শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

খাদ্য-পানির সংকটে প্রায় ৩০ হাজার বানভাসি মানুষ

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২২, ৬:৪৯ পিএম | আপডেট : ৮:৩৪ পিএম, ১৮ জুন, ২০২২

অনবরত বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে অবনতি হয়েছে লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন জেলার ৫ উপজেলার ৩০ হাজার বানভাসি মানুষ।

কিছু বানভাসি মানুষ গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও আসবাবপত্র নিয়ে সরকারি রাস্তা, বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে অধিকাংশই বাড়িতে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।


পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও বিপৎসীমার উপরে রয়েছে ধরলা নদীর পানি।


শনিবার বিকাল ৪ থেকে তিস্তা নদের পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফলিমারী গ্রামের বানভাসি রুপা রানী (৫৬) বলেন, 'গেল ৪ দিন ধরে রান্না করতে পারছি না। ঘরের ভেতর প্রায় হাটু সমান পানি। খাটের উপর কোনো রকমে বসবাস করছি। বাইরে থেকে শুকনো খাবার কিনে এনে খাচ্ছি। মাঝে মাঝে আত্মীয়-স্বজনরা কিছু রান্নাকরা খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আমরা খুব কষ্টে আছি। রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি না।'


আদিতমারী উপজেলার কুটির পাড়া গ্রামের বানভাসি আনোয়ারা বেগম (৫৫) বলেন, 'নলকূপগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। কলাগাছের ভেলায় চড়ে চলাফেরা করছি। রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে দিনাতিপাত করছি। বন্যার কারণে গ্রামে কোনো কাজ নেই। আয়ও করতে পারছি না। হাতে টাকা না থাকায় বাজার থেকে খাবারও কিনতে পারছি না।'


একদিকে ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি অন্যদিকে অনাবৃষ্টি। বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে আছি। গবাদি পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে আছি।'লালমনিরহাট রাজপুর ইউ,পি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন,আমার ইউনিয়নের ৬ টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যায়নি ।


লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে 'পানিবন্দি লোকজনের খোজ-খবর নিচ্ছি।'
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলীত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে দ্রুত খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন