একটানা দশ বছর স্বামী-স্ত্রীর মতো ঘর সংসার পরিচালনার পরও কাবিননামা না করায় ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন বরিশালে এক নারী। নিজেকে একজন ধর্ষিতা নারী হিসাবে দাবি করে বরিশালের কোতয়ালী থানায় মামলা দায়েরের পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে ধর্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন ঐ নারী। সংবাদ সম্মেলনে ঐ নারী জানান, ২০১০ সালে তিনি ঝালকাঠির সমাজসেবা অফিসে ছয় মাস মেয়াদী কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হলে তৎকালীন ঝালকাঠির সমাজ সেবা অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেনের পরিচয় হয়। এ সুবাদে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলেও ওই নারীকে পরিবারের সদস্যরা অন্যত্রও বিয়ে দিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরেও দেলোয়ার হোসেন তার সাথে যোগাযোগ রাখায় পারিবারিক অশান্তির কারণে স্বামীর সাথে ঐ নারীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
আর এ সুযোগে দেলোয়ার হোসেন ঐ নারীর সাথে সংসার করার প্রস্তাব দিলে সে বাড়ি ছেড়ে ভোলায় কর্মরত দোলোয়ারের হোসেনের কাছে চলে যায়। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাসা ভাড়া নেন। এর পর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভোলা থেকে দেলোয়ার হোসেন বরিশাল চলে আসতেন এবং দুজনে সুখের সংসার শুরু করেন। পরে তারা বাসা পরিবর্তন করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে নগরীর মীরা বাড়ির পুল সংলগ্ন এলাকায় এবং বর্তমানে নিকটবর্তী স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করা শুরু করেন।
প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেলোয়ার হোসেন ভোলা থেকে এসে আবার রোববার সকালে ভোলা যেতেন। এমনকি ২/১ দিনের সরকারি ছুটি থাকলেও দেলোয়ার হোসেন বরিশাল চলে আাসতেন। দেলোয়ার হোসেন বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য সকল খরচ বহন করতে থাকেন। এমনকি ঐ নারী দুবার গর্ভবতী হলেও দেলোয়ার হোসেনের প্ররোচনায় গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে ফেলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঐ নারী দেলোয়ার হোসেনের কাছে আইনানুগভাবে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বসবাস করার দাবি জানালে দেলোয়ার হোসেন ভোলায় চলে যান। পরবর্তী ঐ নারী ভোলায় গিয়ে দেলোয়ারকে বরিশালে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে বরিশাল কোতেয়ালী থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের সাথে সাংবাদিকগণ সেল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ওই নারী ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হওয়ায় দুজনের একত্রে ছবিও থাকতে পারে। এমনকি তিনি মাঝে মাঝে ওই নারীর ঘরে যেতেন বলেও স্বীকার করেন। তবে সমাজসেবা অধিদফতরের ভোলা জেলার উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগকারী নারী তার কাছেও গিয়েছিলেন বলে জানিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান সমাজ সেবা কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন