শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পদ্মায় পানি বাড়ছে ধীরে ॥ ভাঙ্গছে পাড়

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২২, ২:৩৮ পিএম

মরা পদ্মায় একটু একটু করে পানি বাড়ছে। নদীতে ঘোলা পানির ¯্রােত। শুকনো মওসুমে দূরদিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর ক্ষীন ¯্রােত আর পানি আস্তে আস্তে উত্তর পাড়ে জমছে। উজানের ঢল আর আষাঢ়ের বৃষ্টিতে পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি যমুনার সাথে মিশে মেঘনায় যায়। তিস্তা নদীর কারনে রংপুর অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়ায় যমুনারও পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানেও বন্যা বাড়ছে। যমুনার পানির উচ্চতা বেশী থাকায় পদ্মার পানি ধীরে নামছে। ফলে রাজশাহীতে নদী বেশ খানিকটা পানি দেখা যাচ্ছে।
পদ্মার পানি বাড়ার প্রভাব পড়েছে চারঘাট, বাঘা উপজেলার পদ্মা পাড়ের হাজারো মানুষের কপাল দুশ্চিন্তার ভাঁজ। নাব্যতা কমে যাওয়ার কারনে পানি ধারন ক্ষমতা কমেছে। একটু পানি পেলেই পদ্মাকে ভরা ভরা দেখায়। সেই পানি ছুটতে গিয়ে দুপাড় ভাঙ্গে। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, চারঘাটের ইউসুফপুর ও সদর ইউনিয়নের চারটি গ্রামে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পিরোজপুর, বাউসা, চন্দন শহর ভাংছে। বিলীন হচ্ছে নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি ফসলেরক্ষেত সাজানো সংসার। গোদাগাড়িতে নদী তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন চলছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ বলেন, নদীতে প্রতিদিন পানি বাড়ছে। যেসব স্থানে ভাঙ্গন দেখা যাচ্ছে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি বোর্ড সূত্র জানায়, চারঘাট, বাঘার ভাঙ্গন রোধে সাতশো কোটি টাকার বেশী একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী মওসুমে কাজ হলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ সম্ভব হবে।
চারঘাট থেকে পদ্মা নদীর একটা ধারা বড়াল নদ। সেই বড়াল নদও পানি শূন্য। পদ্মায় বান ডাকলে বড়ালে বান ডাকে। দেখা যায় বড়াল নদের মুখে পানি নেই। পদ্মার শাখা প্রশাখা নদ নদী, মরা বড়াল, মুছাখান, ইছামতি, ধলাই, হুড়াসাগর, চিকনাই, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, নবগঙ্গা, চিত্রা, বেতা কালিকুমার, হরিহর, কালিগঙ্গা, কাজল, হিসনা, সাগরখালি, চন্দনা, কপোতাক্ষ, বেলাবত এদের অস্তীত্ব প্রায় বিলিন।
রাজশাহী অঞ্চলে এখনো তেমন ভারী বর্ষন শুরু হয়নি। ফলে খাল বিল ভরেনি। নদীর শাখা প্রশাখা জেগে ওঠেনি। মঙ্গলবার নগরীর তালাইমারী থেকে হাইটেক পার্ক পর্যন্ত পদ্মা তীর ঘুরে দেখা যায় পদ্মার বুক জুড়ে বিশাল বালিচর। কোলে কিছু পানি এলেও তা কচুরী পানায় ভরা। হাইটেক পার্ক সংলগ্ন আই বাঁধের কিছু বেশী পানি। এখান দিয়ে নৌকায় করে দক্ষিনপাড়ের চরের শত শত মানুষ যাতায়াত করছে। চরখানপুর, মাঝারদিয়ারে কজন বাসিন্দা জানালেন পানি বাড়া মানে আমাদের কপাল পোড়া। ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হওয়া। প্রতি বছর ভাঙ্গনে চরের আয়তন কমছে।
বছরের প্রায় ন’মাস পানির অভাবে পদ্মা বিশাল চর নিয়ে ঘুমিয়ে নাচে। ভারতের বিহার রাজ্যসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিলে বন্যার চাপ সামলাতে উদার হস্তে ফারাক্কার একশো নয়টি গেটের সবকটি গেট খুলে দিয়ে বিপুল পরিমান বালিযুক্ত পানি এপারে ঠেলে দেয়া হয়। তখন মাস তিনেকের জন্য মরা পদ্মা জেগে ওঠে। দুকুল ছাপিয়ে ভাঙ্গনের তান্ডব চালিয়ে ছাপিয়ে চলে।
ভারতের ফারাক্কা এলাকা পাশ্ববর্তী এলাকায় এখনো বন্য না হওয়ায় ফারাক্কার কপাট বন্ধ রয়েছে। পদ্মায় পানি বাড়ছে ধীরে। এপারের নদীর ভাগ্য নির্ভর করছে ফারাক্কার উপর। এমনটি বলছিলেন নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক এ্যাড. এনামুল হক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন