শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে পদ্মা সেতু

বাকৃবি প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২২, ৫:৩২ পিএম | আপডেট : ৭:২৭ পিএম, ২৩ জুন, ২০২২

উদ্বোধনের অপেক্ষায় নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতু চালুর পরপরই বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি। পদ্মা সেতুর হওয়ার ফলে ব্যাপক হারে শিল্পায়ন হবে এবং লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিশেষ করে কৃষিতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেই সাথে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ব্যাপক হারে পরিবর্তন সাধিত হবে। উৎপাদিত কৃষি পণ্য দ্রুত পরিবহণের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। এতে প্রতি বছর দারিদ্র্য নিরসন হবে ০.৮৪ ভাগ। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ছয় কোটি মানুষের।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুর ১ টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক কমপ্লেক্সে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন ও কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রমিজ উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ওই এলাকার কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে এবং অল্প সময়ে কৃষি পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে পারবে। ফলে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে ব্যাপক হারে ।

এছাড়াও সেতু চালু হলে খুলনা ও বাগেরহাটের মাছ, যশোরের সবজি আর গদখালীর ফুল, বরিশালের ধান ও পান সহ পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি পণ্য ঢাকাসহ বড় শহরগুলোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব হবে। পদ্মা সেতু চালু হলে যশোর ও ফরিদপুরের খেজুরের গুড়ের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। পটুয়াখালী থেকে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ মেট্রিকটন মাছ জেলার বাইরে রপ্তানি হয়। সেতু উদ্বোধনের ফলে মাগুরার লিচু চাষিরা আগামী বছর থেকে প্রতি মৌসুমে অন্তত ৫০ কোটি টাকার বাড়তি লিচু বিক্রি করতে সক্ষম হবেন। লিচুর পাশাপাশি মাগুরায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি, ১২ হাজার হেক্টরে পেঁয়াজ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়। এসব পণ্য দ্রুত ঢাকার বাজারে পাঠানো সম্ভব হবে।


সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, সেতু চালুর ফলে শরীয়তপুরে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত মাংস ও দুধ মাত্র ২ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। এতদিন ফেরিঘাটের ভোগান্তির কারণে এসব মাংস ও দুধ ঢাকায় সঠিক সময়ে এনে বিক্রি সম্ভব হয়নি। পদ্মা সেতু চালু হলে পরিবহনে আর বাড়তি সময় লাগবে না।


এসময় সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, চিংড়ি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য। চিংড়ি উৎপাদনের ৯০% এরও বেশি উৎপাদিত হয় খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে। সেতু চালু হলে চিংড়ি খামারের উৎপাদনশীলতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে চিংড়ি উৎপাদিত হবে এবং বিদেশে চিংড়ি রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। রপ্তানি বাজার এর পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে বিশেষ করে রাজধানী শহর থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভাগীয় শহরে চিংড়ির সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। কৃষক ও উৎপাদকরা তাদের উৎপাদনের ন্যায্য মূল্য পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু এবং বাকৃবির গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের প্রায় ৩০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন