রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সুব্রত সাহা (৫২) নামের এক প্রকৌশলীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে এটি আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
গতকাল বিকেল ৪টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রমনা থানা পুলিশ। রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দ্বিতীয় তলা থেকে প্রকৌশলী সুব্রত সাহা নামের একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করছে। হোটেলের ছাদ থেকে দ্বিতীয় তলার কার্নিশে পড়ে বলে জানা গেছে।
ওসি বলেন, তাকে কেউ ফেলে দিয়েছে না তিনি আত্মহত্যা করেছেন বিষয়টি তদন্ত করে জানা যাবে। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পরে জানানো যাবে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় বলেও জানান ওসি।
তবে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূর মোহাম্মদ বলেন, সুব্রত সাহা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ২০ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। তিনি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হোটেলে প্রবেশ করেন। লিফটে করে তিনি ১১ তলায় যান। এরপর থেকে তার কোনো উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা হোটেলে প্রবেশপথের বর্ধিত অংশের দোতালার ছাদে তার নিথর দেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পড়নে ছিল সাদা রঙের স্ট্রাইপ শার্ট ও নীল রঙের প্যান্ট। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ রমনা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
সুব্রত সাহা রাজধানীর হাতিরপুলে সপরিবারে থাকতেন। তার স্ত্রী ও ১ মেয়ে রয়েছে। তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে- সে বিষয়ে পুলিশ তেমন কোনো তথ্য জানাতে পারেনি। পরিবারের সদস্যরাও তেমন কিছু জানাতে পারেননি।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই প্রকৌশলীর ১১ তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে তিনি নিজে লাফিয়ে পড়েছেন নাকি তাকে কেউ ধাক্কা দিয়েছে- সে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে পুলিশ হোটেলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে। হোটেলের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বিকালে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে একটি প্লাস্টিক কারখানায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. কাওছার নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল ৩টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের সহকর্মী নাসির জানান, আমরা কামরাঙ্গীরচর আফতাব নগর এলাকায় একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করার সময় কাউসার মেশিনের কাছে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, নিহতের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানায় আমড়াগাছিয়া পাড়ায়। নিহতের দুই ভাই তিন বোন ছিল সবার মধ্যে ছোট।
অপরদিকে গত মঙ্গলবার রাতে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকার একটি বাসায় মায়ের হাতে চড় খেয়ে অভিমান করে স্বপ্না আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। নিহত স্বপ্নার বাবা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার মেয়ে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকার একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পরীক্ষা দিয়ে সপ্তম শ্রেণীতে ওঠার পর এখন আর স্কুলে যায় না। তার মা একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে। ঘটনার দিন কর্মস্থল থেকে বাসায় এসে তার মা দেখে স্বপ্না ছোট বোনের সঙ্গে মারামারি করছে। এতে রাগান্বিত হয়ে তার মা তাকে চড় দেয়। এরপর মায়ের ওপর অভিমান করে ঘরে থাকা তেলাপোকা মারার কীটনাশক পানে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, আমাদের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার তিলশারপাড়া গ্রামে। নিহত স্বপ্না তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন