দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশের নৌপথের নাব্যতা উন্নয়নে নদী খনন কার্যক্রম জোরদারে ২ হাজার ৩০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ২০টি ড্রেজারসহ সহায়ক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় বরিশালে পূর্ণাঙ্গ ড্রেজার বেজ উদ্বোধন হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। বরিশালে কির্তনখোলা নদীর তীরে অধুনালুপ্ত মেরিন ওয়ার্কশপ প্রাঙ্গণে নবনির্মিত এ ড্রেজার বেজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক বিএন ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
দেশের নৌপথে ক্রমবর্ধমান ড্রেজিং চাহিদা মেটাতে বিআইডব্লিউটিএর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নদী খনন ক্ষমতা বছরে ২ কোটি ৩৩ লাখ ঘনমিটারে উন্নীত করার লক্ষ্যে দেশীয় তহবিলে ২০টি ড্রেজার সংগ্রহে ২০১৫ সালের ১১ আগষ্ট একনেক ২ হাজার ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন করে। ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়ার পরে এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হচ্ছে। জার্মানির ব্যুরো আব ভেরিটাস এবং লয়েডস রেজিস্ট্রার সংগৃহীত ২০টি ড্রেজার ও ৯২টি আনুষঙ্গিক নৌযানসহ সহায়ক সরঞ্জামের গুণগতমান যাচাই-বাছাই কাজে নিয়োজিত ছিল।
পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি পুরো প্রকল্পটির পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেছে বলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নেদারল্যান্ডের আইএইচসি ড্রেজার গেজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের এলিকট ড্রেজারস-এলএলসি’র ডিজাইন, ড্রইং ও কারিগরি সহায়তায় আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স’ এসব ড্রেজারসহ সহায়ক নৌযান এবং সরঞ্জাম নির্মাণ ও সরবারহ করেছে।
প্রকল্পটির আওতায় বরিশাল, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, আরিচা ও শিমুলিয়াতে ৫টি ড্রেজার বেজ নির্মান করা হয়েছে। সংগৃহীত ৬টি ২৬ ইঞ্চি, ৯টি ২০ ইঞ্চি ও ৫টি ১৮ ইঞ্চি সাকশন কাটার ড্রেজার ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীন নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন ও সংরক্ষণে খনন কাজে অংশ নিচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় ৯২টি সহায়ক সরঞ্জাম ও নৌযানের মধ্যে ক্রেনবোট, ক্রু-হাউজবোট, অফিসার্স হাউজবোট, ইনল্যান্ড সার্ভে ভেসেল, পাইপ কেরিং ডাম্ব বার্জ, ড্রেজার স্থানন্তরের জন্য টাগবোট, সেলফ প্রপেল্ড পাইপ কেরিং বার্জ, সার্ভে ওয়ার্ক বোট, সেলফ প্রপেল্ড ওয়াটার কেরিং বার্জ এবং সেলফ প্রপেলড অয়েল কেরিং বার্জ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় সেনাবাহিনীর এমআইসটির তত্ত্ববধানে বরিশালে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুটের ৬ তলা প্রশাসনিক ভবন, ৫ তলা স্টাফ ডরমিটারি ভবন, মসজিদ, সীমানা প্রাচীর, গভীর নলকূপ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং স্টিল গ্যাংওয়ে, স্পাড ও আরসিসি গ্যাংওয়েসহ একটি পূর্ণাঙ্গ বেজ নির্মিত হয়েছে।
ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১২০০ কিলোমিটার নৌপথের নিয়মিত খনন ও তদারকিসহ ড্রেজারসমূহের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি কর্মকর্তা কর্মচারিদের সার্বক্ষণিক অবস্থানের মাধ্যমে বন্দর কার্যক্রম পরিচালন সহজতর হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন