রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বীমার প্রিমিয়াম, স্বাস্থ্য ও জীবন বীমা থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি, ক্লিয়ারিং পদ্ধতি সবকিছু মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এটা পাশ হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী মাসের শুরুতে এর কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গেলো বছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০৭ তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন পায় শিক্ষার্থীদের বীমা পরিকল্পনা। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অসুষ্ঠিত সে সভায় এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ৬ সদস্য বিশিষ্ট সে কমিটিতে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, কোষাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুজ্জামান মিলন, একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এ.এইচ.এম আসলাম হোসেন।
কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , বছরে ২৫০ টাকা প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে শিক্ষার্থী প্রতি। শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় রেখে ২৭০ টাকার প্রস্তাবিত পরিমাণ থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
বছরের শুরুতেই ভর্তি ফি'র সাথে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এককালীন প্রিমিয়াম জমা নেয়ার পরিকল্পনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর বিনিময়ে জীবন বীমার আওতায় থাকা কোনো শিক্ষার্থী মারা গেলে তার পরিবার এককালীন সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পাবেন। আর স্বাস্থ্যবীমার আওতায় কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বীমা সুবিধা পাবেন। আবার বীমার আওতায় থাকা অসুস্থ হওয়া কোনো শিক্ষার্থী যদি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চিকিৎসা নেয় সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বীমা সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে একদিনের চিকিৎসা ব্যয় ২০ হাজার হলেও ক্লেইম করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। তবে এসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, হাসপাতালের বিলের কাগজ পত্র অথবা ভাউচার জমা দিতে হবে।
বীমা সম্পর্কিত যাবতীয় কার্যক্রম চালাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা একটি দপ্তর চালু করা হবে। শিক্ষার্থীদের যেন বীমার সুবিধা পেতে কোম্পানির কাছে ধরনা দিতে না হয় সেজন্য একটি দপ্তর থেকে পরিচালনা করা হবে এ সম্পর্কিত কার্যক্রম। তবে ডিজিটালি করা যাবে সবকিছু। সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিকে বীমার প্রিমিয়াম জমা দেয়া থেকে শুরু করে বীমা দাবি পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীরা অনলাইনে সম্পন্ন করতে পারবে। ফলে বীমা সুবিধা পেতে জটিলতা কমবে শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুজ্জামান মিলন বলেন, "পুরো কার্যক্রম আমরা ডিজিটাল করেছি যেন শিক্ষার্থীরা বীমা ক্লেইম করতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। এ ব্যাপারে আমরা খুবই শক্ত অবস্থানে ছিলাম। প্রায় ৯ টা কোম্পানি যুক্ত হতে আবেদন করেছিল আমরা যাচাই-বাছাই শেষে ১ টাকে সুযোগ দিয়েছি।"
বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, "শিক্ষার্থীদের জন্য যখন বীমা করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে তখন এটা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত, পরবর্তী সিন্ডিকেটে এটা পাশ হবে।"
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন