শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ময়মনসিংহে চুলাই মদের বেপরোয়া সিন্ডিকেট

প্রশাসন ম্যানেজ করেই রমরমা বাণিজ্য

ময়মনসিংহ ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২২, ১২:০২ এএম

ময়মনসিংহ নগরীর প্রাণকেন্দ্র ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রমেস সেন রায় রোডস্থ পতিতা পল্লীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ চুলাই মদের সিন্ডিকেট। ফলে প্রায় সময়ই চুলাই মদসহ ছিচকে হকাররা গ্রেফতার হয়। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় এই সিন্ডিকেটের মূলহোতারা।
অভিযোগ উঠেছে, এই চুলাই মদ সিন্ডিকেটের বেপরোয়ার কর্মকাণ্ডে হাত বাড়ালেই মিলছে এই সহজলভ্য মাদক। ফলে বাড়ছে মাদকসেবী। এ কারণে প্রায় সময়ই সন্ধ্যার পর মাতালদের উৎপাতের শিকার হন নগরীর পথচারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নগরীর ৮নম্বর ওয়ার্ডের পতিতা পল্লীতে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪’শ লিটার অবৈধ চুলাই মদ ঢুকে পল্লীর বিভিন্ন বাড়িতে মজুদ হয়। এরপর দালালদের মাধ্যমে সরবরাহ হয় নগর থেকে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।
সূত্রমতে, পতিতাপল্লীর ভেতরে রয়েছে দেশিয় বাংলা মদের একটি কাউন্টার। এখান থেকে বৈধ পারমিটধারীরা বাংলা মদ পাওয়ার কথা থাকলেও কালোবাজারে অবৈধ ভাবে নিয়মিত বিক্রি হচ্ছে শত শত লিটার মদ।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিদিন ওই কাউন্টার থেকে পারমিট বিহীন ৫ থেকে ৬’শ লিটার বাংলা মদ অবৈধ ভাবে বের হয়ে এই রমেশ সেন রোডে নিষিদ্ধপল্লীর বিভিন্ন বাড়িতে মজুদ হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার লিটার চুলাই মদ উদ্ধার করে থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করেছে। তবুও বেপরোয়া চুলাই মদ সিন্ডিকেটের মূলহোতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, পতিতা পল্লীর লাভলী, রুমা, আনু ও সুন্দরী শিল্পী এই চুলাই মদ সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তাদের নিয়ন্ত্রণেই একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে কালোবাজারে বিক্রি হয় এই অবৈধ মদ। এতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সিন্ডিকেট। তবে এসব বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফারুক হাসান বলেন, শুনেছি প্রশাসন ম্যানেজ করেই অবৈধ চুলাই মদ বিক্রি হয়। তবে আমার ওয়ার্ডে বাংলা মদের একটি বৈধ কাউন্টার রয়েছে। চুলাই মদ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই (উপ-পরিদর্শক) আনোয়ার হোসেন বলেন, পতিতাপল্লী ভেতরে একটি বাংলা মদের বৈধ কাউন্টার রয়েছে। এদের মাধ্যমে কিছু নয়ছয় হতে পারে। তবে অনেক বার অভিযানে চুলাই মদ উদ্ধার হয়েছে এবং গ্রেফতার হয়েছে অনেক ব্যবসায়ী।
সিন্ডিকেটের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, পতিতা পল্লীর লাভলী, রুমা, আনু ও সুন্দরী শিল্পীর বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে। দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব বিষয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদফরের ভূমিকা অনেকটাই রহস্যময়। নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সহজলভ্য এই মাদকের ছড়াছড়ি থাকলেও দৃশ্যমান তাদের কোন অভিযান নেই। মূলত ওই মাদক সিন্ডিকেটের সাথে মাদকদ্রব্য অধিদফতরের গুটিয়ে কয়েক কর্মকর্তার যোগসাজস রয়েছে বলেও দাবি একাধিক সূত্রের।
এবিষয়ে ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খোরশিদ আলম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিয়ান নিয়মিত অব্যাহত আছে। নিয়মিত অভিযানে চুলাই মদ, ইয়াবা, গাঁজাসহ নানা ধরনের মাদক উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন