রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আড়াই লাখ টাকায় শিশু ধর্ষণের ঘটনা ধামা চাপার ঘটনা ফাঁস ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষায় উওাপ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২২, ৬:০৬ পিএম

ফরিদপুর ভাঙ্গায় শাহআলম মাতুব্বর (২৪) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ৭ বছরের এক শিশু কন্যাকে (৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্হানীয় চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে আড়াইলাখ টাকায় লেনদেনের বিষয়টিও ফাঁস হয়ে গেছে মঙ্গলবার, (৩১ মে) ধর্ষিতাকে ডাক্তার পরীক্ষার করানোর মধ্যে দিয়ে। এরপরই ঘটনাটি গনমমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে।

জানাযায়,গত ২৬ মে, উপজেলার আলগী ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ইশারায় শালিসের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাঁচাপার চেষ্টা করা হয়। এ অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুর বাবা পেশায় একজন কৃষক। তিনি জানান, এ ঘটনা জানাতে গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে),আলগী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন তিনি ও তার পরিবার।

কিন্তু চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়া ব্যস্ততার অযুহাতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করান। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তারা চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ পাননি।

এক পর্যায়ে রহস্যজনক কারণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিষয়টি গ্রাম্য শালিসে গড়ায়। সেই শালিসে অভিযুক্ত শাহ আলমের আড়াই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন শালিসপক্ষ।
মেয়েটির বাবা গনমমাধ্যম কে আরও জানান, জরিমানার টাকা ও শালিসের রায় তারা মানতে রাজি হননি। কিন্তু গত চার দিন যাবৎ ধর্ষনের ঘটনা মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় একটি মহল তাদেরকে হুমকি ধমকি চাপ প্রয়োগ করছে। এমনকি থানায় যেতে চাইলে প্রভাবশালী মহলের রোষানলের স্বীকার হয়েছেন তারা। এখন রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (৩১ মে) ঘটনাস্থল এবং ফরিদপুর মেডিকেলের ওসিসিতে এবং এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী শিশু কন্যার পারবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা জানা যায়।

ধর্ষিতার পরিবার ও স্হানীয়রা গনমমাধ্যম কে বলেন, কৈখালী গ্রামের বাসিন্দা হায়দার মাতুব্বরের ছেলে ধর্ষক শাহআলম ধর্ষিতার শিশু কন্যার বাড়ি একই গ্রামে।

ভুক্তভোগী মেয়েটির সম্পর্কে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই হয় শাহআলম। এর সুবাদে প্রায়ই শাহআলম ওই বাড়িতে যাতায়াত করত। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) শাহআলম পুনরায় ওই বাড়িতে যায়। পরিবারের কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে মেয়েটিকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে শাহআলম।

এতে মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অচেতন অবস্থায় তাকে রেখে পালিয়ে যায় শাহআলম। পরে ওই মেয়ের মা বাড়িতে ফিরে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। মেয়েটির জ্ঞান ফিরলে মায়ের কাছে ধর্ষণের ঘটনার বর্ননা দিলে ধর্ষকের নাম বেড়ুয়ে পড়ে। এসময় মেয়েটি আরও জানায়, আগেও একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছে শাহআলম। শিশুটিকে ভয় দেখালে পরিবারের কাউকে এ কথা বলেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক জনপ্রতিনিধি গনমমাধ্যম কে জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়ার ইশারায় স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গত বৃহস্পতিবার ও রোববার রাতে শালিস হয়েছে। সেখানে অভিযুক্ত শাহআলম মৌখিক স্বীকারোক্তিতে তার দোষ স্বীকার করেছে। পরে শালিসপক্ষ অভিযুক্তকে নগদ আড়াই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে। কিন্তু ভুক্তভোগীরা তথা ধর্ষিতার পরিবার সেই শালিস মেনে নেয়নি।

এই বিষয় এ প্রতিনিধি আলগী ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়াার সাথে কথা বললে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। ধর্ষণের ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে তার গ্রামের কোনো পরিবারই বিচার নিয়ে তার কাছে যায়নি। ঘটনাটি আপনারদের কাছ থেকে জানলাম।

এ ঘটনায়, অভিযুক্ত শাহআলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শাহআলমের বাবা হায়দার মাতুব্বর মুঠোফোনে জানন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একটি শালিস হয়েছে। তিনি সেই শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী গনমমাধ্যম কে জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি তিনি। তবে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

শেষ পর্যন্ত ঘটনা জানাজানি হলে, মঙ্গলবার,(৩১ মে) ভাঙ্গা পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে, ফরিদপুর বঃবঃমেঃকলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ধর্যিতার ডাক্তারী পরীক্ষা করাতে আনেন বলে ওসিসিতে দায়ীত্বে থাকা ডাক্তাররা বিষয়টি গনমমাধ্যম কে নিশ্চিত করেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন