বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ হয়েছে। চলতি সালের ২৬ মার্চের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫১ বছরে পদার্পণ করলো। এটি একটি স্বাধীন জাতি হিসাবে অবশ্যই আমাদের সকলের জন্য আনন্দের সংবাদ। ১৯৪৭ সালে যখন ভারত বিভক্ত হয়, বিশেষ করে যখন বাংলা বিভক্ত হয় তখন বাংলা বিভক্তি এবং বাংলার পূর্বাঞ্চলের পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে খোদ কংগ্রেসেই অনেকে পন্ডিত জওহর লাল নেহ্রুর কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। নেহ্রু জবাবে বলেছিলেন, তোমরা ঘাবড়াবে না। পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ পূর্ব বঙ্গ (১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চের পর পূর্ব পাকিস্তান) ২৫ বছরের বেশি টিকবে না। ২৫ বছর পর সে আবার ভারতে ফিরে আসবে। নেহ্রুর ভবিষ্যৎবাণীর প্রথমাংশ সত্য হয়েছে। অর্থাৎ পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর ২৪ বছর শেষে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু নেহ্রুর পরবর্তী ভবিষ্যৎবাণী সত্য হয় নাই। পরবর্তী ২৫ বছর তো দূরের কথা, পরবর্তী ৫১ বছর ধরে একটি স্বাধীন জাতি হিসাবে আমরা গৌরবের সাথে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছি। ইনশাআল্লাহ, আগামী আরো বহু বছর বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে।
আমাদের এই গর্বের কথা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেও দুই একটি মৌলিক প্রশ্ন চিন্তা করলে মনটা কিছুটা বিষন্নতায় ভরে ওঠে। ৫১ বছর অর্থাৎ অর্ধশতাব্দী পার হয়ে গেল, আজও বাংলাদেশ তার মৌলিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট সমূহ ঐক্যবদ্ধভাবে ঘোষণা করতে পারেনি। আমরা প্রতিবেশী ভারতকে দেখেছি, সেখানে ২৮ টি অঙ্গরাজ্য রয়েছে, শত শত ভাষা রয়েছে এবং বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে। কিন্তু ১৯৪৭ সালের পর থেকে এই ২০২২ সাল- এই ৭৫ বছর বয়সে তাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কোনো বড় রকমের মতদ্বৈধতা দেখা যায়নি। কাশ্মীর প্রশ্নে সব দল সহমত পোষণ করে। তেমনি উত্তর পূর্ব ভারতের ৭ টি রাজ্য এবং পাঞ্জাবের স্বাধীনতার প্রশ্নে সব দলই বিরোধিতায় ঐক্যমত পোষণ করে। ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারেও অন্তত কাগজে কলমে তথা সংবিধানে তাদের কোনো বিরোধিতা নাই। বর্তমান সরকার অর্থাৎ বিজেপি সরকারের কট্টর হিন্দুত্ববাদী নীতির বিরোধিতা করে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দল। কিন্তু বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দিরের যখন শিলান্যাস হয় তখন ইউরোপীয় মায়ের সন্তান রাজীব গান্ধীকেও রূপার ইট হাতে রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনে অংশ নিতে দেখা যায়।
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা (সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী) ১০ শতাংশ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের সংখ্যা ২৮ শতাংশ, আসামে ৩০ শতাংশ এবং সমগ্র ভারত জুড়ে ১৫ শতাংশ। মাত্র ১০ শতাংশ হওয়ার পরেও হিন্দুদেরকে এদেশে ৯০ শতাংশ মুসলমানদের মত সমান সুযোগ সুবিধা এবং অধিকার দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশী হিসাবে হিন্দুরাও মুসলমানদের মত সমান অধিকার ভোগ করে। এটি শুধু ধর্মনিরপেক্ষতার কারণেই নয়, ইসলামেও সংখ্যালঘুদের সংখ্যাগুরুদের মত সমান অধিকার ও মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন গণতন্ত্র নিয়ে। একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক মহল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সবার উর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যই বাংলাদেশীদের অহংকার এবং মুক্তিযোদ্ধারা বীর সন্তান। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ‘চেতনা’টি কি? সেটি আজ পর্যন্ত কেউই খোলাসা করে ব্যাখ্যা করেননি। তাদের কথাবার্তায় মনে হয়, অসাম্প্রদায়িকতা এবং তাদের ভাষায় মৌলবাদ বিরোধিতাই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কিন্তু পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিবের ২৪ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামে মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়িকতা প্রাধান্য পায়নি। তার আন্দোলনে প্রধান উপজীব্য ছিল সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য এবং নির্ভেজাল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
॥দুই॥
বাংলাদেশের (পূর্ব পাকিস্তানের) রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট হলো রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলনটি শুরু করেছিল পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিশ। পরবর্তীতে ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারি যে গুলিবর্ষণ হয় তখন শেখ মুজিব কারাগারে ছিলেন। এই আন্দোলনের পূর্বাপর পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আন্দোলনের পুরোধারা সাম্প্রদায়িকতা বা মৌলবাদের প্রশ্ন উত্থাপন করেননি। ১৯৫৪ সালে সর্বপ্রথম তৎকালীন পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং নেজামে ইসলামের মওলানা আতাহার আলী মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনী মেনিফেস্টো হিসাবে বাঙ্গালীদের সামনে ২১ দফা পেশ করেন। এই ২১ দফার কোনো দফাতেই অসাম্প্রদায়িকতা বা মৌলবাদের কোনো নাম গন্ধও ছিল না। সারা পাকিস্তান ভিত্তিতে একটি মাত্র সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ১৬৯ টি আসনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। এই নির্বাচন উপলক্ষে শেখ মুজিব জাতির সামনে যে নির্বাচনী মেনিফেস্টো উপস্থাপন করেন সেখানেও কোথোও অসাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের উল্লেখ ছিল না। বরং সেখানে ৫নং দফায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, ‘কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন না করা’।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো মুজিবনগরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। এই ঘোষণাপত্রের এক স্থানে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী জনগণ কর্তৃক আমাদিগকে প্রদত্ত কর্তৃত্বের মর্যাদা রক্ষার্থে, নিজেদের সমন্বয়ে যথাযথভাবে একটি গণপরিষদ রূপে গঠন করিলাম এবং পারস্পরিক আলোচনা করিয়া এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম।’ এটিই হলো সেই সুবিখ্যাত মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতা ঘোষণার সনদ। এই ঘোষণার ওপরই দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীন বাংলাদেশ। এই স্বাধীনতার ঘোষণার কোথাও মৌলবাদ বা অসাম্প্রদায়িকতা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা উল্লেখ নাই। আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। আর সেটি হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন সেখানেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা উল্লেখ নাই।
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা রাখা হয়। সেই সংসদীয় ব্যবস্থা অনুযায়ী ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীতে বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা বাতিল করে একদলীয় প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসন ব্যবস্থা বলবৎ করা হয়।
॥তিন॥
আসল কথা হলো, সুশাসন, আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রই আধুনিক প্রগতিশীল রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ। সাচ্চা গণতন্ত্রই বহুভাষী এবং নৃতাত্ত্বিকভাবে একটি বৃহৎ জাতীয়তাবাদকে সংহত করে। এর জলজ্যান্ত উদাহরণ হলো ভারত। ২৮ টি অঙ্গরাজ্য এবং কয়েকটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলে বিশাল ভারত গঠিত। বিগত ৭৫ বছর ধরে ভারতে নিয়মিত বিরতিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে ভারতের উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারীকা, অর্থাৎ বিহারী, বাঙ্গালী, পাঞ্জাবী, গুজরাটি, রাজপুত, তামিল, উড়িয়া প্রভৃতি প্রায় ৩০ টি নৃতাত্বিক জাতিকে বৃহত্তর ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বন্ধনে এপর্যন্ত আবদ্ধ রেখেছে।
এর পাশাপাশি পাকিস্তানকে দেখা যেতে পারে। পাকিস্তানে নৃতাত্ত্বিকভাবে ছিল ৫ টি জাতি। এরা হলো বাঙ্গালী, পাঞ্জাবী, বেলুচ, সিন্ধি এবং পাঠান। সেই পাকিস্তানে ২৪ বছরের মাথায় একটি মাত্র সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যদি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ১ বা ২ বছরের মধ্যে একটি শাসনতন্ত্র প্রণীত হতো এবং সেই শাসনতন্ত্রের ভিত্তিতে যদি নিয়মিত সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো তাহলে পাকিস্তানের ইতিহাস কিভাবে লেখা হতো সেটা একমাত্র ভবিতব্যই জানেন।
এই মুহূর্তে যেটি দেখা যাচ্ছে সেটি হলো, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো অবাধ ও নির্ভেজাল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর সেই অবাধ ও নির্ভেজাল গণতন্ত্রের সবচেয়ে প্রধান অঙ্গ হলো স্বচ্ছ, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট। দুর্ভাগ্যের বিষয়, সেই সুষ্ঠু নির্বাচন আজ সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। অথচ খোদ আওয়ামী লীগই ভুলে যায় যে ১৯৭০ সালে যে ভোট হয়েছিল সেই ভোটে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ যদি ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসন না পেত তাহলে স্বাধীনতা অত দ্রুত আসতো কিনা সন্দেহ। কারণ আওয়ামী লীগ যে ১৬৭ টি আসন পেয়েছিল সেটি শুধুমাত্র সাবেক পূর্ব পাকিস্তানেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ছিল না, বরং সারা পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। পাকিস্তানের সামরিক জান্তা যে অযুহাতই দেখাক না কেন, সারা পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে অত আলোচনা এবং অত ধানাই-পানাই না করে সরাসরি মার্শাল ’ল প্রত্যাহার করা উচিৎ ছিল এবং শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য আহ্বান করা উচিৎ ছিল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ মুজিব কি করতেন সেটি আমরা জানি না। কিন্তু নির্বাচনী ফলাফলের পর শেখ মুজিবকে মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য আহ্বান করা ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।
॥চার॥
গণতন্ত্র যেমন ছিল পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির প্রাণ ভোমরা, তেমনি গণতন্ত্রই ভারতের ঐক্য ও সংহতির প্রাণকেন্দ্র। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু হলো সাচ্চা গণতন্ত্র। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্রের দশা হয়েছে কাজির গরু কেতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে নাই। এসব কথা এখন বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষিত মানুষই জানে। বাংলাদেশের অনেক জ্ঞানী শিক্ষাবিদ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। এখন অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা এবং ইংল্যান্ড থেকে অনেক বিদগ্ধজন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে বিদেশে তো বটেই, বাংলাদেশের পত্র পত্রিকাতেও নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে দুই জনের নাম বিশেষ করে উল্লেখ করা যেতে পারে। একজন হলেন আমেরিকার ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিশটিংগুইশড প্রফেসর আলী রিয়াজ। আরেকজন হলেন টেনিসি অঙ্গরাজ্যের অস্টিন পিআ স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. তাজ হাশমী।
এরা দুজন এবং বিদেশে অবস্থানরত আরো অনেক বাংলাদেশী নামজাদা শিক্ষাবিদ এখন আর কোনো রূপ রাখঢাক না করে বলছেন যে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের শেষার্ধ পর্যন্ত যে নির্বাচন হয়েছিল ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ মানত্তীর্ণ সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিল। কিন্তু তার পর থেকে রাষ্ট্রের রূপান্তর ঘটতে থাকে। গণতন্ত্র ক্রমন্বয়ে সংকুচিত হতে থাকে। প্রথমে বলা হয় যে, বাংলাদেশ পুলিশী রাষ্ট্র (Police State)। তারপর বলা হয়, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র (Fascist State)। ড. আলী রিয়াজ একধাপ ওপরে উঠে বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র (Authoritarian State)। কর্তৃত্ববাদের সংজ্ঞা নিম্নরূপ: Authoritarianism, principle of blind submission to authority, as opposed to individual freedom of thought and action. In government, authoritarianism denotes any political system that concentrates power in the hands of a leader or a small elite that is not constitutionally responsible to the body of the people. অর্থাৎ কর্তৃত্ববাদ হলো অন্ধভাবে কর্তৃপক্ষের আনুগত্য স্বীকার। এখানে ব্যক্তির স্বাধীনতা এবং চিন্তার স্বাধীনতার কোনো স্থান নেই। কর্তৃত্ববাদী সরকারে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা বোঝায় যেখানে ক্ষমতা এক ব্যক্তি অথবা একটি গোষ্ঠির হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে, যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠি তাদের কাজ কর্মের জন্য জনগণের কাছে দায়ী নয়।
এই কর্তৃত্ববাদের শুরুটা হয় ২০১৪ সালের নির্বাচনে যখন ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। কর্তৃত্ববাদ পাকাপোক্ত হয় ২০১৮ সালে যখন অভিযোগ মোতাবেক দিনের ভোট রাতে হয় এবং সরকারি দল ৩০০ টি আসনের মধ্যে ২৮৮ টি আসন লাভ করে। তবে আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচন কেমন হবে সেটি এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। কারণ ২০১৪ সালে যে ধরণের নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালে সেই ধরণের নির্বাচন হয়নি। তেমনি ২০২৩ সালে ভিন্ন ধরণের নির্বাচন হবে। কোন ধরণের নির্বাচন হবে সেটি নির্বাচনের ১ বছর ৮ মাস আগে বলা সম্ভব নয়। তবে দেশবাসীর প্রত্যাশা, এবার যেন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
লড়ঁৎহধষরংঃ১৫@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন