কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নদী ভাঙন হুমকিতে পড়েছে দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ । ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন যে কোনো মুহূর্তে পুরো স্কুল ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, ‘মূল ভবনটি ২০২০ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর থেকে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের আগে থেকেই এর পশ্চিমে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথে থাকা -এর তীরের বসতভিটা ও আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙছে নিয়মিত। গত কয়েকদিনের উজানের ঢলের পানিতে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে বিলীনের মুখে পড়েছে এলাকার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
স্থানীয়রা জানান, গত বছর তীব্র ভাঙনে নয়ারহাট ইউপির শতাধিক পরিবার বাস্তুহারা হয়। ভাঙনে বিলীন হয় দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাংশ। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অনুরোধ করলে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো হয়। গত এক বছরে ভাঙনের কবল থেকে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে এ বছর আবারও ভাঙনের কবলে পড়েছে ইউনিয়নের একমাত্র স্কুল অ্যান্ড কলেজটি। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবনের টিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কলেজ প্রিন্সিপাল জহিরুল ইসলাম মণ্ডল জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এটি বিলীন হওয়ার অর্থ এই দুই ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হওয়া। তিনি বলেন, নতুন এই ভবন থেকে আর মাত্র ১০০ ফূট দূরে আগ্রাসী ব্রহ্মপুত্র। যেভাবে ভাঙছে তাতে যেকোনও সময় নতুন ভবনটিও বিলীন হতে পারে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার অনুরোধ করেও কোনও কাজ হয়নি। আমরা এখন নীরব দর্শক।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির পাশাপাশি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে দক্ষিণ খাওরিয়া বাজারসহ স্থানীয় শতাধিক বসতভিটা। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে বসতভিটা থেকে ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষায় ভাঙন শুরু হলে বালুর বস্তা দিয়ে কিছু ভাঙন রোধের ে চষ্টা দেখা গেলেও শুকনো মৌসুমে সব থেমে যায়। ফলে স্থায়ী কোনও সমাধান হয় না। ভাঙনে শুধু বসতভিটা নয়, চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও ভেস্তে যেতে পারে। নয়ারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা বলেন, ‘প্রশাসনকে আমরা সবসময় জানাচ্ছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মনে করে, চরের ভাঙন স্বাভাবিক। ফলে ভাঙন রোধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রতি বছর ভাঙে, কিন্তু যে সময় ভাঙন রোধে কাজ করা প্রয়োজন সেসময় কোনও কাজ হয় না। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে কয়েকশ হেক্টর আবাদি জমিসহ শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে যেতে পারে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ভবনটি রক্ষায় আমি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন