস্তাবগুলো ইতোমধ্যে মূল্যায়নের পর্যায়ে রয়েছে।
কিন্তু কতিপয় বিবেকহীন ব্যবসায়ীর অসত কর্মকাÐে জেলখালটি বিপন্ন পরিবেশ নগরীর সুস্থ নাগরিক জীবনকে ইতোমধ্যে বিপন্ন করে তুলেছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিফতরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। অপরদিকে পেঁয়াজপট্টির একাধিক ব্যসায়ীর সাথে কথা বলা হলেও কেউ এ ঘটনার বিষয়ে মুখ খোলেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন