মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

তাজমহল থেকে কুতুব মিনার : সমস্ত মুসলিম স্থাপত্যকে হিন্দুয়ানি করার অপচেষ্টা

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২২, ১২:০৩ এএম

আমার এই কলামে গত মঙ্গলবার ১৪ জুন আমি কথা দিয়েছিলাম যে, কিভাবে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার মুসলিম স্থাপত্য ও সভ্যতাকে ধ্বংস করার উন্মত্ত চেষ্টায় মেতে উঠেছে, সেটি আজ দেখাতে চেষ্টা করবো। দেখাতে চেষ্টা করবো, কিভাবে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিভাবে কুতুব মিনারকে বিষ্ণু স্তম্ভ বানানোর অপচেষ্টা হচ্ছে। কিভাবে মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদের ১৩ একর জমি গ্রাস করার চেষ্টা হচ্ছে। কীভাবে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য তাজমহলকে তেজা মহালয় বানানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে, এই জিগির তুলে কীভাবে বাবরি মসজিদের মত জ্ঞানবাপী মসজিদকেও মন্দিরে রূপান্তরের চক্রান্ত করা হচ্ছে। আসুন, এক এক করে আমরা এগুলো দেখি। প্রথমে আওরঙ্গজেবের কবর।

‘এবিপিলাইভ ডটকম’ সূত্রে প্রকাশ, ‘এমএনএস’ বলছে, শিবাজীর ভূমিতে আওরঙ্গজেবের কী কাজ? ‘এমএনএস’-এর মুখপাত্র গজানন কালে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের উদ্দেশ্যে বলেছেন, শিবাজীর ভূমিতে আওরঙ্গজেবের কবরের কী দরকার? এই কবরটি ভেঙে ফেলা উচিত যাতে সেখানে লোকেরা না যায়। তিনি আরও বলেন, মাননীয় বালা সাহেব ঠাকরেও একই কথা বলেছিলেন, আপনি বালা সাহেবের কথা শুনবেন কী? আপনি ইতোমধ্যে আওরঙ্গাবাদের নাম পরিবর্তনের দাবি উল্টে দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার হিন্দি গণমাধ্যম ‘অমর উজালা’ সূত্রে প্রকাশ, রাজ ঠাকরের দল ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’র (এমএনএস) হুমকির পর উদ্ধব ঠাকরে সরকার আওরঙ্গাবাদে আওরঙ্গজেবের কবর পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। তিনি বলেন, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে, যাতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রভাবিত না হয়।

এবার কুতুব মিনার। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ঐতিহাসিক স্থাপত্য কুতুব মিনারের প্রাঙ্গণে অতীতে হিন্দু ও জৈন মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল, এই দাবি জানিয়ে মামলা করেছেন দু›জন আইনজীবী। ওই কথিত মন্দিরে হিন্দু ও জৈনরা যাতে পূজা এবং উপাসনা করার অধিকার ফিরে পান, সেই দাবি জানিয়ে তাদের করা আবেদন দিল্লির একটি দেওয়ানি আদালত গ্রহণ করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই দাবিতে সক্রিয় সমর্থনও জানাচ্ছে।

এবার মথুরার শাহী ঈদগাহ। ভারতের উত্তর প্রদেশের জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কের অবসান হওয়ার আগেই রাজ্যের মথুরা জেলা আদালতে গৃহীত হলো নতুন মামলা। সেই মামলার আরজি, মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানসংলগ্ন শাহি ঈদগাহ মসজিদের জমি মন্দির কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হোক। মথুরার জেলা ও দায়রা জজ রাজীব ভারতী বৃহস্পতিবার ওই মামলা গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ, প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমির ওপর হিন্দু ও মুসলমানের যে ধর্মস্থান রয়েছে, তার মালিকানা ঠিক কার, জেলা আদালত তা বিচার করবেন।

এবার জ্ঞানপাপী মসজিদ। ২০১৯ সালে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি মামলার বিচারের রায়ের পর থেকে শুরু হয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদটি নিয়ে তৎপরতা। বিজয়শঙ্কর রাস্তোগী, বারাণসীর এক উকিল পুনরায় এই মসজিদের ‘বেআইনি’ নির্মাণকার্য ও তারই সাথে আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সার্ভের অর্ডারের দাবি জানান। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে বারাণসী কোর্ট নির্দেশ দেয় স্থানটির সার্ভে করে দেখার জন্য। জ্ঞানবাপী মসজিদে নাকি ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়া গেছে! না মানে, মসজিদের সব জায়গা ছেড়ে ওজুখানাতেই নাকি ছিল ওই শিবলিঙ্গ। মসজিদ কমিটি অবশ্য সে দাবি অস্বীকার করেছে, তাদের দাবি, ওজুখানার পুরনো ঝর্নার একটা অংশ সেটি। যদিও বারাণসী কোর্টের অর্ডার অনুসারে, মসজিদের ভিতর ভিডিয়োগ্রাফি করা শেষ হয়েছে। সেটি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

এবার তাজমহল। ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য তাজমহলের ‘আসল ইতিহাস’ অনুসন্ধানের অভীপ্সায় দায়ের হয়েছিল এই মামলা। মামলাকারী অযোধ্যাবাসী। নাম রজনীশ সিং। বিজেপির ‘মিডিয়া ইনচার্জ’। তাঁর দাবি, পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম এই স্থাপত্যের অন্দরে ২২টি প্রকোষ্ঠ অনন্তকাল ধরে বন্ধ রয়েছে। সেই ঘরগুলো খোলা হোক। দেখা হোক তার অভ্যন্তরে কী কী আছে। তাঁর স্পষ্ট দাবি, আজ যার পরিচয় তাজমহল, তা আসলে ‘তেজো মহালয়’ নামে এক প্রাচীন শিবমন্দির, যার ওপরে নির্মিত হয়েছে তাজমহল। তাঁর আবেদন ছিল, তাজমহলের ‘প্রকৃত ইতিহাস’ অনুসন্ধানে দায়িত্ব দেওয়া হোক আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআইকে। তারাই বন্ধ ঘর খুলে দেখুক সেখানে কী লুকানো রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা হোক, কোনো হিন্দু মন্দিরের কাঠামোর ওপর মোগল সম্রাট শাহজাহান এই বিস্ময়কর স্থাপত্য নির্মাণ করেছিলেন কি না।

আবার মথুরা মসজিদ। এর আগে মথুরার আদালতে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন আলাদা আলাদা করে ১০টি পিটিশন দাখিল করেছে। তাঁদের দাবি, ওই এলাকা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। তাই ওখান থেকে মসজিদকে সরানো হোক। মসজিদ লাগোয়া কাতরা কেশব দেব মন্দিরও রয়েছে। প্রথম যে আবেদনপত্র জমা পড়েছিল আদালতে, তাতে উল্লেখ করা ছিল যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষেরই বিশ্বাস, যেখানে মসজিদ রয়েছে, সেটা আদতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। আবেদনকারীদের মধ্যে অন্যতম আইনজীবী শৈলেন্দ্র সিং দাবি করেছিলেন, মসজিদটি যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে একসময় মন্দির ছিল। তিনি বলেছেন, ‘হিন্দু মন্দিরের অবশিষ্টাংশের উপর মসজিদের কাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে এটি মন্দির।’

॥দুই॥
বিগত ৮ বছর ধরে ভারতে যেসব কাণ্ডকীর্তি করা হচ্ছে তার ফলে ভারতের শিল্প-স্থাপত্যে মুসলমানদের নাম গন্ধ মুছে ফেলার অপচেষ্টা হচ্ছে। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য তাজমহলকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর ধ্বংস করার আওয়াজ তোলা হয়েছে। কুতুব মিনার পৃথিবীর আরেকটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী স্থপত্য। বলা হচ্ছে, কুতুব মিনার নাকি ভারতের অন্যতম ভগবান বিষ্ণুর স্তম্ভ। তাজমহলকে বলা হচ্ছে তেজ মহালয়া। এলাহাবাদের নাম বদলে করা হয়েছে প্রয়াগরাজ। ফৈজাবাদ জেলার নাম বদলে করা হয়েছে অযোধ্যা। প্রবল দাবি উঠেছে মুজাফফরনগরের নাম বদলে ‘লক্ষ¥ীনগর’, আহমেদাবাদের নাম বদলে ‘কর্ণাবতী’, আগ্রার নাম পাল্টে ‘অগ্রবন’ করার। কয়েক দিন আগে এক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন কুতুব মিনারের নাম বদলে ‘বিষ্ণু স্তম্ভ’ করার দাবি তোলে।

দিন তিনেক আগে দিল্লি বিজেপির সভাপতি আদেশ গুপ্ত রাজধানীর ছয়টি রাস্তার নাম বদলের দাবি দিল্লি সরকার ও নতুন দিল্লি পৌরসভার কাছে পেশ করেন। তাঁর দাবি, শাহজাহান রোড হোক ‘জেনারেল বিপিন রাওয়াত রোড’, হুমায়ুন রোড ‘মহর্ষি বাল্মীকি রোড’, আওরঙ্গজেব লেন ‘ড. এপিজে আবদুল কালাম লেন’, তুঘলক রোডের নাম হোক ‘গুরু গোবিন্দ সিং রোড’, আকবর রোডের নতুন নাম হোক ‘মহারাণা প্রতাপ রোড’ এবং বাবর লেনের নামকরণ হোক ‘বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বোস লেন’। শুধু রাস্তাই নয়, বিজেপি চায় দিল্লির মধ্যে অন্তত ৪০টি অঞ্চলের নাম স্বাধীনতাসংগ্রামী, দেশপ্রেমিক, খেলোয়াড়, শিল্পীদের মতো গুণী মানুষের নামে রাখতে। ওই ৪০টি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ইউসুফ সরাই, হুমায়ুনপুর, বেগমপুরা, হাউজ খাস, আজাদপুর, সাইদুল আজবের মতো পরিচিত এলাকা। এই আদেশ গুপ্তই দিল্লি পৌরসভাকে চিঠি লিখে ‘রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি’দের উচ্ছেদ করতে জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার চালাতে বলেছিলেন।

॥তিন॥
এতক্ষণ ধরে আমরা দেখালাম, কিভাবে মুসলিম স্থাপত্য, ঐতিহ্য এবং কৃষ্টিকে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে চলেছে। আপনারা সকলেই পত্র পত্রিকায় পড়েছেন, কিভাবে স্কুল ইউনিফর্মের নাম করে ভারতের কর্ণাটক প্রদেশে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর কর্ণাটকের পথ ধরে কিভাবে আরো একাধিক রাজ্য বা প্রদেশে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সবচেয়ে অবাক লাগে এটা ভেবে যে, ভারতের বিচার বিভাগও মনে হয়, বিজেপি তথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের লেজুড়ে পরিণত হয়েছে। এর আগে আপনারা দেশী এবং বিদেশী পত্রিকায় পড়েছেন যে, কীভাবে গো-মাংস সংরক্ষণ ও ভক্ষণের কারণে একাধিক মুসলমানকে হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে।

এভাবে একের পর এক মুসলমানদেরকে কোনঠাসা করার প্রতিবাদে মুসলমানরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা মুসলিম স্থাপত্যের হিন্দুয়ানি করার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেননি। কিন্তু যখন রাসূল (সা.) এবং মা আয়েশার (রা.) কুৎসা রটনা করা হলো তখন মুসলমানরা আর নীরব থাকতে পারেননি। কারণ এটা ছিল তাদের কলিজায় আঘাত করা। কিন্তু মুসলমানদের এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের কারণে ভারতীয় পুলিশ কিভাবে মুসলমানদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে তার একটি নমুনা নিম্নে দেখুন। বিবিসির রিপোর্ট মোতাবেক, সম্প্রতি ভারতে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনে যোগ দেয়া মুসলিম যুবকদের ধরে এনে ইচ্ছামতো পেটাচ্ছে পুলিশ। এরইমধ্যে কোটি কোটি মানুষ এই ভিডিওটি দেখেছেন। শাসক দল বিজেপিরই এক নেতা ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। আন্দোলনকারীরা উচিৎ শিক্ষা পাচ্ছে বলে পুলিশের এই মারধরের প্রশংসাও করেছেন তিনি। বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশে ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় একদল মুসলিমকে মারধরের ভিডিও সেটি। পুলিশের এই নির্যাতন নিয়ে সরব নেট দুনিয়া। ভারতে মুসলিম ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির দায় নিয়ে বেশ অনেকবারই কথা বলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধিতে বিজেপির অনেক নেতার পৃষ্ঠপোষকতার দায় দেখছেন তারা।

॥চার॥
মুসলমানদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের এই প্রহার এবং মুসলিম বিক্ষোভকারীদের ঘরবাড়ি বুল্ডোজার দিয়ে যেখানে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে অন্য ধর্মাবলম্বী ভারতীয়রা বিগত ৩/৪ দিন ধরে যেভাবে রেলগাড়ি, মটরগাড়ি জ¦ালাও পোড়াও করছে এবং অন্যান্য স্থানে ভাংচুর করছে সে ব্যাপারে বিজেপি সরকার এবং পুলিশ বাহিনী কোনো রকম এ্যাকশন নেয়নি। অথচ ভিন্ন সম্প্রদায়ের এই বিক্ষোভ ছিল সেনা বাহিনীতে রিক্রুটমেন্টের ব্যাপারে সরকারের গৃহীত নীতির বিরুদ্ধে। এই নীতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অগ্নিপথ প্রকল্প’। এই প্রকল্প গ্রহণের পর ভারতের অন্তত ৭ টি রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ দেখে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতের সেনা বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং নৌ বাহিনী প্রধানদের সাথে গত শুক্রবার বৈঠকে মিলিত হন। তারা সকলেই অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতি সমর্থন জানান। তার পরেও বিক্ষোভ থামেনি। বরং তা আরো বেগবান এবং ধ্বংসাত্মক হয়েছে। সেনাবাহিনীতে চার বছরের জন্য স্বল্পকালীন নিয়োগের যে অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়েছে মোদি সরকার তার বয়সসীমা শিথিল করে ২১ থেকে ২৩ করেছে। কিন্তু, তাতেও ক্ষোভ কমেনি সাত রাজ্যে। বিহারের লক্ষীসরাইতে একটি ট্রেন আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। জেহানাবাদ, নোয়াদাতে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। হরিয়ানা ও মধ্য প্রদেশে দফায় দফায় বিক্ষোভে উত্তাল রাজ্যগুলি। সড়ক অবরোধ করা হয়েছে, দেয়া হয়েছে বাসে আগুন। পুলিশ শূন্যে গুলি চালিয়েছে বিহারের দুটি জায়গায়। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে অগ্নিপথ-এর বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, সেনার চাকরি করতে ইচ্ছুকদের বঞ্চিত হতে হবে এর জন্য। তারা অবিলম্বে অগ্নিপথ-এর প্রত্যাহার চেয়েছেন।

অপর একটি খবরে প্রকাশ, এ পর্যন্ত ৪৭ টি ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। কয়েকটি প্রদেশে আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছে। আরো অনেক ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চলছে যেগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা করা থেকে আমি বিরত থাকলাম। অগ্নিপথ এবং অগ্নিবীরের কাহিনী তুলে ধরলাম বিজেপির হিন্দুত্ববাদী সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী নীতি বাংলাদেশীদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর জন্য। আফসোস হয়, যখন দেখি যে আমেরিকা এবং চীনের মত বিশ^ শক্তিও যেখানে ভারতের এই ইসলাম বিরোধী উলঙ্গ নীতির প্রতিবাদ করেছে সেখানে বাংলাদেশ সরকার এবং সেক্যুলার ও প্রগতিবাদের সাইনবোর্ডধারী ভারতপ্রেমীরা কেমনভাবে কানে দিয়েছে তুলা এবং পিঠে বেধেছে কুলা।
Email: journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন