পেশাদার গাড়ি চালকদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। তবে কুষ্টিয়া জেলায় এখনো চালু হয়নি ডোপ টেস্ট সেবা। এ কারণে কুষ্টিয়ায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার গাড়ি চালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করতে না পারায় প্রতিনিয়ত রাস্তায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে এসব চালকদের।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয় থেকে জানা যায়, পেশাদার গাড়ি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হলেও এখনও কুষ্টিয়া জেলায় চালু হয়নি ডোপ টেস্ট সুবিধা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পেশাদার মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী মো. মক্কেল মন্ডল জানান, হঠাৎ বিআরটিএ নিয়ম করছে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট লাগবে। আমি লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ অফিসে লিখিত, ভাইবা ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখে বিআরটিএ অফিস আমার ডোপ টেস্ট করার জন্য কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসে চিঠি দিয়েছে। ওখানে যেয়ে শুনলাম কুষ্টিয়ায় এই পরীক্ষা হয় না। তাহলে আমরা কী করব? পাঁচ মাস ধরে লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন হচ্ছে না। রাস্তায় নামলে পুলিশ ধরে হয়রানি করে।
আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, বিআরটিএ অফিসে আসছিলাম পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে। এখন এসে শুনি তারা কোনো আবেদন জমা নেবে না। আগে ডোপ টেস্ট করতে হবে, পরে আবেদন নেবে।
বিআরটিএ কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল আলম জানান, ডোপ টেস্ট সনদ না মেলায় পাঁচ মাস ধরে পেশাদার চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৫০ জনের ডোপ টেস্ট সনদের জন্য কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসে চিঠি পাঠিয়েছি। ডোপ টেস্টের কাগজ না পাওয়ায় পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স আমরা দিতে পারছি না। ডোপ টেস্টের বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। গত মাসেও চিঠি দিয়েছি।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা জারি হলেও বাস্তবায়নের জন্য সময় লাগে। মালামাল কেনার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি এ মাসের ১৫ তারিখ থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আমরা ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। দেশের সকল পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সেই অনুযায়ী জানুয়ারি মাসেই বিআরটিএ একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে সারাদেশের সকল পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে এবং ঢাকা মহানগরীর ক্ষেত্রে ৬টি প্রতিষ্ঠানে অথবা মাদকদ্রব্য অধিদফতরের অধীন/অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে পেশাদার চালকরা ডোপ টেস্ট করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিস হতে নির্ধারিত ফরমে অনুরোধ জানিয়ে ডোপ টেস্টকারী প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিতে হবে। ডোপ টেস্টকারী প্রতিষ্ঠান ডোপ টেস্ট রিপোর্ট অনলাইনে বিআরটিএর সহকারী পরিচালককে প্রেরণ করবে এবং মূল কপি লাইসেন্স প্রার্থীর নিকট হস্তান্তর করবে। বিআরটিএ অফিস অনলাইন কপি ও মূল কপি যাচাই করে মাদকাসক্ত না হলে লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন