বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শেরপুরে উজানে ঢলের পানি কমলেও প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২২, ১২:০৩ এএম

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার দুদিন পর থেকে ঢলের পানি উজান থেকে নেমে গেলেও ভাটি অঞ্চলে বাড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন করে ভাটি অঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় ঢলের পানি কমে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও বাড়তে শুরু করেছে। ঢলের পানির তোড়ে রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়ছে পথচারীদের দুর্ভোগ। কিছু এলাকায় এখনও পানিবন্দী রয়েছে মানুষ।
গতকাল শনিবার স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও অধিবাসীসহ দায়িত্বশীল মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিয়ে পাওয়া গেছে ওই তথ্য। জানা যায়, গত বুধবার থেকে দুদিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসামহারশি, সোমেশ্বরী ও কালঘোষা নদীর পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহারশি, সোমেশ্বরী ও কালঘোষা নদীর পাহাড়ি ঢলের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে শতশত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ঝিনাইগাতী সদর বাজার, হাইওয়ে সড়ক ও উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ অফিস পাড়াগুলো ৩ থেকে ৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। সরকারি দফতরগুলোতে কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই নদীগুলোতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করে। তবে ভাটি এলাকায় হাতিবান্ধা ও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নে নতুন করে আরও প্রায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে তলিয়ে দেড় শতাধিক পুকুরের কোটি টাকার মাছ ভেসে গিয়ে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে পাহাড়ি ঢলের পানিতে কৃষির তেমন কোনো ক্ষতি সাধিত হয়নি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ঢলের পানির তোড়ে মহারশি ও সোমেশ^রী নদীর বিভিন্ন স্থানের প্রায় আড়াই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আহম্মেদনগর-দীঘিরপার সড়ক, গুরুচরণ দুধনই-পানবর সড়ক ও রামেরকুড়া সড়কসহ বেশ কয়েক জায়গায় সড়ক ভেঙে ওইসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের ফলে মহারশি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ঝিনাইগাতী বাজার ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই পাহাড়ি ঢলের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তাঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ হওয়ার পথে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ১০ মেট্রিকটন জিআর এর চাল সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিতরণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের মাঝে উপ-বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এলজিইডির ভাঙনকবলিত ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতে কাজ শুরু করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন