প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় একসঙ্গে বিষপানে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় দু’জন। তিনদিন পর গতকাল শুক্রবার প্রেমিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিমের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আর প্রেমিক টগর মূমুর্ষ অবস্থায় একই হাসপতালে চিকিৎসা নিয়ে গুরুতর অবস্থায় বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। তারা দুজনই উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জগদীশপুর-মির্জাপুর ইসমাইল হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মৃত জান্নাতুল ফেরসৌস মিম জগদীশপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং টগর একই গ্রামের আক্তার আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, উভয়ের পরিবার প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় একসাথে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রেমিক টগর ও প্রেমিকা জন্নাতুল ফেরদৌস মিম। জোগাড় করে আগাছানাশক। এরপর গত বুধবার সকাল ১০টায় স্কুল চলাকালীন পরীক্ষা না দিয়ে আগাছানাশক নিয়ে স্কুলের মূল ভবনের পিছনে যায় দুজন। সেখানে প্রেমিকার হাতে আগাছানাশক তুলে দেয় প্রেমিক টগর। মিম ওই আগাছানাশক খেয়ে দেয় টগরের হাতে। প্রেমিকও খায় আগাছানাশক। এরপর দুজনে যায় পরীক্ষার হলে। প্রায় আধাঘন্টা পরীক্ষার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে মিম। শিক্ষকরা বিষয়টি জানতে চাইলে স্বীকার করে সে এবং টগর আগাছানাশক খেয়েছে। তবে টগর সে সময় অস্বীকার করে শিক্ষকদের বলে সে বিষ খায়নি, শুধুমাত্র মিম খেয়েছে। এরপর সম্পূর্ণ পরীক্ষা দেয় টগর। তখন সবাই ভেবেছিল টগর আগাছানাশক খায়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মিমকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে মিমের মা সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়েকে বিষ খাইয়ে দিয়ে প্রেমিক টগর পালিয়ে যায়। তখন তিনি প্রেমিক টগরের আগাছানাশক খাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। এদিকে, যশোরে মিমের অবস্থার অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিমের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, পরীক্ষা শেষে বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে টগরের পরিবার তাকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখান থেকে টগরকেও গত বৃহস্পতিবার খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে চিকিৎসার পর ছেলেটিকে গতকাল শুক্রবার ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়। গুরুতর অবস্থায় সে জগদীশপুর গ্রামের বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন