শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চকরিয়ায় অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ও খুটাখালীতে পাহাড় ও টিলা সাবাড় করে মাটি ও বিভিন্ন ছড়াখালে অসংখ্য শ্যালো মেশিন, ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ ভূমিধসের আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী ও ফুলছড়ি রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর এবং ডুলাহাজারাস্থ সাফারি পার্ক লাগোয়া রংমহল ও দাঙ্গারবিলে পরিবেশ বিধ্বংসী এই কর্মকাণ্ড বর্তমানেও চলমান রয়েছে। যদিও উচ্চ আদালত ডুলাহাজারা ও খুটাখালীর বালু মহালগুলোর কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে। এরপরও আদালতের নির্দেশনা অমান্য ও প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল এই অপকর্ম চলমান রেখেছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা বন বিটের পাগলির বিল, ফুলছড়ি রেঞ্জের খুটাখালী ও মেদাকচ্ছপিয়া বন বিটের মধুশিয়া এলাকা থেকে কয়েক বছর ধরে চি‎হ্নিত বালু ও মাটি খেকো চক্র নির্বিচারে পাহাড় ও টিলার মাটি লুট করে চলছে। পাশাপাশি শ্যালোমেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে ভূ-গর্ভের ৪০-৫০ ফুট গভীর থেকে বালু উত্তোলন করে ট্রাকযোগে পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ৩টি বন বিটের অন্তত ২৫-৩০ একর বনভূমি পুকুরে পরিণত হয়ে গেছে। বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযান চালিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলনের উপকরণ ধ্বংস করলেও জড়িতদের আটক করা যাচ্ছে না। এমনকি বন বিভাগ আদালতে মামলা দায়ের করলেও অপরাধীদের দমন করা যাচ্ছে না।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, বন বিভাগের পাগলির বিল শুধুমাত্র ডুলাহাজারা বন বিটের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এখানে কিছু অংশ ফুলছড়ি রেঞ্জের মেদাকচ্ছপিয়া বন বিটেরও আওতাধীন। এরপরও বন বিভাগ পাগলির বিলের বনভূমি রক্ষার জন্য আন্তরিক। তবে বালু ও মাটি খেকোচক্রে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।

অপরদিকে ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের দক্ষিণাংশের সীমানা দেয়াল লাগোয়া রংমহল ও দাঙ্গার বিলের টিলা শ্রেণির জমি থেকে বালু ও মাটি লুট করার কারণে পার্কের সীমারা দেওয়াল হুমকির মুখে রয়েছে। একই কারণে গতবছরও পার্কের অন্তত ১২০ ফুট সীমানা দেওয়াল ধসে যায়। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ডুলাহাজারা, খুটাখালী বন বিটের পাগলির বিল, মধুশিয়া ও রংমহল, দাঙ্গারবিল থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পরিবেশ বিপর্যয় কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। ইতোমধ্যে এসব বিষয় জেলা প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, জেলা প্রশাসন ইজারা দিয়েছে এক জায়গায়। সেই জায়গার কাগজপত্র নিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হয়েছে অন্য জায়গা থেকে। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে নির্দেশনা দিয়ে রুল জারি করার পর জেলা প্রশাসন থেকে ইজারার বিপরীতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন