শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

তিস্তার পানি কমলেও ধরলার পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত।। চরের ফসল তলিয়ে গেছে, গ্রামে ঢুকছে পানি

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২২, ৬:৪৯ পিএম

ভারী বর্ষন আর উজানের ঢলে ফুঁসে উঠেছে তিস্তা ধরলা নদী। তিস্তার পানি ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে ও ধরলার পানি কুলাঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের বিভিন্ন চরাঞ্চলে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। তীরবর্তী গ্রামগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে কাউনিয়ায় রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে পানি ছিল বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার নিচে। ধরলার পানি কুলাঘাট পয়েন্টে ৫সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।
দুপুরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যে কিছু চরাঞ্চল ও তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। চর রাজপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শুকনো মৌসুমে যেখানে নৌকা চলত না, সেখানে এখন নদী ফুঁসে উঠেছে। আবাদি জমির বাদামসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। পানির স্রোতে পাড় ভেঙে নদী লোকালয়ে চলে এসেছে। অনেকেই ভাঙনের ভয়ে বসতবাড়ি সরিয়ে রাস্তার ধারে কিংবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আফছার আলী জানান,‘গত বছরের বন্যায় হামার সব শ্যাষ হয়া গেইছিল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থাকি নদীত পানি বাড়বের নাগছে। ঘরের কিনারত পানি আইছে। কখন যে ঘরত পানি উঠে। ছাওয়া পোয়াক নিয়া কোনটে যামো, এই চিন্তায় কাজত যাবার পাবার নাগছি না। যদি এবার বন্যা হয়, তাইলে খাইম কী, চলিম কী করি!’
রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোফাজ্জাল হোসেন জানান, তাঁর ইউনিয়নে বন্যার ঝুঁকিতে ছয়টি মৌজা রয়েছে। দুইদিন থেকে তিস্তার পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। তীরবর্তী ৬টি গ্রামের বাসিন্দারা বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন। ইতিমধ্যে তীরবর্তী কিছু এলাকা নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। পানির স্রোতে গত কয়েক দিনে অন্তত ২৩টি বসতবাড়ি এবং কয়েক শ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন বাঁশ পুঁতে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। অনেকে ভাঙনের ভয়ে বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। এ সময় লালমনিরহাট জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
মিজানুর রহমান জানান, উজানের ঢলে গত কয়েক দিন ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে এবং কাউনিয়া পয়েন্টে একেবারে কাছ দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
পাউবোর ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, পানির প্রবল স্রোতের চাপ সামলাতে ব্যারাজের ৪৪টি কপাট খুলে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভাটির চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির প্রবাহ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঢাকা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নদী অববাহিকায় বা চরাঞ্চলে বসবাসরত জনসাধারণকে সতর্ক করতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন