শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পিতার মৃত্যুর চার বছর পর জন্ম নেন আসাদুজ্জামান আসাদ

পাচ্ছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সরকারি ভাতা

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম


 ঝিনাইদহের আসাদুজ্জামান আসাদ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সরকারি ভাতা ও রেশন উত্তোলন করছেন। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে এমন কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেই যা তিনি ভোগ করছেন না। অথচ তার জন্ম পিতার মৃত্যুর চার বছর পর। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এমন চাঞ্চল্যকর জন্ম তারিখ নিয়ে ঝিনাইদহে শোরগোল শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পিতা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হলে কীভাবে ১৯৭৪ সালে সন্তানের জন্ম হয়? আর এই উদ্ভট জন্মতারিখ নিয়েই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও রেশন সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছেন পেশায় ঠিকাদার আসাদুজ্জামান।
ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ড সূত্রে জানা গেছে, আসাদুজ্জামানের পিতা ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের শহীদ আসনার উদ্দীন বিশ্বাস ১৯৭১ সালের ১৯ আগষ্ট শৈলকুপা এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে নিহত হন। মুক্তিযোদ্ধা আনসার উদ্দীনের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী শাহারবানু ভাতা তুলছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার ১০ সন্তানের মধ্যে এই ভাতার টাকা বন্টন হয়ে যায়। এই ১০ সন্তানের মধ্যে রয়েছেন আসাদুজ্জামান। জাতীয় পরিচয়পত্রে আসাদুজ্জামানের জন্মতারিখ ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই। পিতার নাম রয়েছে কাজী আনসার উদ্দীন। অথচ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রত্যায়নপত্রে পিতার নাম রয়েছে আনসার উদ্দীন বিশ্বাস। ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রত্যয়নপত্রেও পিতার নাম আনসার উদ্দীন বিশ্বাস রয়েছে। আসাদুজ্জামান তার জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতার নামের আগে কাজী বসিয়েছেন। বিশ্বাস পরিত্যাগ করা হয়েছে। বিশ্বাস পরিবারের সন্তান হয়ে নামের আগে কাজী বসালেও নিজের জন্মতারিখের মোটা দাগের ভুল তিনি সংশোধন করেননি। অভিজ্ঞদের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জন্মতারিখ যদি ভুলই হয়ে থাকে, তবে আসাদুজ্জামান জন্ম নিবন্ধন ও পঞ্চম থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত সার্টিফিকেট কেন সংশোধন করেন নি ? এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের দায়িত্বশীল কেউ মুখ খুলতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে সাবেক জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামালুজ্জামান জানান, হয়তো ভুলক্রমে এমনটি হয়েছে। তবে সন্তানের এই জন্মতারিখ প্রমাণ করে তার পিতা জীবিত ছিলেন। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন সংশোধন করা খুবই জটিল। এ অবস্থায় সন্তানের ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আসাদের বড় ভাই আমান উল্লাহ জানান, তার ভাইয়ের ভাতা বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করা হয়েছে। তারপরও স্পর্শকাতর জন্মতারিখ নিয়েই তাকে এখনো ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, তিনি ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা বয়স কমিয়ে দিয়েছেন। এটা বড় ভুল, যা সংশোধনের চেষ্টা করছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন