শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

জলবায়ু ঝুঁকির ন্যায্য দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হোন জাতীয় সংসদ ভবনে কনভেনশনে বিশেষজ্ঞরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ন্যায্য দাবি আদায়ে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, বিশ্বের কোন নেতা কী বললো সেটা বিষয় নয়। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। তাই এই ঝুঁকি মোকাবেলায় সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ন্যায্য দাবি আদায়ে বর্তমান সরকারের কঠোর অবস্থান ধরে রাখার দাবি জানান তারা।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ‘প্যারিস থেকে মারাক্কাশ, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ঃ আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক কনভেনশনে তারা এই দাবি জানান। সার্ক এনভায়রনমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম আয়োজিত কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র। প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিরোধী দলীয় হুইপ মো. ফখরুল ইমাম এমপি, ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর এবং আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন। সিনিয়র সাংবাদিক রাহুল রাহার সঞ্চালনায় কনভেনশনে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ ট্রাস্টের কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বিজয়। আলোচনায় অংশ নেন সিপিআরডি’র নির্বাহী পরিচালক মো. শামছুদ্দোহা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ এবং ফোরামের মহাসচিব এ বি রাজ্জাক, সহ-সভাপতি নজমুল হক সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান রহমান।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি স্পিকার জলবায়ু ন্যায্যতা আদায়ে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেন, আমরা অনেক ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি না। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করি। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবেই ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, সমগ্র বিশ্ব যদি একমত থাকে কোন দেশের একজন নেতা বিরোধিতা করলেও তা প্রভাব ফেলবে না। যারা কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী তারা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।
জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভ‚মিকা পালনের উপর গুরুত্বারোপ করে অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণ ১ দশমিক ৫ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া যাবে না। আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী এবিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছেন। আন্তর্জাতিক ফোরামে কঠোর অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে তাকে সহায়তার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। অভ্যন্তরীণ পরিবেশ সুরক্ষায় সকলকে সচেতন হতে হবে।
মো. ফখরুল ইমাম এমপি বলেন, জলবায়ুর ঝঁকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা না করে থেকে নিজস্ব তহবিল গঠন করতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার সেই উদ্যোগ নিয়েছে। বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও সরকারের এসকল ভালো কাজে সমর্থন রয়েছে।
কনভেনশনে দক্ষিণ-পশ্চিম উপক‚লীয় অঞ্চলের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে বেশী আলোচনা হলেও অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবন ও বিভিন্ন নদ-নদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সুনির্দ্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরী।
পিআইবি মহাপরিচালক শাহ আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূঢ় নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী সংকট ও বাংলাদেশের দাবির করা তুলে ধরতে পেরেছি। আর পানি ও খাদ্য নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু দু’টি সম্মেলনে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যা আমাদের ন্যায্যতা আদায়ে সহায়ক হবে।
মূল প্রবন্ধে প্যারিস চুক্তির আলোকে গণঅংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে ২০১৮ সালের মধ্যে জাতীয়ভাবে ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্লান তৈরির আহŸান জানানো হয়। আরো বলা হয়, ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড’ থেকে যে সরাসরি সহায়তা প্রাপ্তিতে অবিলম্বে ন্যাশনাল ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সি (এনআইএ) গঠনে জাতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের হাত থেকে সর্বাধিক বিপন্ন মানুষদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় ‘সামজিক সুরক্ষা বেষ্ঠনি’ গড়ে তোলার মাধ্যমে বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন করতে হবে। একইসঙ্গে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য কোন ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বঘোষিত অবস্থানের পক্ষে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অঙ্গীকার ঘোষণা করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন