পটুয়াখালীতে এক প্রতারকের ফাঁদে পরে রমেন ঘরামি(৩০) নামে এক যুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। সামাজিক ভাবে হেনস্তা ও টাকা দাবীর চাপে পরে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে রমেনের একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। রোববার সাড়ে ৭টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। রমেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের রনজিৎ ঘরামীর বড় ছেলে। কসমেটিক ও প্রসাধনীর পরিবেশক ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন রমেন। মঙ্গলবার দুপুরে পোষ্ট মর্টেম শেষে পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ মৃত ব্যক্তির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
মৃত রমেনের মেঝ ভাই সমেন ঘরামি ও ছোট ভাই সুমন ঘরামি বলেন-রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রমেনের ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে অপরিচিত ব্যক্তি কল দিয়ে জানায়“রমেন বিষ খেয়ে গোলখালী নদীর পাড়ে ডাক-চিৎকার করছে”। খবর পেয়ে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে মোটরসাইকেল যোগে অসুস্থ্য রমেনকে উদ্ধার করে প্রথমে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শেষ সন্ধ্যায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পৌঁছালে রমেনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।
দুই সহোদর আরও বলেন-পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় মিজান নামে এক ব্যক্তির নাম বারবার উল্লেখ করেছে রমেন। কিন্তু মারাত্মক অসুস্থ থাকায় স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে তারা বলেন-সম্প্রতি একই এলাকার জনৈক নুরু খাঁ এর ছেলে মিজান খাঁ এর জন্য দায়ী। সদস্য সমাপ্ত হওয়া পটুয়াখালী শহরের শেখ রাসেল শিশুপার্কের পাশে বানিজ্য মেলা চলাকালিন সময়ে তার ভাই রমেনকে ডেকে নেয় মিজান। মেলায় রমেন গেলে অপরিচিত এক মেয়েকে দিয়ে ভিডিও জোর করে মিজান। এরপর থেকে মিজানের প্রতারনা শুরু হয়।
এদিকে ঘটনার দিন বিকালে গোলখালী নদীর পাড়ে অসুস্থ অবস্থায় ছটফট করতে দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে রমেন তাদের বলেন-মিজান নামে এক যুবক শহরে নিয়ে অপরিচিত মাইয়ারে দিয়া জোর করে ভিডিও করে তা ফেসবুকে দেয় এবং দুই লাখ টাকা নেয়। পরে মিজান ফোন আরো টাকা দাবী করেন। যে কারনে রমেন বিষ খেয়েছেন বলে তাদের জানায়। ওই সময়ে স্থানীয়দের করা একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মেহেদি হাসান বলেন-উল্লেখিত ঘটনা লোকমুখে শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পৌছানোর আগেই রমেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পটুয়াখালী প্রেরন করা হয়েছে। তাছারা বিষয়টি কেউ অবহিত করেনি। যেহেতু পটুয়াখালী সদর থানার আওতায় তার মৃত্যু হয়েছে, তাই পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ দেখবে। মেয়েলি কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে নাকি কেউ হয়রানি করেছে,এমনটা শুনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ করেননি। তার পরেও বিষয়টি আমরা অনুসন্ধান করছি। পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন-প্রতারনার যে অভিযোগ সেটিও আমরা যাচাই করে দেখছি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবেনা।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান,এ বিষয়ে পটুয়াখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন