ভারী বর্ষণ আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় মাইকিং করে করে সর্তকতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, চরের মানুষ যাতে প্রানহানীর শিকার না হয়, বিপদে না পড়ে সেই কারনে মাইকিং করে সর্তক জারি করা হয়েছে।
এদিকে অব্যাহত পানিবৃদ্ধির কারনে জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তা ধরলার তীরবর্তী ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিস্তার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
রবিবার (১৯ জুন) সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৭২ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে ধরলা নদীর পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সে. মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ,সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ,রাজপুর,গোকু-া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলে পানি প্রবেশ প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান,পানিবন্দি পরিবারগুলোকে প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান গতরাত থেকে তিস্তার পানি আবারো বৃদ্ধি পেয়ে অত্র ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফকির পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন জানান,গত দুইদিন ধরে প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সহায়তা পাওয়া হয়নি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদদৌলা বলেন,উজানের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রবিবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার তীরবর্তী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।
গত দুইদিন থেকে তিস্তা ও ধরলার পানি ঘর বাড়িতে প্রবেশ করায় পরিবারগুলো রান্না করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই উঁচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে কোনরকম রান্না করে এক বেলা খেয়ে জীবন যাপন করছেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর বলেন, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার তা বিতরণ ও শেষ হয়েছে। বন্যা কবলিত যেসব এলাকা আছে সেগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণের অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন