মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

দেশ ও জাতিবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২২, ১২:০৯ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাসী। যে কোনো গণমানুষের নেতাকে সাধারণ মানুষের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে সেই আস্থারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল। তবে সমাজে এবং সরকারের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র সব সময়ই সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে জনবিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। তথাকথিত গণকমিশনের মাদরাসা শিক্ষা ও আলেম-উলামাবিরোধী তদন্ত রিপোর্ট এবং দেশের প্রথিতযশা ও জনপ্রিয় ১১৬ জন আলেম ও ইসলামি বক্তার বিরুদ্ধে কথিত দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদী উস্কানির অভিযোগে দুদকে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল তা নিয়ে দুদক এখন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে! গতকাল ইনকিলাবে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটির পরিচালক উত্তম কুমার মন্ডলের সুপারিশে এবং দুদক চেয়ারম্যান পরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান-২) সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গতমাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের নেতৃত্বে গঠিত গণকমিশন তার রির্পোট আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে মোড়ক উন্মোচন করায় এবং দুদক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে তদন্তের জন্য পাঠায়। সে সময় এই রিপোর্ট নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার এক প্রতিক্রিয়ায় এই গণকমিশনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই বলে মত প্রকাশ করলেও এখন ১১৬জন আলেম-ওয়ায়েজিনের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত বা অনুসন্ধানের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

করোনা পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থায় এমনিতেই দেশ নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সেই সাথে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সিলেটসহ দেশের ও উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেশকে একটি মানবিক-অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এহেন বাস্তবতায় সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের ঈমান-আক্বিদা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত করে এমন যে কোনো কর্মকান্ড জাতিকে বিভক্ত ও দুর্বল করে তুলবে। শত শত মাদরাসা এবং ১১৬ জন আলেম ও ইসলামি বক্তার বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগের কোনো সামাজিক-রাজনৈতিক ও আইনগত ভিত্তি নেই। এসব আলেম-ওলামার প্রতি দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সমর্থন থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিযোগ ও হয়রানিমূলক অনুসন্ধান অথবা এসব অভিযোগের দোহাই তুলে তাদের মুখ বন্ধ করার যে কোনো অপচেষ্টা দেশের কোটি কোটি মানুষকে হতাশ ও বিক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে গণঅসন্তোষের জন্ম দিতে পারে। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে সরকারকে দেশের গরিষ্ঠ মানুষের মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়ার এটা একটা হীন অপচেষ্টা বলে ধরে নেয়া যায়। এ বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে সতর্ক থাকতে হবে এবং এ ধরনের অপপ্রয়াস বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে।

দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টর আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে এবং পাচার এখনো অব্যাহত আছে। সুইস ব্যাংকেও বাংলাদেশিদের টাকা জমায় রেকর্ড বৃদ্ধির তথ্যও এ সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে। দেশের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী, ব্যাংক জালিয়াতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফ্ট কোড হ্যাক করে শত শত কোটি টাকা লোপাটের সাথে সন্দেহভাজন ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা না গেলেও দেশের প্রখ্যাত আলেম-ওলামা ও মাদরাসার বিরুদ্ধে তথাকথিত ঘাদানিক ও গণকমিশনের উদ্দেশ্যমূলক অপতৎরতাকে আমলে নিয়ে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্তে মানুষের মধ্যে বিষ্ময়ের জন্ম দিয়েছে। মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে বিব্রত করতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। দুদককে অবশ্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যাকশন নিতে হবে। দেশের মানুষ দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার এবং ক্ষমতাবান রাঘব বোয়ালদের দখলবাজি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের বিরুদ্ধে দুদকের সক্ষমতা ও সদিচ্ছার প্রতিফলন দেখতে চায়। দেশের হাজার হাজার মাদরাসার পরিচালক, ইসলামি বক্তা তথা আলেম সমাজ কোনো গণবিচ্ছিন্ন শক্তি নয়। এদের সাথে সরকারের বৈরীতা সৃষ্টির এজেন্ডা নিয়ে কোনো মহল মাঠে নেমে থাকতে পারে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও গণকমিশনের কার্যক্রমের সাথে সরকারের ভেতরের একটি মহলের যোগসাজশ না থাকলে তারা এতদূর অগ্রসর হতে পারত না। ইতিপূর্বে নানা ইস্যুতে দেশের মাদরাসা শিক্ষা এবং আলেম সমাজের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জঙ্গিবাদের কোনো অভিযোগেরই প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে একটি ধোঁয়াশা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। কথিত গণকমিশন নিয়ে দুদকের অতি উৎসাহী তৎপরতাকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Helal Ahmed Talukder ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৫ এএম says : 0
মানুষের বিপদের প্রকৃত বন্ধু আলেম সমাজ, যার উদাহরণ বিশ্ব মিডিয়া দেখেছে
Total Reply(0)
Muhammad Raihan Ahmed ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৮ এএম says : 0
এনাদেরকে ধর্ম ব্যাবসায়ীদ উপাধি দেওয়া সেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরা কোথায় বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ায় না কেন!
Total Reply(0)
Md Robin Khan ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৮ এএম says : 0
অবৈধ কোন কিছুই স্থায়ী হয় না। তাই যারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
Total Reply(0)
AK Bablu Bhuiyan ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৮ এএম says : 0
যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঠিয়েছে তাদের কিছু করতে পারে না! আলেমদের নিয়ে চুলকানি
Total Reply(0)
Sharfuddin Affan ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৯ এএম says : 0
আলেমদের অনুসন্দান করে সময় নস্ট করে লাভ নাই, যেখানে করলে বা যাদেরগুলা করলে দেশের লাভ হবে সেগুলো করেন,কাজে আসবে
Total Reply(0)
Saddam Hossain Akanda ২৪ জুন, ২০২২, ৫:৪৯ এএম says : 0
দুদকের উচিত আগে শ্বেতপত্র প্রবত্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যারা ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। মুদি দোকানকে বানিয়েছে মাদ্রাসা, বিদেশি নাগরিককে বাংলাদেশী!ব্যক্তিগত দুর্নীতির কথা নাই বললাম!!
Total Reply(0)
Md Nazrul Islam ২৪ জুন, ২০২২, ৫:০৯ পিএম says : 0
ধর্মপ্রিয় আলেমদের বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার চালায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত এবং শাস্তির আওতায় আনা খুব জরুরী
Total Reply(0)
jack ali ২৪ জুন, ২০২২, ৫:২০ পিএম says : 0
সরকার যখন ইসলামবিরোধী ভালো ভালো আলেমদেরকে জেলের মধ্যে বিনা অপরাধে আটকে রেখেছে বছরের পর বছর এরাইতো ষড়যন্ত্র করছে ইন্ডিয়ার সাথে কিভাবে ইসলামকে ধ্বংস করা যায় কিন্তু আল্লাহ কখনো ইসলামকে ধ্বংস করার সুযোগ এদেরকে দিবে না এরা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাবে এবং এটা ঘটছে আমাদের চোখের সামনে ইনশাল্লাহ আমাদের মনে একটু শান্তি পাব
Total Reply(0)
sha ২৪ জুন, ২০২২, ৭:২২ পিএম says : 0
নির্বোধরা বিশ্বাস করে অমানুষ পিচাশরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে! বাস্তবে অমানুষ পিচাশ ও পিচাশি সরকার জনকল্যাণের যে অসংখ্য ধরনের ভন্ডামিপূর্ণ নাটক করে, বাস্তবে এরা সর্বদিক থেকে মানুষের সর্বোচ্চ ক্ষতি করে। অথচ নির্বোধরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ বেখেয়াল ! অহংবাদ মিথ্যা ভণ্ডামি ধোকা বিভ্রান্তি অমানবিকতা ক্ষতিকারক পিচাশ শয়তানবাদের সর্বোচ্চ অন্ধকার যুগে বর্তমান বিশ্বে আমরা অবস্থান করছি। তাই আপনারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন! গভীর তদন্ত না করে অন্ধভাবে কোন কিছু বিশ্বাস করবেন না। সর্বোচ্চ শয়তানবাদের এই যুগে "রক্ষকরাই ভক্ষক" এর ভূমিকা পালন করছে, আপনার চারপাশে এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং বিশ্বাস শুধুমাত্র সত্যকে করা যায়। আর শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ সত্তের উৎস। কিন্তু সাবধান! শয়তান ও এর দালালরা নিজেদেরকে সত্যবাদী হিসেবে প্রকাশ করে অথচ এরাই সমস্ত ধরনের মিথ্যার উৎস! এরা বলে, Covid19 ভাইরাস নাকি ভয়ঙ্কর! অথচ ঐ সমস্ত অমানুষ পিচাশ কথিত ভাইরাস থেকে লক্ষ কোটি গুণ বিষাক্ত, এদের দ্বারা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীতে কথিত ভাইরাসের নাম দিয়ে মানুষের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে কারণ বলা হচ্ছে তার আসল কারণ হচ্ছে বিষাক্ত ভ্যাকসিন বিষাক্ত ড্রাগস্ বিষাক্ত খাদ্য বিষাক্ত পরিবেশ বিষাক্ত মোবাইল রেডিয়েশন বিষাক্ত মানসিক চাপ- যা শয়তান ও এর দালালরা এই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেছে। মানুষের রূপ ধারী অমানুষ পিচাশরা নানাভাবে মানুষের সাথে মিথ্যা ধোকা প্রতারণা ভন্ডামি করে, মানুষের রক্ত শোষণ করে পিচাসি ক্ষমতা ও সম্পদের পাহাড় গড়ছে, সাধারণ মানুষকে তাদের ক্রীতদাসে রূপান্তর করছে l তাদেরকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে নিজেদের জীবনকে বিষাক্ত অভিশপ্ত করবেন না। সদা সর্বদা সবসময় সত্যের পক্ষে থাকুন। আর এই পৃথিবীতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সত্য হচ্ছে মনুষত্ব ন্যায় বিচার কল্যাণ মানবতা শান্তি। পিচাশরা মুখে মুখে মনুষত্ব ন্যায় বিচার শান্তির কথা বলে, অথচ এরাই এই পৃথিবীতে তাদের নিজস্ব লোভ স্বার্থ শয়তানি ক্ষমতার জন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নানারকম অশান্তি সৃষ্টি করছে। আপনি যতই এদেরকে সমর্থন করবেন এরা ততোই শক্তিশালী হয়ে নানাভাবে আপনাকে শোষণ করবে। মানুষ যদি এদের ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড গুলোকে বন্ধ করতে বাধ্য না করে তাহলে কখনই এরা তা থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবে না। সুতরাং এদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা বন্ধ করুন, না হলে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনি।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন