সারা দেশ যখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে কুটুক্তির প্রতিবাদে উত্তাল তখনই চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পবিত্র আল কোরআন অবমাননার অভিযোগে জনতা কর্তৃক নুশরাত জাহান নামে এক নারীকে পুলিশে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১০ জুন) সকাল ৯টার সময় উপজেলার মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে।
আটক ওই মহিলার স্বামী হায়দার আলী ইনসেপ্টা ঔষধ কোম্পানতে মতলব উত্তরে আরএমও হিসেবে কর্মরত। ওই মহিলার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলায়। আর স্বামীর বাড়ি ভোলা জেলায়। তাদের ঘরে ১২ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সে স্বপ্নে দেখছে,তাকে পবিত্র কোরআন শরীফ নদীতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তাহলে সে সুস্থ্য হবে এ অজুহাত দেখিয়ে সে প্রায়ই পবিত্র কোরআন শরীফ কিনে নদীতে নিয়ে ফেলে দিত।
জানাযায়, আটক মহিলা উপজেলার ছেংগারচর বাজারের ফরহাদ দর্জির দোকান থেকে প্রতি দিন ৯০-১০০ কোরআন কিনে নিত। এ কাজটি সে করে আসছে প্রায় ৫-৬ মাস যাবত এ কাজটি করে আসছে। প্রতি দিন সে এভাবে এতগুলো কোরআন শরীফ কিনে যাওয়া দোকানদার ফরহাদের সন্দেহ হয়। ফরহাদ বিষয়টি মাদ্রাসার শিক্ষক ও আশপাশের মসজিদের ইমামদের জানায়। এই সন্দেহ থেকে গত দু’দিন আগে তিনি ছেংগারচর বাজার থেকে ৯০ টি কোরআন কিনে একটি অটোগাড়িতে উপজেলার এখলাছপুর মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা হাতে নাতে ধরে ফেলে। এপর তার স্বামী ইনসেপ্টা ঔষধ কোম্পানতে মতলব উত্তরে আরএমও হায়দার আলীকে এ ঘটনার সর্ম্পকে জানতে একদিন সময় নেন।
আজ এ বিষয়টি নিয়ে সকালে আলেম ওলামাদের সমন্বয়ে শুনানী হওয়ার কথা। আজ শুক্রবার কাউকে কিছু না বলে দুটি ব্যাগে করে পবিত্র কোরআন শরীফসহ পালিয়ে যাওয়ার সময় তৌহিদী জনতা তাকে আটক করে। এ ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে জানাজানি হইলে ছেংগারচর পৌর বাজারে শত’ শত’ মুসলমানরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ মহিলার দৃষ্টানমূলক শাস্তি চেয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন। এবং বিষয়টি নিয়ে উপজেলার সমগ্র মুসলিম উম্মার মধ্যে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ ঘটনায় তৌহিদি জনতা বিক্ষোপ মিছিল করে। এক পর্যায়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাওয়ার অবস্থায় কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা তাকে মতলব উত্তর থানায় হস্তান্তর করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
উপজেলার ছেংগারচর বাজার কারিমিয়া উলূম মাদ্রাসার মুতাওয়ালি হাফেজ মোঃ আতাউল্লাহ মহসিন বলেন, একমাত্র ছিড়া ফেরা কোরআন শরীফ পানিতে বা নদীতে ফেলে দিতে পারে। কিন্তÍু এতগুলো নতুন কোরআন শরীফ নদীতে ফেলার দেওয়ার পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার শামিল। এগুলো সে কোনো মসজিদ,মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দিতে পারতো। এটা না করে তিনি পবিত্র কোরআন শরীফ নদীতে ফেলে দেওয়া এটা অবমাননার শামিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পিছনে কারা খুজে বের করার জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে দাবী জানান।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বলেন,মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে পবিত্র আল কোরআন অবমাননার অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ মহিলা মানসিক সমস্যা বলে তার পরিবার জানিয়েছে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন